তামাবিলের এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার অভিযোগ

জৈন্তাপুর প্রতিনিধি


জানুয়ারি ০১, ২০২১
০১:২৯ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জানুয়ারি ০১, ২০২১
০১:২৯ পূর্বাহ্ন



তামাবিলের এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার অভিযোগ

তামাবিল স্থলবন্দরের একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী মো. শাহরব মিয়া। সরকারী নীতিমালা অনুসরণ করে ব্যবসা পরিচালনার পাশাপাশি তিনি একজন নিয়মিত করদাতাও। সম্প্রতি সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে সড়ক ও জনপথ বিভাগের সংস্কারকাজে বন বিভাগের বাধা ও চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। একই সঙ্গে অভিযোগ উঠেছে শাহরব মিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে বন বিভাগ।

অভিযোগ থেকে জানা গেছে, বন বিভাগের সারী রেঞ্জের অধীনস্থ হাজার হাজার একর জমি দীর্ঘদিন হতে অপদখল করে গড়ে উঠেছে ক্রাশার মিল ও পাথর রাখার ড্রাম্পিং ইয়ার্ড। বিভিন্ন সময় উচ্ছেদ করার পরও বিচ্ছিন্ন কিছু ক্রশার মিল ও বাড়িঘর থাকলেও অতিসম্প্রতি আদালতের দেওয়া রায়ে মোহাজীরদের দখলীয় জমির রায় চলে আসে বন বিভাগের পক্ষে। সিলেট-তামাবিল সড়ক সংলগ্ন ছৈলাখেল ৩য় খন্ড মৌজার ১৬১ নম্বর খতিয়ানের ১২৭ নম্বর দাগে পতিত রকম ৩ একর ভূমির মালিক ব্যবসায়ী মিজান আজিজ চৌধুরী। উক্ত জমিতে দীর্ঘদিন ধরে মিজান চৌধুরীর তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী শাহরব মিয়া। কিন্তু পার্শ্ববর্তী দাগে বন বিভাগের জমি হওয়াতে বিভিন্ন সময় বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা শাহরব মিয়াকে হয়রানি করে আসছেন। শুধু তাই নয়, সরকারি-বেসরকারি আমিনদের মাধ্যমে সার্ভের উল্লেখিত জমি চিহ্নিত করার পরও বন বিভাগের লোকজন উচ্ছেদের হুমকি দিতে থাকেন এবং বিভিন্ন সময় শাহরব মিয়ার কাছে চাঁদাও দাবি করা হয়।

বর্তমানে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের পাশে ড্রেনেজ প্রকল্পের কাজ চলছে। শাহরব মিয়ার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সানজিদা এন্টারপ্রাইজ সংলগ্ন এলাকায় কাজ চলাকালীন সময়ে সেখানে কালভার্ট নির্মাণ শুরু হলে সওজ'র ঠিকাদার সানজিদা এন্টারপ্রাইজে প্রবেশের জন্য অস্থায়ীভাবে বিকল্প রাস্তা তৈরি করে দেয়। কিন্তু সেই রাস্তা বন বিভাগের জমির সীমানা প্রাচীর সংলগ্ন হওয়ায় বাধা আসে বন বিভাগের পক্ষ থেকে। চাঁদা দাবির বিষয়টি ধামাচাপা দিতে জাফলং বনবিট কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম পূর্বের পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ামাত্র বনবিট কর্মকর্তা ক্ষিপ্ত হয়ে শাহরব মিয়া ও তার লোকজনকে গালিগালাজ করলে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আশেপাশের ব্যবসায়ীরা এগিয়ে এসে বিষয়টি নিষ্পত্তি করে দেন। পরবর্তীতে বনবিট কর্মকর্তা বাদী হয়ে গোয়াইনঘাট থানায় গত ২৮ ডিসেম্বর একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় শাহরব মিয়াসহ ৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে ব্যবসায়ী শাহরব মিয়া এ প্রতিবেদককে বলেন, 'আমাদের প্রতিষ্ঠানের জমি সম্পূর্ণ মালিকানাধীন এবং সরকারি নিয়মনীতি মেনে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি। বিট কর্মকর্তা বন বিভাগের জমিতে স্থাপিত ক্রাশার ও ড্রাম্পিং থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে থাকেন। অথচ আমরা মালিকানাধীন জমিতে ব্যবসা করেও নিরাপদ নই। তিনি আমাদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করে আসছেন।'

আর বন বিভাগের বিট কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম শাহরব মিয়াকে রাস্তা ব্যবহারে বাধা প্রদানের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, 'আমরা মানুষ, সামাজিকতা বুঝি। যেহেতু রাস্তার পাশে আমাদের বন বিভাগের সীমানা প্রাচীর রয়েছে, ভারী গাড়ি চলাচলে যেকোনো সময় দেয়াল ভেঙ্গে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। সীমানা প্রাচীর থেকে কিছুটা সরিয়ে যাতায়াত করতে বলা হয়েছে। আমি কিংবা আমার লোকজনের মাধ্যমে চাঁদা দাবির বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। ২৮ ডিসেম্বরের ঘটনায় আমার কর্মচারীরা আহত হওয়ায় উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আমি থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেছি।'

 

আরকে/আরআর-০৭