আশরাফ আহমেদ, দিরাই
আগস্ট ২৬, ২০২০
০১:৪৭ পূর্বাহ্ন
আপডেট : আগস্ট ২৬, ২০২০
০১:৪৭ পূর্বাহ্ন
ভিজিএফ এর চাল আত্মসাৎ করার সময় হাতেনাতে ধরা পড়া, ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়া, করোনাকালে আসা মাস্ক, পিপিইসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী নামমাত্র বিতরণ করে বাকিগুলো বিক্রি করে দেওয়াসহ ব্যাপক দুর্নীতি করে এখনও বহাল তবিয়তে থাকা এক চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস। ২০১৬ সালের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ৮ নম্বর তাড়ল ইউনিয়ন থেকে নির্বাচিত হন তিনি। বিএনপি সমর্থিত আব্দুল কুদ্দুস পরিষদের চেয়ারে বসার পর থেকেই দুর্নীতির মিশন শুরু করেন।
কালনীপাড়ের জনগণের সরলতার সুযোগে ইউনিয়ন পরিষদটিতে নিজের রাজত্ব কায়েম করে দুর্নীতির মচ্ছব চালিয়ে যাচ্ছেন চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস- দীর্ঘদিন থেকে পেয়ে আসা এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে মাঠে নামে সিলেট মিরর। প্রতিবেদকের দীর্ঘ অনুসন্ধানে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।
জানা যায়, ২০১৭ সালে ইউনিয়নের হতদরিদ্র মানুষের জন্য ভিজিএফ এর ৬ টন চাল আসে। এগুলো ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও অসৎ উদ্দেশে নোয়াগাঁও বিদ্যালয়ে নিয়ে যান চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস। পরে সেখান থেকে কিছু চাল বিতরণ করে বাকিগুলো আত্মসাৎ করার পাঁয়তারা করলে স্থানীয় লোকজন ও ইউপি সদস্যরা তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। পরে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হলে তদন্ত করে এর সত্যতা প্রমাণিত হয়। পরবর্তীতে আপসের মাধ্যমে চাল চুরির বিষয়টি নাটকীয়ভাবে নিষ্পত্তি করা হয়।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধের লক্ষ্যে গত কিছুদিন আগে জনপ্রতিনিধি ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য পিপিই, মাস্ক, গ্লাভস এবং ওয়ার্ড কমিটির জন্য, সাবান, হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী ইএলজি প্রকল্প থেকে এলে সেগুলো নামমাত্র বিতরণ করে বাকিগুলো আব্দুল কুদ্দুস বিক্রি করে দিয়েছেন বলেও তথ্য পাওয়া গেছে।
তাড়ল ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সদস্য রানু দাস বলেন, 'আমাদের নিরাপত্তার জন্য ইউনিয়ন পরিষদে স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী এসেছে কেবল শুনেই আসছি। এখনও চোখে দেখা হয়নি।'
ইউনিয়ন থেকে আদায়কৃত খাজনা ও ট্রেড লাইসেন্স থেকে প্রাপ্ত টাকার হিসেবেও গড়মিল পাওয়া গেছে। ইউপি সদস্যরা বলছেন, গত ৪ বছরে ইউনিয়ন পরিষদের ট্রেড লাইসেন্স ও খাজনা থেকে প্রায় ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা এসেছে। এই টাকা ব্যাংকে জমা রাখার কথা থাকলেও চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস সেটি না করে পুরো টাকা আত্মসাৎ করেছেন।'
সিলেট মিরর থেকে টাকার বিষয়ে জানতে চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে এর কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। এছাড়াও উত্তরাধিকার সনদপত্র, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, নাগরিকত্ব সনদসহ সরকার থেকে আসা সামাজিক নিরাপত্তা বিষয়ক বিভিন্ন কাজে চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস জনগণের কাছ থেকে অতিরিক্ত উৎকোচ গ্রহণ করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
ইউনিয়নের ভাঙ্গাডহর গ্রামের রহমান মিয়া নামের একজন বলেন, 'আমার বয়স ৭০। বয়স্ক ভাতার জন্য চেয়ারম্যান সাহেবের কাছে গেলে তিনি প্রথমে বলেন, আপনি আমাকে ভোট দেন নাই। এখন আসছেন ভাতা নিতে। যান, এসব হবে না। পরবর্তীতে অনেক মিনতি করলে বলেন, আচ্ছা করা যাবে তবে টাকা খরচ করতে হবে। পরে তিনি আমার কাছ থেকে ৫০০ টাকা নেন।'
এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদে না আসা, জনগণের কাছ থেকে বিভিন্ন স্বাক্ষর ও রশিদ দেওয়ার কথা বলে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা নিয়েও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ইউনিয়নের ধল গ্রামের ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান বলেন, 'বিভিন্ন কাজে ইউনিয়ন পরিষদে গেলে চেয়ারম্যান সাহেবকে পাওয়া যায় না। তাছাড়া ফোন দিলেও বিরক্ত হন। এমন অবস্থায় আমাদের খুবই বিড়ম্বনা পোহাতে হচ্ছে।'
এছাড়াও এলজিএসপি প্রকল্পের সিগনেটরি পরিবর্তন না করে একই ব্যক্তি দিয়ে কাজ চালিয়ে যাওয়া, ইউপি সদস্যকে টাকার বিনিময়ে কাজ দেওয়া, সঙ্গে প্রতিবাদ করতে গেলে অন্য সদস্যদের সঙ্গে অসদাচরণ করারও অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। এসব নিয়ে ইউপি সদস্যরা অনাস্থা প্রকাশ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় কমিশনারসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেন। সুনির্দিষ্ট অভিযোগগুলোর সত্যতা পাওয়া গেলেও অদৃশ্য কারণে তার কোনো বিচার হয়নি। মাঝে মাঝে সামাজিকতার দোহাই দিয়ে নামকাওয়াস্তে সতর্ক করা ও 'মীমাংসা' করা ছাড়া কিছুই হয়নি। অপরাধ করে পার পাওয়ার কারণে আব্দুল কুদ্দুস দিন দিন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।
এছাড়াও চেয়ারম্যানের দুর্নীতিতে অতিষ্ঠ হয়ে এলাকার সাধারণ জনগণও তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ২০১৯ সালে ইউনিয়নের নোয়াগাঁও সিএমবি রোডের উন্নয়ন কাজের জন্য টিআর প্রকল্পের অধীনে ১,৫৪,০০০/ হাজার টাকা বরাদ্দ আসে। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি সম্বলিত রাস্তার কাজটি নামমাত্র করে সব টাকা আত্মসাৎ করেন আব্দুল কুদ্দুস। এতে ক্ষীপ্ত হয়ে গ্রামের লোকজন মিলে বিষয়টি তদন্ত করে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং পরবর্তীতে জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এসব বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে সবগুলো অভিযোগ ভিত্তিহীন উল্লেখ করে চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস বলেন, 'এসবের কিছুই হয়নি।'
সিলেট মিররের অনুসন্ধানে অধিকাংশ অভিযোগগুলোর সত্যতা পাওয়া গেছে, এ বিষয়ে কী বলবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোনো ধরনের দুর্নীতি করেন না জানিয়ে বলেন, 'কিছু লোক অসৎ উদ্দেশে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে।'
এদিকে ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য লাল মিয়া বলেন, 'ইউনিয়নের বিভিন্ন সভায় তিনি যে বিষয়গুলো তুলে ধরেন, সেটার বিপক্ষে কারও মতামত তিনি কখনও গ্রহণ করেন না। নিজের যা ইচ্ছে তা করাটা তার অভ্যাস হয়ে গেছে। ইউনিয়ন পরিষদের সভায় কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত হলে পরবর্তীতে বাসায় গিয়ে তিনি সেগুলো পরিবর্তন করে নিজের মতো চালিয়ে দেন। ইউপি সদস্যরা কোনো বিষয়ে জবাবদিহিতা বা কোনো কিছুর হিসাব জানতে চাইলে যা ইচ্ছা তা বলে খুবই বাজে ভাষায় অপমান করেন। উত্তেজিত হয়ে বলেন- বেশি বোঝার চেষ্টা করবেন না, পরিণতি খারাপ হবে।'
চেয়ারম্যানের স্বৈরাচারী মনোভাব আর জবাবদিহিতাহীন কাজে ইউনিয়ন পরিষদটি দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে এই ইউপি সদস্য বলেন, 'এর থেকে কবে রেহাই পাবো জানি না।'
ইউপি সদস্যদের অভিযোগ কতটা সত্য তা খতিয়ে দেখতে তাড়ল ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মিটু রঞ্জন দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি সিলেট মিররকে বলেন, 'কিছু না হলে শুধু শুধু তো আর কেউ অভিযোগ করে না ভাই। পরিষদে মাঝে-মধ্যে ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যান সাহেবের মাঝে কিছুটা বাকবিতণ্ডা হয়। মতের পার্থক্য ঘটলে আমার সঙ্গেও সমস্যা হয়। বড় বিপদে আছি ভাই।'
আরও অভিযোগ রয়েছে, অতিদরিদ্রদের জন্য আসা কর্মসংস্থান বা জব কার্ড হতদরিদ্র জনগণের মধ্যে সুসমভাবে বণ্টন না করে অধিকাংশই তার আত্মীয় বা পক্ষের লোকজনের মধ্যে দিয়ে থাকেন চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস। ফলে অসহায় মানুষ তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত কিছুদিন আগে করোনায় অসহায় হওয়া মানুষের জন্য উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নের ন্যায় তাড়ল ইউনিয়নেও ৯০০ পরিবারের মাঝে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হবে বলে একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়। কিন্তু চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস ৭০০ মানুষকে ত্রাণ দিয়ে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমের সমাপ্তি ঘোষণা করেন। পরে চেয়ারম্যানের এই অসৎ উদ্দেশের বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা লেখালেখি শুরু করলে ত্রাণ চুরির বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস বলেন, 'বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে পরবর্তীতে বিতরণ করার জন্য মূলত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করেই ত্রাণগুলো রাখা হয়েছিল।'
তবে সিলেট মিররের অনুসন্ধানে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের প্রাপ্য ত্রাণ পরে জনগণের মধ্যে বিতরণ না করে বন্যা বা অন্য কোনো খাতে ব্যবহৃত হওয়ার সত্যতা পাওয়া যায়নি। এর সপ্তাহখানেক পরে চাপের মুখে পড়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ দিরাই খাদ্য গুদামে কিছু মানুষকে এনে দায়সারাভাবে চাল বিতরণ করেন আব্দুল কুদ্দুস। অথচ ইউনিয়ন পরিষদের ত্রাণ উপজেলা সদরে এনে বিতরণ করার কোনো এখতিয়ার নেই। এর মধ্যে অনেককে ত্রাণ দেওয়া হবে বলে নিয়ে আসা হলেও খালি হাতেই ফিরিয়ে দেন চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস।
ইউনিয়নের কাদিরপুর গ্রামের আমির হোসেন বলেন, 'তালিকায় নাম এলে প্রথমে চাল আনার জন্য যাই। পরে বলা হয় আর কাউকে দেওয়া হবে না। ৭০০ মানুষকে দিয়ে ত্রাণ শেষ হয়ে গেছে। সপ্তাহখানেক পর আবার বলেন, ত্রাণ আছে, দেওয়া হবে। পরে ইউনিয়নে না নিয়ে আমদেরকে উপজেলা খাদ্য গুদামে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রায় ১০ কিলোমিটারে দূর থেকে নৌকা দিয়ে খাদ্য গুদামে আসি। পরে কিছু মানুষকে চাল দিয়ে বলা হয় ত্রাণ শেষ। কষ্ট করে এসেও অবশেষে খালি হাতেই ফিরতে হলো।'
এর আগে ২০১৭ সালের ৫ মার্চ আব্দুল কুদ্দুসের স্বেচ্ছাচারিতা, স্বজনপ্রীতি, টাকা আত্মসাৎ, অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ইউনিয়নের ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বাররা অনাস্থা প্রকাশ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তীতে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ইউপি সদস্যদের নিয়ে বিষয়টি সমঝোতার মাধ্যমে মীমাংসা করে দেন।
এসব বিষয়ে আব্দুল কুদ্দুস দুর্নীতিবাজ হিসেবে প্রমাণিত হলে ভবিষ্যতে এ রকম কাজ আর করবেন না বলে উপস্থিত সকলের সামনে অঙ্গিকারনামানামা দেন। তবে চেয়ারম্যান পরবর্তীতে আবারও দুর্নীতি চালিয়ে গেলে ওয়ার্ডের সদস্যরা মিলিত হয়ে ২০১৭ সালের ১০ আগস্ট দুর্নীতি দমন কমিশন বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন। কিন্তু অদৃশ্য কারণে এ ব্যাপারে দুদকের কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, স্থানীয় সরকার বিভাগ, জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার বরাবরে অভিযোগ দেওয়া হলে ২০১৭ সাল থেকে এ যাবৎ অনেকবার তার বিরুদ্ধে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন সময় অভিযোগ প্রমাণিত হলেও অদৃশ্য কারণে বার বার পার পেয়ে যান চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস। গতবছর ইউনিয়নের ৮ জন সদস্য তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও অসদাচরণের অভিযোগ এনে বিভাগীয় কমিশনার বরাবরে পুনরায় অনাস্থা প্রকাশ করে লিখিত অভিযোগ দিলে চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুসের বিরুদ্ধে আবারও শুনানি গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে চলতি বছরের ২৭ জুলাই ইউনিয়ন পরিষদে তার বিরুদ্ধে শুনানির দিন ধার্য করা হয়। কিন্তু শুনানির দুইদিন আগে তারিখ পিছিয়ে ১৭ আগস্ট শুনানির নতুন তারিখ দেয় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়। পরে অদৃশ্য কারণে ১৭ আগস্টের তারিখটিও বাতিল করা হয়। শুনানির নতুন তারিখ এখনও জানানো হয়নি।
অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেলেও কী কারণে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শফি উল্লার সঙ্গে যোগাযোগ করলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে প্রথমে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে লাইন কেটে দেন। পরে আবারও যোগাযোগ করলে বলেন, 'আচ্ছা বিষয়টি দেখব। কথা বোঝা যাচ্ছে না। নেটওয়ার্ক সমস্যা করছে।' এসব বলে লাইন কেটে দেন তিনি। পরে মোবাইলে ক্ষুদেবার্তা দিলেও ইউএনও শফি উল্লার কাছ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
নানা অভিযোগ প্রমাণিত হলেও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক আব্দুল আহাদ সিলেট মিররকে বলেন, 'আব্দুল কুদ্দুস নামের কোনো চেয়ারম্যান দুর্নীতি করে চলেছেন বলে আমার জানা নেই। আপনাদের অনুসন্ধানের বিষয়গুলো সত্যি হলে এবং সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
চেয়ারম্যানের এত বেপরোয়া হওয়ার ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দায়ী কি না জানতে চাইলে আব্দুল আহাদ বলেন, 'জননেত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন। সুতরাং দায়ী যেই হোক তদন্তের মাধ্যমে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
এএ/আরআর-০৫