সিলেট মিরর ডেস্ক
আগস্ট ১৫, ২০২৫
০৩:২৭ পূর্বাহ্ন
আপডেট : আগস্ট ১৫, ২০২৫
০৩:২৯ পূর্বাহ্ন
সিলেটের প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় সাদা পাথরসহ প্রাকৃতিক সম্পদ লুটপাটের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পরিবেশ ও মানবাধিকারকর্মীরা। তারা বলেছেন, 'প্রশাসনের প্রচ্ছন্ন ছায়ায় সাদাপাথর নিঃশেষ হয়ে গেছে। শুধু পাথরখেকোরা নয়, কিছু প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তির জোট এই লুটের পেছনে আছে।’ তারা বলেন, ‘প্রশাসন শুধু ব্যর্থ নয়, বরং নতজানু। সহস্র কোটি টাকার সম্পদ লুটের ভাগবাটোয়ারায় তাদের সম্পৃক্ততা নিয়ে প্রশ্ন আছে।'
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বিকাল সাড়ে তিনটায় সুরমা নদীর ক্বিন ব্রিজ সংলগ্ন আলী আমজাদের ঘড়িঘর এলাকায় 'ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) সিলেট শাখা', 'পরিবেশ ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ ট্রাস্ট' ও 'সুরমা রিভার ওয়াটার কিপার'-এর আয়োজনে সংক্ষুব্ধ নাগরিকবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে সিলেটের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র-সাদা পাথর, বিছনাকান্দী, উৎমাছড়া, জাফলং, লোভাছড়ার পাথর লুঠপাটে জড়িত চক্রের শাস্তির দাবি করা হয়। নাগরিকবন্ধনে বক্তারা বলেন, পাথর লুটপাট কেবল পরিবেশ ধ্বংস নয়, বরং মানবিক বিপর্যয়ও ডেকে আনছে।
ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) সিলেটের আহ্বায়ক ডা. মোস্তফা শাহজামান চৌধুরী বাহারের সভাপতিত্বে এবং সুরমা রিভার ওয়াটার কিপারের সদস্য সচিব আব্দুল করিম কিমের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন ধরা’র কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব শরীফ জামিল।
শরীফ জামিল বলেন, 'উজান থেকে যে হারে পাথর নামে, সেই হারে বারকি নৌকায় আহরণ যখন বোমা মেশিন আর এক্সকাভেটরে দ্রুত শুরু হলো, তখন থেকেই আমরা বিপর্যয়ের আশঙ্কা জানিয়েছি। বিজ্ঞানভিত্তিক সমীক্ষার আগ পর্যন্ত মেশিন দিয়ে আহরণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছিল, কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি।
তিনি আরও বলেন, 'সিলেটের পাথর লুটের কাঁচা টাকা। সরকারের সদিচ্ছা ও সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া মেঘালয়কে মরনফাঁদ বানানো এই আত্মঘাতী প্রবণতা থামানো যাবে না। যারা লুটে জড়িত তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি দিতে হবে।'
আব্দুল করিম কিম বলেন, 'প্রশাসনের প্রচ্ছন্ন ছায়ায় সাদা পাথর নিঃশেষ হয়ে গেছে। শুধু পাথরখেকোরা নয়, কিছু প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তির জোট এই লুটের পেছনে আছে। প্রশাসন শুধু ব্যর্থ নয়, বরং নতজানু। সহস্র কোটি টাকার সম্পদ লুটের ভাগবাটোয়ারায় তাদের সম্পৃক্ততা নিয়ে প্রশ্ন আছে।' তিনি সিলেটের প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় সম্মিলিত প্রতিবাদ-প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে ধারণা বক্তব্য রাখেন ধরা’র আজীবন সদস্য সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ ট্রাস্ট, সিলেটের ট্রাস্টি স্থপতি জেরিনা হোসেন, সিলেট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট সরওয়ার আহমেদ চৌধুরী আবদাল, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. নাজিয়া চোধুরী,জাসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক এমরান আল আমিন, বাংলাদেশ জাসদ সিলেটের সভাপতি জাকির আহমেদ, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক স্থপতি কৌশিক সাহা, সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ এমদাদুল হক, শিল্পকলা একাডেমির সদস্য শামসুল বাসিত শেরো, সচেতন নাগরিক কমিটি সিলেটের সভাপতি এডভোকেট শিরিন আক্তার, ধরার কেন্দ্রীয় আহবায়ক পরিষদের সদস্য ফাদার যোশেফ গোমেজ, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ জেলা সংগঠক কমরেড উজ্জ্বল রায়, জালালাবাদ প্রবাসী কল্যাণ পরিষদ এর সভাপতি এডভোকেট আব্দুর রহমান চৌধুরী, সিলেট বিভাগ গণদাবি পরিষদের সভাপতি চৌধুরী আতাউর রহমান আজাদ ,গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের তানজীনা বেগম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুদীপ্ত অর্জুন, হবিগঞ্জ ধরার সদস্য সচিব তোফাজ্জল সোহেল, ক্যাটারাস গ্রুপ সিলেট এর সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন বাবলু, একসেস বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্ঠা ডা: মোঃ এনামুল হক এনাম, ধরা সিলেটের অন্যতম সদস্য প্রকৌশলী মাহমুদুর রহমান চৌধুরী, এডভোকেট অরুপ সেন বাপ্পী, রেজাউল কিবরিয়া, এডভোকেট জাকিয়া জালাল ও রুমেনা রুজি, প্রবাসী সমাজকর্মী ফারমিস আক্তার, ভাসানী ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক তাহমিদ আহমেদ, চারণ সংস্কৃতিক কেন্দ্র সিলেটের নাজিকুল ইসলাম রানা প্রমুখ।
আয়োজনে খবরের কাগজ বন্ধুজন সিলেট শাখা, উন্নয়ন সংগঠন একসেস বাংলাদেশ ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকার বিষয়ক সংগঠন এবং প্রাধিকার অংশগ্রহণ করেন।
এএফ/০১