স্কপ নেতা জাফর ও প্রণবসহ রিকশা শ্রমিকদেরকে গ্রেপ্তারের নিন্দা ও নিঃশর্ত মুক্তি দাবি স্কপের

সিলেট মিরর ডেস্ক


সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৫
১২:৪৯ অপরাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৫
১২:৫১ অপরাহ্ন



স্কপ নেতা জাফর ও প্রণবসহ রিকশা শ্রমিকদেরকে গ্রেপ্তারের নিন্দা ও নিঃশর্ত মুক্তি দাবি স্কপের


শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) নেতা আবু জাফর ও প্রণব জ্যোতি পালকে আলোচনার কথা বলে ডেকে নিয়ে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছেন স্কপ নেতৃবৃন্দ।  গ্রেপ্তার হওয়া দুই নেতাকে দেখতে গেলে দুই রিকশা শ্রমিককে গ্রেপ্তার করারও নিন্দা জানান তারা।

বাসদ সিলেট জেলা আহবায়ক আবু জাফর ও সদস্যসচিব প্রণব জ্যোতি পালকে গতকাল শনিবার তাদের কার্যালয় থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে নিয়ে ‍যাওয়া হয়। 

আজ রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) সিলেট জেলা আহবায়ক সুরমান আলী ও সদস্য মো. ছাদেক মিয়া স্বাক্ষরিত এক যৌথ বিবৃতি গণমাধ্যমে পাঠিয়ে এ দাবি জানানো হয়। 


পূর্বের সংবাদ-

যানবাহন ভাঙচুর মামলায় সিলেটে বাসদ নেতা জাফর ও প্রণব গ্রেপ্তার


নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘সম্প্রতি ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান উচ্ছেদের অভিযান চালায় সিলেটের প্রশাসন। এ অন্যায্য অযৌক্তিক অভিযানের বিরুদ্ধে রিকশা শ্রমিকরা সোচ্চার হয়ে রিকশা উচ্ছেদ বন্ধ, নীতিমালা প্রনয়ণ সহ রিকশা শ্রমিকদের লাইসেন্স প্রদানের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। শ্রমিকদের আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে ২৭ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভ সমাবেশ করে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা শাখা। কর্মসূচী শেষ হওয়ার ঘন্টাখানেক মধ্যে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ সিলেট জেলা সদস্য সচিব আবু জাফর সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা সাধারণ সম্পাদক প্রণব জ্যোতি পালকে সিলেট পুলিশ কমিশনার আলোচনার জন্য ডেকে নিয়ে পুরাতন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তারা বলেন, ‘পরবর্তীতে থানা হাজতে রিকশা শ্রমিক সৈকত ও রনি দেখা করতে গেলে তাদেরও গ্রেপ্তার করা হয় ‘

নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সিলেটসহ সারাদেশে প্রায় ৫০ লক্ষ ব্যাটারি চালিত যানবাহন শ্রমিকদের আন্দোলন যার সাথে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িয়ে আছে কয়েক কোটি মানুষের জীবিকা। এ আন্দোলনে কোন সেক্টরের শ্রমিক কিংবা যাত্রী সাধারণ কেউই প্রতিপক্ষ নয়। অথচ একটি স্বার্থন্বেষী মহল শ্রমিকদের মধ্যে বিরোধ ঘটিয়ে তাদের স্বীয় স্বার্থ হাসিল করতে চায়। ঠিক এ সময়ে সিলেট নগরীতে ব্যাটারিচালিত যানবাহন নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ সরকারের ঘোষিত নীতিমালার পরিপন্থী।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের বিদ্যুৎ উপদেষ্টা নিজে স্বীকার করেছেন হঠাৎ করেই হাজার হাজার রিকশা শ্রমিকদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান না করে উচ্ছেদ করা যুক্তিসঙ্গত নয়। সড়ক দূর্ঘটনার জন্য কেবল ব্যাটারিচালিত যানবাহনকে দায়ী করা অযৌক্তিক। যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য অনুযায়ী দেশে ৮৫ শতাংশ দূর্ঘটনা ঘটে অন্যান্য পরিবহন দ্বারা, আর মাত্র ১ শতাংশ ঘটে ব্যাটারিচালিত যানবাহনের কারণে।’

নেতৃবৃন্দ গত বৃহস্পতিবার বন্দর বাজারে যে অনাকাঙ্খিত সিএনজি ভাংচুরের ঘটনা ঘটে এর সাথে কোনো শ্রমিকের সংশ্লিষ্টতা ছিলনা। নেতৃবৃন্দ এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। শ্রমিকদের শ্রেণিগত অবস্থান থেকে প্রত্যেক শ্রমিকদের উচিত তাদের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়া কোনো ধরনের উস্কানী কিংবা ফাঁদে পা না দেওয়ার জন্য উদাত্ত আহবান জানান।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, যে সেক্টরের সাথে জড়িয়ে আছে লক্ষাধিক পরিবার সেই অটোরিকশা উচ্ছেদ কোনো যৌক্তিক সমাধান নয়। দূর্ঘটনা এবং যানজট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। ‘বৈদ্যুতিক থ্রী-হুইলার ব্যবস্থাপনা নীতিমালা ২০২৫’ গ্রহণ করে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। দরিদ্র জনগণ সহায় সম্বল বিক্রি করে, এনজিও থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে ব্যাটারি চালিত রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক কিনে যখন আতœকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন তখন কখনো যানজট, কখনো দূর্ঘটনা, বিদ্যুৎ অপচয়ের অজুহাত তুলে এই বাহনগুলো উচ্ছেদ অভিযান চলে। এই রিকশাগুলো তো কোনো শ্রমিক তৈরি করেনি; জীবনের শেষ সম্বলটুকু দিয়ে কিনে জীবিকা নির্বাহ করার চেষ্ঠা করছে। যদি এই রিকশা অবৈধই হবে তাহলে কেন এগুলো বিক্রি করা হলো বা এখনও কেন বিক্রি করা হচ্ছে? আমদানিকারক প্রতিষ্টান ও শোরুমগুলোতে এসব বাহনের অবাধ বিক্রি চললেও সেখানে এখনও কেন নিয়ন্ত্রণ বা অভিযান নেই?

নেতৃবৃন্দ অনতিবিলম্বে গ্রেফতারকৃত শ্রমিক নেতাদের নি:শর্ত মুক্তির দাবি জানান এবং ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকদের ন্যায় সংগত দাবি দাওয়া আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার জন্য প্রশাসনের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান।    



এএফ/০৩