নিজস্ব প্রতিবেদক
                        সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২০
                        
                        ০৯:০৩ অপরাহ্ন
                        	
                        আপডেট : সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২০
                        
                        ০৫:২২ পূর্বাহ্ন
                             	
                        
            
    সিলেটের ঐতিহ্যবাহী এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় করা মামলার প্রধান আসামি 'ছাত্রলীগ নেতা' সাইফুর রহমানকে আজ রবিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশের একটি সূত্র বলছে, ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ছাতক থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আজ ভোরে ছাতক থানা পুলিশ খবর পায় ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামী সাইফুর নোয়ারাই হয়ে ছাতক খেয়াঘাটে আসছে। এ সময় সহকারী পুলিশ সুপার ছাতক সার্কেল মো. বিল্লাল হোসেনের নেতৃত্বে ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান, উপপরিদর্শক (এসআই) হাবিবুর রহমান ও উপপরিদর্শক মোহাম্মদ আলী ছাতক খেয়াঘাটে অবস্থান নেন। পরবর্তীতে সাইফুর রহমানকে নোয়ারাই খেয়াঘাট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়৷
এ বিষয়ে সহকারী পুলিশ সুপার ছাতক সার্কেল মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, 'ছবিতে সাইফুরের দাঁড়ি ছিল। তিনি দাঁড়ি কেটে মুখে মাস্ক লাগিয়ে খেয়াঘাটে যান। পরনে ছিল টি-শার্ট ও প্যান্ট। ভোরে সীমান্ত এলাকায় পৌঁছান। হয়তো সীমান্ত এলাকায় গিয়ে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করার কথা ছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘গ্রেপ্তারের পর তাকে থানায় নিয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তার পরিচয় নিশ্চিত হলে আমরা সিলেট মহানগর পুলিশকে বিষয়টি অবগত করি। পরে দুপুর সাড়ে ১২টায় শাহপরান থানার ওসির হাতে আসামিকে হস্তান্তর করা হয়।' সাইফুরকে পালাতে কেউ সহায়তা করেছেন কিনা, তার খোঁজ করতে ছাতক ও দোয়ারাবাজারে তাঁর আত্মীয়দের সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
সুনামগঞ্জের ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ভোর ছয়টার দিকে সাইফুরকে আটক করে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়। এরপর পরিচয় নিশ্চিত হয়ে সাইফুরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে ছাতক থানা থেকে সিলেট মহানগর পুলিশের শাহপরান থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে এ ঘটনায় ৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৩ জনকে আসামি করে গতকাল শনিবার সকালে শাহপরান থানায় মামলা করেছিলেন গণধর্ষণের শিকার তরুণীর স্বামী।
মামলার আসামিরা হলেন, এম সাইফুর রহমান, মাহবুবুর রহমান রনি, তারেক, অর্জুন লঙ্কর, রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান। এদের মধ্যে চারজন ওই কলেজের শিক্ষার্থী। এছাড়া আরও তিনজনকে অজ্ঞাত আসামি হিসেবে দেখানো হয়েছে। এরা সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত বলে জানা গেছে।
এদিকে, অভিযুক্তদের ধরতে গত শুক্রবার রাত থেকেই অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। শনিবার ভোর চারটার দিকে পুলিশ অভিযুক্ত সাইফুরের কক্ষ থেকে দেশি-বিদেশি অস্ত্র উদ্ধার করেছে। পুলিশ জানায়, অভিযানকালে একটি বিদেশি পিস্তল, চারটি রামদা, দুটি লোহার পাইপ উদ্ধার করা হয়। সাইফুর রহমানকে প্রধান আসামী করে অস্ত্র আইনে একটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাত এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে এক তরুণীকে গণধর্ষণ করে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী।
স্থানীয়রা জানান, গত শুক্রবারধর্ষিত তরুণী তার স্বামীকে নিয়ে সিলেটের এমসি কলেজের ঘুরতে আসেন। এসময় ছাত্রলীগের পাঁচ-ছয়জন নেতাকর্মী তাদের জিম্মি করে ছাত্রাবাসে নিয়ে আসে। সেখানে দুজনকে মারধরের পর স্বামীকে আটকে রেখে তরুণীকে ধর্ষণ করে তারা।
এনএইচ/এএফ-০৬