বন্যায় বিপর্যস্ত সিলেটের শিক্ষাব্যবস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক


জুলাই ০৬, ২০২৪
০৪:০৭ অপরাহ্ন


আপডেট : জুলাই ০৬, ২০২৪
০৪:১২ অপরাহ্ন



বন্যায় বিপর্যস্ত সিলেটের শিক্ষাব্যবস্থা
# জেলায় ৩৯৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ # মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে ৭৮টি


সিলেটে চলতি বছরে তৃতীয় দফায় বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে সিলেট। ২০২২ সালের ভয়াবহতার ‘ট্রমা’ কাটিয়ে ওঠার আগেই আবারও সিলেট তলিয়ে গেছে বানের পানিতে। বন্যার পানি নামছেও ধীরগতিতে। জেলার সড়ক, কৃষি, মৎস্য, অবকাঠামোসহ নানা খাতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে শিক্ষাখাত। সিলেট, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজারে হাজারেরও বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। এতে মানুষের কষ্টের পাশাপাশি পড়ালেখাও মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে। 

জানা গেছে, বন্যার কারণে সিলেট জেলার প্রায় ৫০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি জমে আছে আর বাকিগুলো আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ঈদের ছুটির পর থেকেই বন্ধ রয়েছে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান। 

শিখন ঘাটতি কমাতে, ঈদ ও গ্রীষ্মের ছুটি কমিয়ে ২ জুলাইয়ের পরিবর্তে ২৬ জুন থেকে দেশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদান শুরু হয়। তবে, সিলেটের অনেক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ঈদের পর আর পাঠদান শুরু করা সম্ভব হয়নি। একই অবস্থা প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোরও। ঈদের ছুটির পর ৩ জুলাই থেকে দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয় খুললেও, বন্যার কারণে সিলেটের বিদ্যালয়গুলোর কার্যক্রম শুরু হয়নি। 

সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো থেকে জানা গেছে, বন্যার কারণে সিলেট জেলায় ৩৯৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে ৭৮টি। এছাড়া কয়েকটি কলেজ জলমগ্ন হওয়ায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে। 

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস জানিয়েছে, জেলার মোট ১ হাজার ৪৭৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩৯৮টিই বন্ধ। এর মধ্যে সিলেট সদর উপজেলায় ৩৭, বিশ্বনাথে ২, বালাগঞ্জে ৫৫, ফেঞ্চুগঞ্জে ৩২, গোলাপগঞ্জে ২৭, বিয়ানীবাজারে ৫৪, জকিগঞ্জে ২৩, কানাইঘাটে ৪, জৈন্তাপুরে ৩, গোয়াইনঘাটে ২, কোম্পানীগঞ্জে ৬৫, দক্ষিণ সুরমায় ২২ ও ওসমানীনগরে ৭২টি বিদ্যালয় রয়েছে। 

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাখাওয়াত এরশাদ বলেন, ৩৯৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৬৭টি আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। আর বাকিগুলো জলমগ্ন হয়ে আছে। 

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. আব্দুল ওয়াদুদ জানান, বন্যার কারণে জেলায় ৭৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিদ্যালয় রয়েছে ওসমানীনগর, বালাগঞ্জ ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায়। কুশিয়ারা অববাহিকার এসব এলাকায় বন্যার পানি কমছেই না। 

সিলেটে প্রথম দফা বন্যা দেখা দেয় গত ২৯ মে। ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে যায় সিলেটের সীমান্তবর্তী ৬ উপজেলা। ৮ জুনের পর থেকে এই বন্যার পানি কিছুটা কমে আসে। 

গত ১৬ জুন থেকে আবার বন্যা শুরু হয়। এতে সিলেট নগরসহ জেলার ১৩টি উপজেলায়ই বন্যা দেখা যায়। পানিবন্দী হয়ে পড়েন প্রায় সাড়ে ১০ লাখ মানুষ। ২৫ জুন দ্বিতীয় দফার বন্যার পানি কমা শুরু হয়। ১ জুলাই থেকে আবার অতিবৃষ্টি শুরু হলে নেমে আসে ঢল, সৃষ্টি হয় নতুন বন্যা পরিস্থিতি। 

এদিকে, গতকাল শুক্রবার আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, সিলেটসহ বাংলাদেশের সব বিভাগে আরও বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে; ‘সিলেট, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে।’

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, মৌসুমি বায়ুর অক্ষ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। 

এদিকে, সিলেটে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে তৃতীয় দফার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত আছে। সুরমা-কুশিয়ারার পানি কোথাও এক সেন্টিমিন্টার কমলেও অন্য পয়েন্টে বাড়ছে। এতে পানিবন্দী মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। বিশেষ করে নিম্নআয়ের মানুষের আয় রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। এতে সীমাহীন কষ্টে দিনাতিপাত করছেন মানুষ। 

সিলেট জেলা প্রশাসনের গতকাল শুক্রবার সকালের তথ্য অনুযায়ী, জেলার ১ হাজার ১৮০টি গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬ লাখ ২৬ হাজার ১৩৮ জন মানুষ। জেলায় ৬৫০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ২০৪টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৯ হাজার ৩২৯ জন আশ্রয় নিয়েছেন। 

বানের পানিতে গ্রাম থেকে নগর সবখানেই রাস্তা, পুকুর, ঘরবাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়ে থমকে গেছে সবকিছু। পানিবন্দী অবস্থায় আছেন কয়েক লাখ মানুষ। এছাড়া সিলেট, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজারে হাজারের বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। এতে মানুষের কষ্টের পাশাপাশি পড়ালেখাও মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে। 

বুধবার প্রাথমিক বিদ্যালয় খুললেও সিলেট বিভাগের প্রায় হাজারও বিদ্যাপীঠে পাঠদান হয়নি। পাঠদান বন্ধ থাকা এসব বিদ্যাপীঠের অধিকাংশই এখনো পানির নিচে, আবার কোনো কোনোটি ব্যবহৃত হচ্ছে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে। 

সংশ্লিষ্ট দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সিলেট বিভাগের ৫ হাজার ৫৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৮৮৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান হয়নি। সেসব বিদ্যালয়ের অধিকাংশই এখনো পানিতে দলিয়ে আছে। একটা অংশ ব্যবহৃত হচ্ছে বন্যাকবলিত এলাকার গৃহহীনদের আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে। 

এদিকে, বুধবার দুপুরের পর বৃষ্টি না হলেও সন্ধ্যা ও রাতে থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা ৩টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়নি। ৩টার পর প্রায় ঘণ্টাব্যাপী ভারী বৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গতকাল শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে পূর্ববর্তী ২৪ ঘন্টায় সিলেটে বৃষ্টিপাত হয়েছে ২৫ দশমিক ৬ মিলিমিটার। আর গতকাল সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যে ৬টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৪ দশমিক ৩ মিলিমিটার। 

সিলেটের ওপর দিয়ে বয়ে চলা সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর ৬টি পয়েন্টে বৃহস্পতিবারও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে গতকাল শুক্রবার সকাল ৬টায় পানি বিপৎসীমার ৬৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে নদীটির সিলেট পয়েন্টে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হলেও গতকাল সকালের তথ্য পাওয়া যায়নি। কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ পয়েন্টে গতকাল সকাল ৬টায় পানি বিপৎসীমার ১৪৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। নদীর শেওলা পয়েন্টে পানি ছিল ৪০ সেন্টিমিটার ওপরে। ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ১০৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। অন্যদিকে নদীর শেরপুর পয়েন্টে পানি গতকাল সকাল ৬টায় ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে জেলার অন্য নদ-নদীর পানি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার তুলনায় গতকাল কিছুটা কমেছে। 

পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ জানান, বাঁধ মেরামতের জন্য এরই মধ্যে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। পানি না নামলে সেগুলো মেরামত করা সম্ভব নয়। তিনি জানান, ভারতীয় ঢলের পানি এখন নদীতে গিয়ে মিলছে। নদ-নদী পানিতে ভরা থাকায় নামতে বিলম্ব হচ্ছে। 

এদিকে, বন্যায় সিলেটের ১৩টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জকিগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ভারত থেকে নেমে আসা ঢলের পানি প্রথমেই আঘাত হানে। সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলোর মধ্যে জকিগঞ্জ উপজেলায় কুশিয়ারা নদীর পানি বাঁধ উপচে ও বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গিয়ে নতুন করে শত শত গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া বালাগঞ্জ, ওসমানীনগর, ফেঞ্চুগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারে বন্যা পরিস্থিতি যেমন ছিলো তেমনই আছে। বানের পানি স্থির হয়ে আছে। পানি কমা তো দূরের কথা, বরং কোথাও কোথাও বেড়েছে। 

বিয়ানীবাজারের ঘুঙ্গাদিয়া গ্রামের বাসিন্দা জসিম উদ্দিন জানান, কুশিয়ারা নদীর পানি উপচে তাদের গ্রামের ৮০ শতাংশ ঘর তলিয়ে গেছে। তৃতীয় দফার এ বন্যা গ্রামের প্রধান সড়কও ডুবিয়ে দিয়েছে। 

কয়েক দিন আগেই পরিবারের আট সদস্য নিয়ে বন্যার কারণে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছিলেন সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দীরগাঁও ইউনিয়নের মানাউরা গ্রামের বাসিন্দা এমাদ উদ্দিন। পানি কমে যাওয়ায় বাড়িও ফিরেছিলেন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ঘর মেরামত করার আগেই আবার তৃতীয় দফায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এমন অবস্থায় পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তিনি। এমাদ বলেন, মানাউরা গ্রামের মূল সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। বাসিন্দাদের মূল বাহন এখন নৌকা। 

ফেঞ্চুগঞ্জের বিয়ালীবাজার এলাকায় বাসিন্দা শোয়েব আহমদ বলেন, ঈদের তৃতীয় দিন তাঁর ঘরে পানি উঠেছিল। এরপর ঘিলাছড়া এলাকায় এক বন্ধুর খালি বাড়িতে আশ্রয় নেন। এবারও ১ জুলাই রাতে পানি বেড়ে যাওয়ায় একই বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। এমন অবস্থা আরো অসংখ্যজনের। 

জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ছবড়িয়া গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া কুশিয়ারা নদীর পানি বেড়ে যায়। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দারা বস্তা ফেলে ডাইক মেরামত করেছিলেন। তবে সেটিও টেকেনি। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ডাইক ভেঙে গ্রামে পানি ঢুকছে। এতে আশপাশের আরও চারটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বাড়ি-ঘর ডুবে যাওয়ায় দিনমজুর মানুষগুলোর কোনো কাজ নেই। তারা অর্ধাহারে-অনাহারে দিনাতিপাত করছেন। 

জকিগঞ্জের নরসিংহপুর এলাকার বাসিন্দা রাজ্জাক আহমদ বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে কুশিয়ারা নদীর ডাইক ভেঙে পানি ঢুকতে থাকে। এতে তাদের গ্রামসহ আশপাশের চারটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। গত দুই ধাপে তেমন কিছু না হলেও তৃতীয় ধাপে কুশিয়ারা নদী তাদের মধ্যে শঙ্কা বাড়াচ্ছে। ডাইক ভেঙে ও কোথাও কোথাও নদীর পানি উপচে পড়ছে। 

ছবড়িয়া গ্রামের ইয়াসিন আহমদ বলেন, মঙ্গলবার রাতে কুশিয়ারা নদীর পানি প্রথমে ডাইক উপচে পড়ে। পরে তাদের এলাকায় ডাইক ভেঙে পানি ঢুকতে থাকে। এতে গ্রামের প্রায় প্রতিটি ঘরবাড়িতে পানি ওঠে। এর পর থেকে পানি ঢোকা অব্যাহত আছে। এতে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

এদিকে বিয়ানীবাজার উপজেলার দেউলগ্রাম, গোবিন্দশ্রী, আঙ্গুরা মোহাম্মদপুর, আলীনগর চরখাই এলাকায় কুশিয়ারা নদীর পানি উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। দেউলগ্রামের বাসিন্দা আহমদ হোসেন বলেন, প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের বন্যায় তেমন সমস্যা না হলেও তৃতীয় ধাপে এসে তিন দিন ধরে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিপাকে আছেন। ঘরের মধ্যে প্রায় হাঁটুসমান পানি। পরিবারের সদস্যরা স্বজনদের বাড়িতে অবস্থান করছেন। 

অপরদিকে, দুই দিন ধরে কম বৃষ্টিপাত হলেও সিলেট নগরের অভ্যন্তরে জলাবদ্ধতা কাটেনি। শহরের অভ্যন্তরেও বেশ কয়েকটি এলাকা পানিতে তলিয়ে রয়েছে। এর মধ্যে শাহজালাল উপশহর, যতরপুর, মীরাবাজার, তালতলা, জামতলা, মির্জাজাঙ্গাল, মণিপুরি রাজবাড়িসহ বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় এখনো পানিবন্দী বাসিন্দারা। 

শাহজালাল উপশহরের ডি ব্লকের বাসিন্দা ফাহাদ মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ঘরের নিচতলায় পানি জমে আছে। সড়কে হাঁটুর ওপরে পানি।