নিজস্ব প্রতিবেদক
ডিসেম্বর ১৪, ২০২৪
১২:১৩ পূর্বাহ্ন
আপডেট : ডিসেম্বর ১৪, ২০২৪
১২:১৩ পূর্বাহ্ন
আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মৃত্যু হয়ে গেছে; দেশকে যারা সম্মান করে না, তারা দেশে কারো কাছে ভোট চাইবে কী করে। এ রকম আগ্রাসী রাজনৈতিক দলকে দেশের মানুষ আর চায় না বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
আজ শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সিলেটের ঐতিহ্যবাহী সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে সিলেট জেলা জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সিলেট জেলা আমীর ও কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য মাওলানা হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল এ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তর আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক ফজলুর রহমান, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগরী আমীর মোঃ ফখরুল ইসলাম।
জেলা সেক্রেটারী ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদীন, জেলা সহকারী সেক্রেটারী অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম এবং মাওলানা মাশুক আহমদের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন- সুনামগঞ্জ জেলা আমীর মাওলানা তোফায়েল আহমদ খান, মৌলভীবাজার জেলা আমীর ইঞ্জিনিয়ার শাহেদ আলী, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও সিলেট জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও সিলেট জেলা নায়েবে আমীর হাফেজ আনওয়ার হোসাইন খান, হবিগঞ্জ জেলা জামায়াত সেক্রেটারী কাজী মহসিন আহমদ, জেলা মজলিশে শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাওলানা লোকমান আহমদ, জেলা মজলিশে শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য উপাধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ ফয়জুল্লাহ বাহার, জেলা শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল্লাহ আল-হোসাইন, শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য এবং গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হাফিজ নাজমুল ইসলাম, ইসলামী ছাত্রশিবির কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগরী সভাপতি শরীফ মাহমুদ, শাবিপ্রবি ছাত্রশিবির সভাপতি তারেক মনোয়ার, ছাত্রশিবির সিলেট জেলা পূর্ব সভাপতি মারুফ আহমদ প্রমূখ।
কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান আওয়ামী লীগকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘মানুষ এখন ঘুমে নয়, সজাগ। আর এই জাতি এখন বিশেষভাবে সজাগ। তারা (আওয়ামী লীগ) এই অভ্যুত্থানকে ব্যর্থ করে দিতে অনেক কাণ্ড করেছে। তারা জুডিশিয়াল ক্যু করতে চেয়েছিল, আল্লাহ ব্যর্থ করে দিয়েছেন। তারা আনসার কাণ্ড ঘটিয়ে ক্যু করতে চেয়েছিল, চাকরি আন্দোলন দিয়ে ক্যু করতে চেয়েছিল, আল্লাহ ব্যর্থ করে দিয়েছেন। এরপর তারা ইসকন কাণ্ড নিয়ে নেমেছিল, আল্লাহ সেটাও ব্যর্থ করে দিয়েছেন। শেষমেষ ইসকনের লোকেরা নির্দয়ভাবে একজন আইনজীবীকে খুন করল প্রকাশ্য দিবালোকে ত্রিফলা দিয়ে কুপিয়ে কুপিয়ে। তার চেহারা এতটাই বিকৃত করে দেওয়া হয়েছিল, তার পরিবারের কাউকে তার ইন্তেকালের পর চেহারা দেখতে দেওয়া হয়নি।’ তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে মূলত এদেশের দেশপ্রেমী মানুষ বিশেষ করে মুসলমানদের উস্কানি দেওয়া হয়েছিল তোমরাও কিছু করো। আমরা তখন সঙ্গে সঙ্গে বলেছিলাম- শান্ত থাকুন এবং মাঠ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখুন। তারা দুটোই করেছেন। ওরা এখন গর্তে ঢুকেছে। কিন্তু তাদের বিদেশ থেকে বাতাস দেওয়া হচ্ছে।’ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা এদেশের হিন্দু ভাইদের ধন্যবাদ জানাই। তারা তাদের বিবেকের জায়গা থেকে প্রতিবাদ করে বলেছেন, আমরা শান্তিতে আছি। তোমরা আমাদের শান্তির উপর আঘাত দিও না। আমাদের শান্তিতে থাকতে দাও। ভারতকে বলেছেন, আমাদের নিয়ে আর খেলো না। বহু খেলেছ এখন তোমরা শান্ত হও। আমরা এদেশে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষ ভালো আছি। ভালো থাকতে চাই।’
ইসকন ইস্যুতে সাম্প্রতিক ঘটনাবলির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অতি সম্প্রতি ইসকনের ঘটনা ঘটার পরে আমাদের অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা দাওয়াত দিয়েছিলেন সব ধরণের সংগঠনকে। ডান, বাম, ইসলামী, মধ্যম সবাইকে। এই বাংলাদেশের একান্ন বছরে প্রথমবারের মতো সকল ঘরনার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ একসঙ্গে বসে তারা হাত তুলে অঙ্গীকার করেছেন দেশ এবং জনগণের স্বার্থ রক্ষায়, স্বাধীনতা এবং সার্বভৌম রক্ষায় আমরা সবাই এক। আমরা কোনো অপশক্তির কাছে মাথানত করব না। আমরা কোনো চোখ রাঙানিকে পরোয়া করি না।’ ধর্মীয় অভিভাবকরা এক হয়েছিলেন জানিয়ে বলেন, ‘তারাও হাতে হাত মিলিয়ে আওয়াজ দিয়েছেন এখানে ধর্ম, বর্ণের কোনো কথা নেই। আমরা সকলে মিলে বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্রে আমরা পা দেবো না।’
শাপলা চত্বরে আলেমদের হত্যা করা হয়েছে জানিয়ে তিনি এসময় বলেন, ‘একটা মানুষের মৃত্যুর চেয়ে এভাবে অপমানে দায় স্বীকার করে পালিয়ে যাওয়া নিকৃষ্টতম। এদের (আওয়ামী লীগের) রাজনৈতিক মৃত্যু হয়েছে। আমরা ধারণা করেছিলাম তারা শপথ নেবেন, আর তারা এই দেশকে জ¦ালা-যন্ত্রণা দেবেন না। কিন্তু কয়লা ধুলে ময়লা যায় না। এটা সাবান দিয়ে ধুলে আরো কালো হয়, কুচকুচে কালো। আমরা সমাজ সার্ফ এক্সেল দিয়ে ধুতে চাই। ওরা শুধু কালো করছে। ওরা নিজেরা শান্তিতে নাই, বাংলাদেশকেও শান্তিতে থাকতে দেবে না। এতটুকুতে তাদের শিক্ষা হয়নি, তাদের শিক্ষা কবে হবে আল্লাহ জানেন।’
এএফ/০৩