পেঁয়াজ: কেজিতে ১৫ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন খুচরা বিক্রেতারা

নিজস্ব প্রতিবেদক


সেপ্টেম্বর ২০, ২০২০
০৬:০৩ পূর্বাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ২০, ২০২০
০৬:০৩ পূর্বাহ্ন



পেঁয়াজ: কেজিতে ১৫ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন খুচরা বিক্রেতারা
পাইকারিতে কমলেও খুচরায় চড়া

ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের পরই সিলেটের বাজারে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাওয়া পেঁয়াজের দাম পাইকারিতে কমতে শুরু করেছে। তবে এর কোনো প্রভাব নেই খুচরা বাজারে। নানান অজুহাতে খুচরা ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি পেঁয়াজে হাতিয়ে নিচ্ছেন ১০ থেকে ১৫ টাকা।

পাইকারী ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে নতুন করে পেঁয়াজ আসায় কেজিপ্রতি পাঁচ টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে। আর খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বেশি দামে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে। তাই খুচরায়ও দাম বেশি। কম দামে পেঁয়াজ পেলে খুচরায়ও দাম কমবে।’

সিলেট নগরের কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ৭০ টাকা থেকে ৭৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ভারতীয় পেঁয়াজ। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৪৫ টাকা থেকে ৫০ টাকায়। এমনকি পাড়া মহল্লায় ও বিভিন্ন উপজেলায় ১০০ টাকা কেজিতেও পেঁয়াজ বিক্রির খবর পাওয়া গেছে। যদিও নগরের কালীঘাটে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৫৫ টাকা থেকে ৫৮ টাকায়।

ব্যবসায়ীরা জানান, গত সোমবার বিকেলে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পর সিলেটের বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে। পর্যাপ্ত পেঁয়াজ মজুদ থাকা সত্তে¡ও একদিনের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ ৩৮ টাকা থেকে বেড়ে ৫৮ টাকায় পৌঁছে। খুচরা ব্যবসায়ীরা সেই পেঁয়াজ বিক্রি করেন ৭০ টাকা থেকে ৭৫ টাকায়।  

নগরের আম্বরখানা এলাকায় বাসিন্দা তারেক মিয়া বলেন, ‘বাজারে সব সময় কোনো না কোনো পণ্যের দাম হঠাৎ করেই বাড়ে। সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই বাজারে।’ রিকাবীবাজার এলাকার আল-মদিনা স্টোরের স্বত্বাধিকারী রোকন মিয়া বলেন, ‘ভারত থেকে আমদানি বন্ধ হওয়ায় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। আবার ক্রেতারা এক সঙ্গে প্রয়োজনের বেশি পেঁয়াজ কেনাও দাম বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। চাহিদা বাড়লে দাম বাড়বে এটাই স্বাভাবিক।’

সিলেটের কালীঘাটের মেসার্স চুনু মিয়া এন্ড সন্স এর স্বত্বাধিকারী চুনু মিয়া বলেন, আমরা প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৫৫ থেকে ৫৮ টাকায় বিক্রি করছি। খুচরা ব্যবসায়ীরা তাদের ইচ্ছমত দামে বিক্রি করছে।

এদিকে, সিলেটের বাজারে আলুও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজিতে। কিছুটা কমে আদা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২০০ টাকায়। কমেছে কাঁচামরিচের দাম। প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০০ টাকা। 

সিলেট নগরের কয়েকটি সবজি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে প্রতি কেজি গাজর ৭০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ টাকা, মুলা ৭০ টাকা, ঝিঙা ও চিচিঙা ৫০ টাকা, করোলা ৬০ টাকা, টমেটো ১০০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, পেঁপে ৩৫ টাকা ও ঢেঁড়স ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি আগাম জাতের ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজিতে। এছাড়া জালি লাউ আকারভেদে ৩০ টাকা থেকে ৫০ টাকা, লেবু প্রতি হালি ২০ টাকা থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি ও আমদানি করা রসুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, হলুদ ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা, জিরা মানভেদে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, দারুচিনি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, এলাচ ২ হাজার ৭০০ টাকা থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা, তেজপাতা ১০০ থেকে ১৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

চিনি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, কোম্পানিভেদে সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১০০ টাকা থেকে ১১০ টাকা, বড় দানার মসুর ডাল ৭৫ টাকা থেকে ৮০ টাকা, ছোলা ৭৫ টাকা, খোলা আটা ৩০ টাকা ও ময়দা ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজিতে। প্রতি হালি মুরগির ডিম ৪০ টাকা ও হাঁসের ডিম ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

বাজারে রুই মাছ কেজিতে ২০০ থেকে ২৮০ টাকা, মৃগেল ১৮০ থেকে ২৫০ টাকা, পাঙাস ১২০ থেকে ১৬০ টাকা, তেলাপিয়া ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, কাতলা ২০০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। 

এখনও চড়া চালের দাম। প্রতি কেজি কাটারি আতপ ৫০ টাকা, লোকাল মালা ৪৮ টাকা, পাইজম আতপ ৫০ টাকা, কালীজিরা ৭৫ টাকা, চিনিগুঁড়া ১০০ টাকা, জিরা সেদ্ধ ৬০ টাকা, মিনিকেট সেদ্ধ ৫২ টাকা, মালা সেদ্ধ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

বিএ-০১