সিলেট মিরর ডেস্ক
মে ১১, ২০২০
০৫:১৬ পূর্বাহ্ন
আপডেট : মে ১১, ২০২০
০৫:১৬ পূর্বাহ্ন
করোনাভাইরাসের কারণে সারা দেশের ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লাখ দরিদ্র পরিবারকে শেষ পর্যন্ত আড়াই হাজার টাকা করে নগদ সহায়তা দিচ্ছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ১৪ মে বৃহস্পতিবার এ টাকা দেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করার কথা। শুরু হওয়ার পর চলবে ঈদের আগ পর্যন্ত। এতে সরকারের এক হাজার ২৫০ কোটি টাকা খরচ হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান গতকাল শনিবার গণমাধ্যমকে বলেন, 'করোনাভাইরাসের কারণে যেসব পরিবার বিপদে পড়েছে, তাদের মধ্য থেকে ৫০ লাখ পরিবারের একটি তালিকা করা হয়েছে। সেসব পরিবারকে আড়াই হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। ঈদের আগে টাকাটা তাদের কাজে লাগবে।' গ্রাম-শহর নির্বিশেষে এ টাকা দেওয়া হবে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
জানা গেছে, উদ্যোগটির সঙ্গে জড়িত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। আর পরিবার চিহ্নিত করা হয়েছে স্থানীয় সরকার অর্থাৎ জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন এবং ইউনিয়ন পরিষদকে নিয়ে। গত মাসে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দেওয়ার পর পরিবার প্রতি এক হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছিল। পরে ভাবা হয় দুই হাজার টাকা করে দেওয়ার। কিন্তু শেষের দিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় আড়াই হাজার টাকা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কাল সোমবার (১১ মে) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ এ টাকা ছাড় করবে।
তালিকায় রিকশাচালক, ভ্যানচালক, দিনমজুর, নির্মাণশ্রমিক, কৃষিশ্রমিক, দোকানের কর্মচারী, ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত বিভিন্ন ব্যবসায় কর্মরত শ্রমিক, পোলট্রি খামারের শ্রমিক, বাস-ট্রাকের পরিবহন শ্রমিক ও হকারসহ নানা পেশার মানুষকে তালিকার মধ্যে রাখা হয়েছে বলে জানান দুর্যোগসচিব মো. শাহ্ কামাল। সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সহায়তায় দরিদ্র জনগোষ্ঠী বর্তমানে যেসব সহায়তা পাচ্ছে, এ তালিকায় তাদের অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি বলে জানা গেছে। তালিকার কাজ শেষ করা হয়েছে গত ৭ মে। অবশ্য এখনও যাচাইয়ের কাজ চলছে।
যোগাযোগ করলে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আহমদ কায়কাউস গতকাল শনিবার বলেন, চলতি সপ্তাহের শেষ দিকে এ কার্যক্রম উদ্বোধন হতে পারে। এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সবাইকে জানানো হবে।
জানা গেছে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সহায়তায় ইতিমধ্যে টাঙ্গাইল জেলায় একটা মডেল দাঁড় করানো হয়েছে। সেই মডেল অনুসরণ করেই করা হয়েছে তালিকা। কত পরিবারকে নগদ টাকা দেওয়া হবে-এ জন্য জেলাওয়ারি কোটাও বেধে দেওয়া হয়। তবে সিটি করপোরেশনের তালিকা করা হয়েছে বিভাগীয় কমিশনারদের তত্ত্বাবধানে।
বিশ্বব্যাংকের হিসাবে দৈনিক ২ ডলারের নিচে আয় করেন-দেশে এমন লোক আছেন ১৫ শতাংশের মতো, সংখ্যায় যা আড়াই কোটির কাছাকাছি। সরকার প্রতি পরিবারের সদস্য ৪ জন ধরে দিয়ে এখানে দুই কোটি মানুষকে বিবেচনায় রেখেছে।
পৌঁছানোর খরচ ৭৫ কোটি টাকা: সূত্রগুলো জানায়, পরিবারগুলোকে টাকা দেওয়া হবে মূলত মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) মাধ্যমে। এর মধ্যে রয়েছে বিকাশ, রকেট, নগদ এবং শিউরক্যাশ। অর্থাৎ নগদ সহায়তা হলেও কাউকে নগদে টাকা দেওয়া হবে না। এ ক্ষেত্রে এমএফএসগুলো বড় আকারের ভর্তুকি দিচ্ছে সরকার। টাকা পৌঁছানোর জন্য এমএফএসগুলো পাবে প্রতি হাজারে মাত্র ৬ টাকা। হাজারে ৬ টাকা হিসাবেই পৌঁছানোর মোট খরচ দাঁড়ায় ৭৫ কোটি টাকা। এ টাকা সরকার বহন করবে। পরিবারগুলোর কোনো টাকা দিতে হবে না। তারা পুরো আড়াই হাজার টাকাই পাবে। মোট ৫০ লাখ পরিবারের কাছে টাকা পাঠানোর কাজের মধ্যে বিকাশের ভাগে রয়েছে ১৫ লাখের দায়িত্ব। সবচেয়ে বেশি ১৭ লাখ পরিবারের কাছে টাকা পাঠাবে নগদ। বাকি ১৮ লাখ পরিবারের কাছে পৌঁছাবে রকেট ও শিউরক্যাশ।
এনপি-১৪