উজ্জ্বল ধর, ওসমানীনগর
এপ্রিল ০১, ২০২০
১০:০২ অপরাহ্ন
আপডেট : এপ্রিল ০১, ২০২০
১০:০২ অপরাহ্ন
করোনাভাইরাস আতঙ্কে 'লকডাউন' পরিস্থিতিতে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে সিলেটের ওসমানীনগরে ৮টি ইউনিয়নের প্রায় ২০ সহস্রাধিক দিনমজুর পরিবার। তবে এলাকার প্রত্যেকটি পরিবারকে খাদ্য নিরাপত্তা প্রদানের সকল ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. তাহমিনা আক্তার।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চলমান ঘরবন্দি পরিস্থিতিতে নিত্যপণ্য, খাবারের দোকান এবং ওষুধের দোকান ছাড়া সব ধরণের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। জনশূন্য রয়েছে উপজেলার হাট-বাজারগুলো। রাস্তায় যান চলাচল নেই বললেই চলে। জনসমাগম এড়াতে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসন এবং সেনাবাহিনী মাঠে কাজ করে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে চরম বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া দিনমজুর পরিবারগুলো।
উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্তের ঘরে খাবার থাকলেও যারা দিন আনে দিন খায় তাদের ঘরে প্রবল খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে। প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় বিভিন্ন সমস্যায় প্রবাসীরা এসব মানুষের পাশে দাঁড়ালেও করোনা আতঙ্কের কারণে তারাও বর্তমান দুর্যোগে নিম্নবিত্তদের পাশে নেই।
দিনমজুর সাজ্জাদ মিয়া, সিরাজ মিয়া ও সাবুল মিয়া বলেন, প্রতিদিনের কাজের টাকা দিয়েই সংসারের জন্য খাবার আনি। করোনা থেকে রক্ষায় এখন ঘরে থাকতে হচ্ছে, কোনো কাজও নেই।
গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মানিক বলেন, আমার ইউনিয়নে প্রায় আড়াই হাজার পরিবার দিনমজুরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। কিন্তু বর্তমানে ঘরে থাকায় এবং কাজকর্ম না থাকায় তারা খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় পড়েছে। দ্রুত সময়ে এসব পরিবারগুলোকে খাদ্য নিরাপত্তা প্রদানের দাবি জানাচ্ছি।
সাদিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুর রব বলেন, আমার ইউনিয়নে ৫-৬ হাজার দিনমজুর পরিবার রয়েছে। বর্তমানে তাদের কাজ না থাকায় খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা দেখা দিয়েছে।
উমরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া জানান, তার ইউনিয়নে দিনমজুরি করে জীবনযাপনকারী সহস্রাধিক পরিবার কাজকর্ম না থাকায় খাদ্য সঙ্কটে রয়েছে।
একইভাবে উমরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া, তাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইমরান রব্বানী, বুরুঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম জি রাসুল খালেক ও দয়ামীর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাজ মোহাম্মদ ফখর জানান, তাদের ইউনিয়নে হাজার হাজার দিনমজুর পরিবার খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে।
ওসমানীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতাউর রহমান জানান, সরকারের পক্ষ থেকে হতদরিদ্র পরিবারগুলোর জন্য ৩০ কেজি হারে চাল, সঙ্গে ডাল এবং নগদ ৫ হাজার টাকা হারে দেওয়া হবে। প্রত্যেক পরিবারের ঘরে ঘরে সরকারি এই বরাদ্দ দ্রুততম সময়ে পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
ওসমানীনগর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. তাহমিনা আক্তার বলেন, উপজেলার প্রত্যেকটি ইউনিয়নে ২-৩ হাজার দিনমজুর পরিবার রয়েছে। সবাইকে খাদ্য নিরাপত্তা দিতে সরকারের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে। প্রাথমিকভাবে প্রতিটি ইউনিয়নের নিম্নবিত্তদের মধ্যে চাল, ডাল, আলু ও ভোজ্য তেল বিতরণ করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সরকার থেকে অভাবি প্রতিটি পরিবারের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। কাউকেই অভুক্ত থাকতে হবে না বা খাবারের কষ্টে ভুগতে হবে না।