সমুদ্রে বীরত্বের জন্য বাংলাদেশকে আইএমও-এর বিশেষ সম্মাননা

যুক্তরাজ্য সংবাদদাতা


আগস্ট ০১, ২০২৫
০৩:১৪ পূর্বাহ্ন


আপডেট : আগস্ট ০১, ২০২৫
০৩:১৪ পূর্বাহ্ন



সমুদ্রে বীরত্বের জন্য বাংলাদেশকে আইএমও-এর বিশেষ সম্মাননা

বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্য, কোস্টগার্ডের লেফটেন্যান্ট মোহাম্মদ শফিউল আলম।


বিশ্বের ১৭৬টি দেশের সমন্বয়ে গঠিত জাতিসংঘের আওতাধীন আন্তর্জাতিক সমুদ্র চলাচল সংস্থা (আেইএমও) প্রবর্তিত 'সমুদ্রে অসাধারণ সাহসিকতা' (Exceptional Bravery at Sea) পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্য, কোস্টগার্ডের লেফটেন্যান্ট মোহাম্মদ শফিউল আলম এবং অগ্নিনির্বাপণকারী জাহাজ 'প্রমত্ত'-এর ক্রুরা।

গত বছরের ৫ অক্টোবর চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে 'বাংলার সৌরভ' তেলবাহী জাহাজে এক ভয়াবহ বিস্ফোরণের পরে অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত সাহসিকতার স্বীকৃতিস্বরূপ তাদের এই বিরল সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।


পূর্বের সংবাদ-

ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেওয়া মাহফিজুর ও নাজমুলকে বাংলাদেশ হাইকমিশনের অভ্যর্থনা


আইএমও প্রতি বছরই সেইসব ব্যক্তিদের এই পুরস্কারে ভূষিত করে, যারা সমুদ্রে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অন্যের জীবন রক্ষা করেন এবং জরুরি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অসামান্য অবদান রাখেন। আইএমও-এর ১২৫তম সেশনে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুসারে, এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার অর্জন করলো, যা দেশের জন্য এক বিরাট সম্মান।

'বাংলার সৌরভ' ট্যাঙ্কারে বিস্ফোরণের পর নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড এবং বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রায় চার ঘণ্টার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। তাদের এই সাহসী এবং পেশাদারী অভিযানে শুধুমাত্র মূল্যবান জীবনই বাঁচানো যায়নি, বরং একটি বড় ধরনের সামুদ্রিক দূষণের হাত থেকেও পরিবেশকে রক্ষা করা গেছে।

আইএমও-এর মহাসচিব আর্সেনিও ডোমিঙ্গেজ তার প্রেরিত 'প্রশংসাপত্র' (Letter of Commendation)-এ লেফটেন্যান্ট শফিউল আলম ও তার ক্রুদের ভূয়সী প্রশংসা করে উল্লেখ করেন, "আইএমও কাউন্সিলের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনাদের অসাধারণ কাজের জন্য আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। আপনারা যেভাবে অভিযান চালিয়েছেন, তাতে একটি বড় ধরনের সামুদ্রিক দূষণ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হয়েছে। আপনাদের অসাধারণ সাহস, পেশাদারিত্ব এবং কর্তব্যনিষ্ঠা সত্যিই উল্লেখযোগ্য। আপনারা সমুদ্র পেশার সর্বোচ্চ ঐতিহ্য রক্ষা করেছেন—এজন্য আপনাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও অভিনন্দন রইল।"

ঘটনার সময় 'বাংলার সৌরভ' জাহাজে প্রায় ১১ হাজার ৫৫ টন তেল এবং ৪৮ জন কর্মী ছিলেন। আগুন লাগার পর আত্মরক্ষার জন্য কেউ কেউ পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়লেও, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তাদের সবাইকেই অক্ষত উদ্ধার করা সম্ভব হয়। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের মালিকানাধীন 'বাংলার জ্যোতি' ও 'বাংলার সৌরভ' নামক এই দুটি তেলবাহী জাহাজ সাগরে অপেক্ষমাণ বড় জাহাজ থেকে তেল সংগ্রহ করে বন্দরে পৌঁছে দেওয়ার কাজ করে আসছিল।


এএফ/০২