মুহম্মদ নুরুল হুদা
এপ্রিল ২২, ২০২১
০৮:০১ পূর্বাহ্ন
আপডেট : এপ্রিল ২৩, ২০২১
০৪:৪১ পূর্বাহ্ন
[প্রকৃতির চলমান নিয়মেই চিরজীবনে প্রবেশ করেছেন একালের কবিদের কবি শঙ্খ ঘোষ। বাংলা কবিতা, বৈশ্বিক সৃষ্টিশীলতা ও অভিন্ন মানবতার কল্যাণে তাঁর কবিতা ও বহুমাত্রিক রচনাসম্ভার অবিস্মরণীয়। ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসের ২০ তারিখে কবির সঙ্গে কবির বাড়িতেই দেখা করার সুযোগ পাই। সেদিন তাঁর হাতে আমি তুলে দেই তাঁকে উৎসর্গীত আমার কবিতার বই ‘সপ্তর্ষির জন্যে কবিতা’।
আমার সঙ্গে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের কবি-সম্পাদক মানসী কীর্তনিয়া, কবি-বাচিক গার্গী সেনগুপ্ত, বাংলাদেশের কবি কৌমুদী নার্গিস প্রমুখ। এটি আমার জীবনের বিরল এক মুহূর্ত। আমি শিশুর উচ্ছলতায় তাঁকে আমার ‘যতদূর বাংলা ভাষা’ রচনাটি পড়ে শোনাই। তিনিও শিশুর সারল্য নিয়ে আমাকে স্বভাবসুলভ সুমিত বাক্যে উৎসাহিত করেন। ঘন্টাখানেকের সেই সাহচর্য আমাদের জীবনের অমূল্য স্মৃতি।
আমরা অমরলোকে তাঁর চির প্রশান্তি কামনা করি।
তার অমরত্ব প্রাপ্তির সংবাদ শোনার পর আমি কিছু সমিল পঙক্তি খসড়া করি। জীবনের সুখ-দুখের রহস্যানুষঙ্গে রচিত এই পঙক্তিমালা আমি তাঁকেই উৎসর্গ করছি।]
সুখ নয় আবছায়া
ঘাসের শরীরে
শিশিরে শিশিরে
বিম্বিত যদি সুখ,
কী করে শিখবো
কী করে লিখবো
না-দেখা সুখের মুখ?
যত সয়ে যাই
তত বয়ে যাই
বীজে বীজে শুধু মধু,
চলি আসমানে
বলি কানে কানে
অ-বলা তোমাকে, বধু।
কথার আগেই
কোনো কথা নেই
বন্ধ-অন্ধ মুখ,
বুক খোঁজে বুক
সুখ খোঁজে সুখ
ত্রিভুবন ধুকপুক।
জোনাকির আঁখি
খুটে খায় পাখি
চরাচরে ওড়ে ডানা,
তোমার অধরে
আমার অধরে
অধরা ধরার হানা।
তুমিও বোঝো না
আমিও বুঝি না
কাকে বলে সুখ-রাহু,
চোখে চোখ রাখি
বুকে বুক রাখি
বিরহেই উদ্বাহু।
বিরহীকে চিনি
চিনি বিরহিনী
চিনি না বিরহ ভাষা,
একা থাকি একা
দেখা বাকি দেখা
চেনা বাকি ভালোবাসা।
হাসিনি কাঁদিনি
ভুলেও আসিনি
কেউ কারো একা ডাকে,
ভালোবাসি আমি
ভালোবাসো তুমি,
ফেরাবে কে তবে কাকে?
হয় নাই দেখা
হয় নাই লেখা
চিঠিখানি ভালোবেসে,
নই কালিদাস
নই বালিহাঁস
মিলন-বিরহে ভেসে।
তাই লিখবো না
তাই শিখবো না
দুজন দুদিকে যাবো,
আমাকে হারিয়ে
তোমাকে হারিয়ে
যাকে পাবো তাকে পাবো।
ঘাসের শরীরে
শিশিরে শিশিরে
বিম্বিত আদি মুখ,
ভালোবাসা, সই
তুমি আমি নই
আদিম সৃষ্টিসুখ।
সুখ নয় ছায়া
সুখ নয় মায়া
সুখ নয় শুধু কায়া,
ছায়ায় কায়ায়
মায়ায় ছায়ায়
সুখ নয় আবছায়া
সুখ
নয়
আবছায়া
সুখ
নয়
আবছায়া
আরসি-০৬