ফাজিলচিস্তে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আ.লীগ নেতার গুলি

নিজস্ব প্রতিবেদক


আগস্ট ০৮, ২০২০
০৬:৫৫ পূর্বাহ্ন


আপডেট : আগস্ট ০৮, ২০২০
০৬:৫৫ পূর্বাহ্ন



ফাজিলচিস্তে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আ.লীগ নেতার গুলি

পূর্ব বিরোধের জের ধরে সিলেট নগরের ফাজিলচিস্ত এলাকায় স্থানীয় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও গুলি ছোঁড়ার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন দুইজন। সংঘর্ষে জড়িত দুই পক্ষের লোকজনই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। শুক্রবার (৭ আগস্ট) বেলা আড়াইটায় এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানান, ফাজিলচিস্ত এলাকায় আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের বাসার পাশে এক কলোনীতে ক্যারাম খেলাকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় সায়েক খান নামে একজন গুলি ছোঁড়ে।

৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আফতাব হোসেন খান বলেন, ওই জায়গাতে অনেকদিন ধরে অসামাজিক কাজ চলছিল। স্থানীয় যুবকেরা তাদের বাধা দিয়েছেন। আমার ওয়ার্ডের সায়েক খান (৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক) অসামাজিক কাজের পক্ষ হয়ে সেখানে গিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করেছে। 

তিনি বলেন, আমি শুনেছি সায়েক খান আমাদের নেতা মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের ছেলে সাবিয়ানকে লক্ষ করে গুলি ছুড়েছেন।

এ বিষয়ে ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সায়েক খান গণমাধ্যমকে বলেন, আমার এমপ্লিই পুতুল মিয়া ওই কলোনীর কেয়ারটেকার। কলোনীর মালিক গিয়াস উদ্দিন আমেরিকা থাকেন। তার এক আত্মীয় বিয়ানিবাজার থেকে এসে ভাড়া নিয়ে যায়। কয়েকমাস আগে থেকে কিছু যুবক কলোনীর ভেতরে পলিথিনের শেড তৈরি করে ক্যারাম, তাস ও জুয়া খেলা শুরু করে। ঈদের আগে কলোনীর মালিকের লোক এসে দেখে এরা এখানে জুয়া খেলে। তখন তিনি এদের সরিয়ে দিতে বলেন।

তিনি আরও বলেন, শুক্রবার (৭ আগস্ট) আড়াইটার দিকে কিছু ছেলে গিয়ে কেরারটেকার পুতুলকে বের করে দিয়ে তার ঘরে তালা দিয়ে দেয়। পরে সাবিয়ান (মিসবাহ সিরাজের ছেলে) কেয়ারটেকারকে সাদা কাগজে সাক্ষর দিতে বলে। তখন কেয়ারটেকার রাজী হয়নি। তখন কেয়াটেকারের স্ত্রী আমার বাসায় এসে এই ঘটনা আমাকে জানায়।

সায়েক খান বলেন, আমি বিস্তারিত শুনে তখন আমার ভাগ্না, ভাতিজাসহ কয়েকজনকে নিয়ে সেখানে যাই। মিসবাহ সিরাজের বাসার সামনে গিয়ে কি হয়েছে জানতে চাই। তখন স্থানীয় ২৫-৩০ জন জড়ো হয় ও মিসবাহ সিরাজের বাসা থেকে দুইজন বের হয়। তারা আমাদের উপর অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। মিসবাহ সিরাজের মেয়ে তখন এসে আমাদের গালাগালি করে, উনার স্ত্রীও ছিলো। মিসবাজ সিরাজের শালা আরিফ আহমদ রিফা (সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক কোষাধ্যক্ষ) ব্যারিকেট দিয়েছিলেন, তার গাড়ি আমার গাড়ির সামনে রেখেছিল। তখনই আমার গাড়ি ভাঙচুর হয়। এক পর্যায়ে আমার দিকে তেড়ে এসে। আমি তখন নিরাপত্তার স্বার্থে আমার গাড়ি থেকে ফাঁকা গুলি ছুড়ি। এই ঘটনায় আমার ভাগ্না ও ভাতিজা গুরুতর আহত হয়েছে। কেয়ারটেকার পুতুল আমাকে জানিয়েছে, জায়গাটি দখল করাই তাদের মুল উদ্দেশ্য ছিল।

কলোনীতে অসামাজিক কাজ চলছিল বলে কাউন্সিলর আফতাবের করা অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা সেই ধরনের লোক নই। আমার সঙ্গে আফতাবের যায় না। এটা জায়গা দখলের মতলব। আমি একজন শুটার। আমি কাউকে উদ্দেশ্য করে গুলি করলে মিস হতো না। লাশ কয়েকটা পড়তো। 

সায়েক খান অভিযোগ করে বলেন, কাউন্সিলর আফতাব মিসবাহ সিরাজের বদৌলতে কাউন্সিলর হয়েছে। কাউন্সিলর আফতাব জায়গা দখল, বাড়ি দখল, চাঁদাবাজি করছে। হামলার ঘটনায় মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, তার ছেলে, মেয়ে ও স্ত্রীকে আমি দায়ী করছি। এই ঘটনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে জানিয়েছেন বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে শুক্রবার রাতে আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।  

কোতোয়ালী থানার ওসি (তদন্ত) সৌমেন মিত্র সিলেট মিররকে বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফাজিলচিস্ত এলাকায় সংঘর্ষ, গুলি হয়েছে। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।

শুক্রবার রাত ৮ টা পর্যন্ত এই ঘটনায় কোনও মামলা হয়নি বলে জানান তিনি।

এনসি/বিএ-০৩