নিজস্ব প্রতিবেদক
অক্টোবর ৩১, ২০২৩
১১:২৪ অপরাহ্ন
আপডেট : নভেম্বর ০১, ২০২৩
০৪:৩৯ পূর্বাহ্ন
বাংলাদেশে প্রথম গ্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড ‘বঙ্গবীর ওসমানী স্বর্ণপদক’ চালু করছে বঙ্গবীর ওসমানী গবেষণা ইনস্টিটিউট। এ বছর দেশের তিন গুণী ব্যক্তি স্বর্ণপদকের জন্য মনোনীত হয়েছেন। আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের ঐতিহাসিক দিনে আনুষ্ঠানিকভাবে এ পদক প্রদানের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) ওসমানী জাদুঘর প্রাঙ্গণে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানিয়েছেন বঙ্গবীর ওসমানী গবেষণা ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত বীরমুক্তিযোদ্ধা এম এ মালেক খান।
তিনি জানান, বৃহত্তর সিলেটের জীবন্ত কিংবদন্তী, দেশ ও জাতির জন্য বিশেষ অবদান রয়েছে এমন ৩ (তিন) জনকে যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে মনোনীত করার জন্য তিন সদস্যের বাছাই কমিটি গঠন করা হয়েছিল। বিচারকদের সর্বসম্মতিক্রমে তিন জনকে এ পদকের জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছে।
এর মধ্যে তত্ত¡াবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা, উপমহাদেশের খ্যাতনামা হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ব্রিগেডিয়ার অবসরপ্রাপ্ত ডা. এ. মালিক। , বিশিষ্ট কুটনীতিবিদ, যুক্তরাজ্যস্থ বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার, লেখক ও গবেষক এ এইচ মোফাজ্জল করিম, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, লেখক, গবেষক ও ভাষাসৈনিক প্রফেসর মো. আব্দুল আজিজ।
লিখিত বক্তব্যে এম এ মালেক খান বলেন, ২০২০ সালের ১৬ ফেব্রæয়ারি মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবীর জেনারেল মুহম্মদ আতাউল গণি ওসমানীর ৩৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপনের দিন সিলেট নগরের “ওসমানী জাদুঘর” মিলনায়তনে সিলেট বিভাগীয় প্রশাসন, সিলেট জেলা প্রশাসন, অসংখ্য বীরমুক্তিযোদ্ধা, সিলেটের বিশিষ্ট ব্যক্তি ও সাংবাদিকসহ সবার উপস্থিতিতে কিছু সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে, বঙ্গবীর ওসমানীর অসাধারণ জীবনপুঞ্জি নিয়ে সঠিক গবেষণা, বিশেষ করে তাঁর কৃতিত্বপূর্ণ কর্মময় জীবনের স্মৃতি অমর করে রাখার দৃঢ় প্রত্যয় ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নে “বঙ্গবীর ওসমানী গবেষণা ইনস্টিটিউট” নামে একটি অরাজনৈতিক সংস্থা গঠন করা হয়। এ সংগঠনের বিশেষ প্রচেষ্টা ও তত্ত¡াবধানে বঙ্গবীর ওসমানীর কালজয়ী, ক্ষণজন্মা জীবনকাহিনী নিয়ে দুটি পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ রচনা ও প্রকাশ এবং বাস্তবভিত্তিক একটি বারোফিল্ম বা ডকুমেন্টারি পূর্ণদৈর্ঘ্যফিল্ম নির্মাণ করার প্রস্তাবও গৃহিত হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাঙ্গালি জাতির গর্বিত সন্তান বঙ্গবীর ওসমানীর অসাধারণ জীবনকাহিনী নিয়ে প্রকৃত গবেষণা ও বায়োফিল্মের মতো মহাপ্রকল্প পুরোপুরি বাস্তবায়নের জন্য সিলেটবাসী তথা মহান স্বাধীনতাপ্রিয় আপামর দেশবাসী বিশেষ করে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, দেশ ও জাতি বঙ্গবীর ওসমানীর নিকট অপ্রতিশোধ্য ঋণে আবদ্ধ। তাঁর এ ঋণ কিছুটা হলেও শোধ করার জন্য নিজ নিজ অবস্থান থেকে অংশগ্রহণ এবং নিঃস্বার্থ সহযোগিতার হাত সুপ্রসারিত করতে কৃতজ্ঞচিত্তে উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি।’
‘সিদ্ধান্তের আলোকে প্রাথমিক এবং ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে ২০২২ সালে তার নামকরণে ‘বঙ্গবীর ওসমানী স্বর্ণপদক-২০২৩’ ঘোষণা করা হয়। এরই নিমিত্তে বৃহত্তর সিলেটের জীবন্ত কিংবদন্তী দেশ ও জাতির জন্য বিশেষ অবদান রয়েছে এমন তিন জন ব্যক্তিকে যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে মনোনীত করার জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট যাচাই বাছাই কমিটির গঠন করা হয়। বিচারকদের সর্বসম্মতিক্রমে সংস্থার সভায় প্রস্তাব অনুমোদন হয়।’
তিনি জানান, স্বর্ণপদক প্রদানের জন্য প্রাথমিকভাবে ২ নভেম্বর ঠিক করা হলেও গত ৫ অক্টোবর ইনস্টিটিউট-এর জরুরি সভায় সিলেট বিভাগের ৪টি জেলা যথাক্রমে সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার এবং হবিগঞ্জ জেলার ব্যক্তিবর্গের মতামত এবং পরামর্শকে বিশেষ বিবেচনা করে তারিখ পরিবর্তন করে আগামী ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে এই পদক প্রদান অনুষ্ঠানের তারিখ পুনরায় নির্ধারণ করা হয়।
ভবিষ্যত কিছু পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে মালেক খান বলেন, ‘আমাদের পরবর্তী পরিকল্পনা “বঙ্গবীর ওসমানী” নামকরণে একটি ত্রৈমাসিক পত্রিকা আগামী ১৬ ফেব্রæয়ারী ২০২৪ বঙ্গবীর জেনারেল এম এ জি ওসমানী’র মৃত্যু দিবসের তারিখ থেকে প্রকাশিত করবো।’
এছাড়া বঙ্গবীর জেনারেল এম এ জি ওসমানীর অমর স্মৃতিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য সিলেট বিভাগের প্রতিটি জেলায় একটি করে “বঙ্গবীর ওসমানী স্টেডিয়াম”, “বঙ্গবীর ওসমানী মা ও শিশু হাসপাতাল” এবং সিলেট বিভাগীয় এলাকায় “বঙ্গবীর ওসমানী বিশ্ববিদ্যালয়” স্থাপনের পরিকল্পনা হাতে রয়েছে বলেও জানান তিনি।
আগামী ১৬ ডিসেম্বর বঙ্গবীর ওসমানী স্বর্ণপদক ২০২৩ অনুষ্ঠানকে সুন্দর, সফল এবং স্বার্থক করে তুলার লক্ষ্যে বাংলাদেশ তথা সিলেটবাসীকে দলমত নির্বিশেষে সার্বিক সহযোগিতা এবং অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানান ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান মালেক খান।
উল্লেখ্য, “বঙ্গবীর ওসমানী গবেষণা ইনস্টিটিউট” বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সিলেট বিভাগের ৪টি জেলাকে সমন্বয় করে ৫৭ (সাতান্ন) জন পরিচালকমÐলী নিয়ে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি বা নির্বাহী পরিচালক বোর্ড গঠন করা হয়েছে।
এছাড়া, বাংলাদেশ, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, সৌদি আরব, দুবাই, কুয়েত, কাতার, আফ্রিকা সহ বিশ্বের প্রবাসী বাংলাদেশী বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে এ পর্যন্ত ৫২ (বায়ান্œ) জন উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছেন।
এসই/০৫