নিরপরাধ শিক্ষার্থীরাও বহিষ্কারের শিকার, অভিযোগ শিক্ষার্থীদের

সিলেট মিরর ডেস্ক


সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৫
০৯:০৩ অপরাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৫
০৯:০৩ অপরাহ্ন



নিরপরাধ শিক্ষার্থীরাও বহিষ্কারের শিকার, অভিযোগ শিক্ষার্থীদের


বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা এবং হলে অস্ত্র ও মাদক সম্পৃক্ততার অভিযোগে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)-এর ১৯ জন শিক্ষার্থীকে আজীবন এবং ৩৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। 

তবে বহিষ্কার হওয়াদের মধ্যে নিরীহ শিক্ষার্থীও  রয়েছেন দাবি করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। তারা নিরপরাধ শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

শিক্ষার্থীদের বহিস্কারের বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩৭তম সিন্ডিকেটসভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

গতকাল (শনিবার) রেজিস্ট্রার দপ্তর সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ ও পুনঃতদন্তের দাবি জানাতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। তাদের মতে, গত বছরের জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় থাকা ও নিরপরাধ কয়েকজন রয়েছেন বহিষ্কারের তালিকায়।

হাফিজুর ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, ‘শাবিপ্রবি কি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, নাকি ক্ষমতার দুর্গ? জুলাই আন্দোলনের সময় অস্ত্রধারী ও হামলাকারীদের বিচার দাবি সবারই।

কিন্তু বিস্ময়করভাবে দেখা যাচ্ছে, যারা অস্ত্র, হামলা কিংবা সহিংসতার সাথে সম্পৃক্ত ছিল না, কেবল হলে থাকার কারণে বা ছাত্রলীগের মিছিলে অংশ নেওয়ার অভিযোগে তাদেরকেই আজীবন বহিষ্কার কিংবা দীর্ঘ মেয়াদে শাস্তির মুখে ফেলা হয়েছে। নিরপরাধ শিক্ষার্থীদের ওপর প্রশাসনের এই দমননীতি অন্যায় ও অন্যায্য।’

রিয়াজ হোসেন নামের আরেক শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘কোনো, যদি বা কিন্তু ছাড়াই যাদের প্রতি জুলুম করা হয়েছে নেক্সট সিন্ডিকেট মিটিংয়ে তাদের বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করতে হবে। বিশেষ করে পরিসংখ্যান বিভাগের মাহাবুব, পিএমই বিভাগের সাইমুন, বাংলা বিভাগের অজয়, বিবিএ বিভাগের নিপেশসহ এমন যাদের প্রতি অন্যায় করা হয়েছে তাদের বহিষ্কার আদেশ অবশ্যই প্রত্যাহার করতে হবে।’

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফয়সাল হোসেন লেখেন, ‘ফরিদ (সাবেক উপাচার্য) যখন অর্থ উপদেষ্টার সাথে পার্টি করে মাস্তিতে ব্যস্ত, তখন তদন্ত কমিটির গাফিলতি কিংবা সুষ্ঠু বিচারের ফাঁক-ফোঁকরে দুই-একজন শিক্ষার্থীর প্রতি অন্যায় বিচার করল প্রশাসন। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাই সবসময় ভিক্টিম। তাদেরকেই বলি দেওয়া হয়। আমাদের মহান শিক্ষকদের হুকুমে লাশ পড়লেও ওনাদের কলিগরাই ক্ষমতায় বসে হয়তো বিশ্ববিদ্যালয়ে নয়তো মন্ত্রণালয়ে। শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পুনরায় তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দ্রুত রিভিউ করা হোক।’

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাজেদুল করিম বলেন, ‘তদন্ত কমিটি গণহারে বহিষ্কার করেনি, গণহারে বহিষ্কার করা হলে যারা অভিযুক্ত ছিল, সবাইকেই বহিষ্কার করা হতো। হলে যেসব কক্ষে অস্ত্র ও মাদক পাওয়া গেছে, সেসব কক্ষে অভিযুক্তদের মধ্যে যারা ছিলেন না প্রমাণ করতে পেরেছেন,  তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়েছে। যারা পারেননি, তারা সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন। তার পরও কেউ যদি মনে করেন নিরপরাধ হয়েও বহিষ্কার হয়েছে, তাহলে তারা আপিল করতে পারেন।’


এনএ-০১/এএফ-০৫