সিলেট মিরর ডেস্ক
অক্টোবর ২৭, ২০২৪
০৩:৪৭ পূর্বাহ্ন
আপডেট : অক্টোবর ২৭, ২০২৪
০৩:৪৭ পূর্বাহ্ন
খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা আবদুল বাছিত আজাদ বলেছেন, 'এ জাতির অভ্যুদয়টাই ছিল বৈষম্য আর বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। কিন্তু ইতিহাসের বিভিন্ন বাঁকে জাতিকে বারবারই বৈষম্য ও বেইনসাফির প্রতিবাদ করতে রক্ত দিতে হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘প্রতিবারই এ জাতির বঞ্চনার ইতিহাস প্রলম্বিত হয়েছে। ধোঁকাবাজ নেতারা আমাদেরকে ভুলিয়ে ভালিয়ে তাদের মনগড়া মতবাদ আর তন্ত্রমন্ত্রের ধোঁয়া তোলে শোষন করেছে।
আজ শনিবার (২৬ অক্টোবর) বিকালে সিলেট নগরের ঐতিহ্যবাহী রেজিস্টারী মাঠে খেলাফত মজলিস সিলেট জেলা ও মহানগর শাখা আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা আবদুল বাছিত আজাদ বলেন, ‘ধোঁকাবাজ নেতারা আমাদেরকে ভুলিয়ে ভালিয়ে তাদের মনগড়া মতবাদ আর তন্ত্রমন্ত্রের ধোঁয়া তোলে শোষন করেছে। নিজেদের আখের গোছাতে করনীয় সবকিছুই করেছে। তবুও জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনে কিছুই করেনি। ‘
যখন যারাই ক্ষমতায় এসেছে, নিজেদের কোটারি সার্থ, দলীয় এজেন্ডা আর বিদেশীদের ফরমায়েশ বাস্তবায়নে সচেষ্ট ছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘কারও ফুরসত মিলেনি দেশ-জনতার সার্থের কথা ভাবার,অমিত সম্ভাবনাময় এদেশটিকে সমৃদ্ধির সোপানে নিয়ে যাওয়ার। ফলে ৫৩ বছর পরও এজাতিকে অধিকারের জন্য রক্ত দিতে হয়েছে। নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত জগদ্দল পাথরের ন্যায় চেপে বসা এক স্বৈরাচারীনীকে হটাতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদেরকেও রাজপথে রক্ত দিতে হয়েছে। দেড় সহস্রাধিক ছাত্র-জনতা জীবন দিয়ে শাসক নামের রক্তচোষা স্বৈরাচারকে পালাতে বাধ্য করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই সংঘাত, প্রতিবাদ আর কতকাল চলবে? এ জাতি আর চায়না স্বৈরতন্ত্র, ঘৃণাভরে তাড়িয়েছে শোষকদেরকে।এখন সময় এসেছে, এদেশের মানুষের প্রকৃত শান্তি, মুক্তি ও প্রগতির বন্দোবস্ত করার। সকল প্রকার বৈষম্য, ফ্যসিবাদ ও দূর্নীতি নির্মূল করার এখন মোক্ষম সুযোগ। এ সুযোগ হাতছাড়া করা যাবেনা। আর এজন্য একমাত্র পথ হলো খোলাফায়ে রাশিদীনের আদর্শের অনুকরণে রাষ্ট্র ও সরকার ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো। এছাড়া অন্য কোন পথ ও পন্থায় এদেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন অসম্ভব। বিগত ৫৩ বছরের ইতিহাস আমাদেরকে এ শিক্ষাই দেয়।'
খেলাফত মজলিস সিলেট জেলা সভাপতি মাওলানা নেহাল আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, দলের নায়েবে আমীর প্রিন্সিপাল শায়খ মাওলানা মজদুদ্দিন আহমদ, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসাইন, মুহাম্মদ মুনতাসির আলী,কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য অধ্যক্ষ আবদুল হান্নান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নায়েবে আমীর প্রিন্সিপাল শায়খ মজদুদ্দিন আহমদ বলেন, 'আলেমদের হাত থেকে আল্লাহ মুক্তি দিয়েছেন, জুলুমের চিরস্থায়ী নিষ্কৃতির জন্য খেলাফত প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সবাইকে আত্মনিয়োগ করতে হবে।'
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, ' সিলেট সহ সারা দেশের রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের সার্থের প্রতি অগ্রাধিকার দিয়ে তাদের সেবা নিশ্চিত করার দাবী জানিয়ে বলেন, সিলেট হচ্ছে বন্যাপ্রবন এলাকা। এই এলাকা সহ বাংলাদেশের বন্যা সংকট উত্তরনে ভারতের সাথে স্থায়ী মীমাংসা করার আহ্বান জানাচ্ছি।'
সিলেট মহানগর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা জাবেদুল ইসলাম চৌধুরীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন,সিলেট মহানগর সভাপতি হাফিজ মাওলানা তাজুল ইসলাম হাসান, যুক্তরাজ্য সাউথ শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা এনামুল হাসান ছাবির, জেদ্দা মহানগর সভাপতি মাওলানা আবদুল মুকিত,রিয়াদ মহানগর সভাপতি মাওলানা আবুল হোসাইন,সিলেট মহানগর সহ সভাপতি মাওলানা শাহ আশিকুর রহমান, আবদুল হান্নান তাপাদার, সিলেট জেলা সহ সভাপতি মাওলানা মুখলিছুর, মহানগর সহ সভাপতি মাওলানা কেএম আবদুল্লাহ আল মামুন,সিলেট জেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা দিলওয়ার হোসাইন, ইসলামী যুব মজলিস সিলেট জেলা সভাপতি মাওলানা আহমদ মাহফুজ আদনান, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি পরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগর সভাপতি মিজানুর রহমান, শাবি সভাপতি হোসাইন আহমদ, সিলেট পূর্ব জেলা সভাপতি সালমান আহমদ ও পশ্চিম জেলা সভাপতি আবদুর রহমান প্রমূখ।
সমাবেশ শেষে বৈষম্য, ফ্যসিবাদ ও দূর্নীতি মুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার দাবীতে এক বিরাট গণ মিছিল নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আম্বরখানা পয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়।
এএফ/০৯