সিলেট মিরর ডেস্ক
জুন ২৫, ২০২৫
০৪:২২ অপরাহ্ন
আপডেট : জুন ২৫, ২০২৫
০৬:২২ অপরাহ্ন
আহত জুলাইযোদ্ধারা আগামী মাস থেকে ভাতা পাবেন: ফারুক-ই-আজম
চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে আহত ‘জুলাইযোদ্ধারা’ আগামী মাস থেকে মাসিক ভাতা পাবেন বলে জানালেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম।
তিনি বলেছেন, মাসিক ভাতার পাশাপাশি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ‘আহত যোদ্ধারা’ আজীবন সরকারি মেডিকেল হাসপাতালগুলোতে বিনা খরচে চিকিৎসা পাবেন।
গত সোমবার (২৩ জুন) সচিবালয়ে তিনি এ কথা জানান।
উপদেষ্টা জানান, জুলাইযোদ্ধাদের পুনর্বাসনের জন্য ইতোমধ্যে আলাদা অধিদপ্তর স্থাপন করা হয়েছে। স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ‘জুলাইযোদ্ধারা’ ক্যাটাগরি অনুযায়ী এককালীন এবং মাসিক ভাতা পাবেন। জুলাই অভ্যুত্থানের শহিদদের ‘জুলাই শহিদ’ এবং আহতদের ‘জুলাইযোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে নাম ঘোষণা করা হয়েছে। আহত জুলাইযোদ্ধারা ‘এ’, ‘বি’ এবং ‘সি’- এই তিন ক্যাটাগরিতে মাসিক ভাতা পাবেন। ক্যাটাগরি ‘এ’ মাসে ২০ হাজার টাকা, ‘বি’ ক্যাটাগরি মাসে ১৫ হাজার এবং ‘সি’ ক্যাটাগরি মাসে ১০ হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন।
তিনি জানান, গেজেট আকারে ৮৩৪ জন ‘জুলাই শহিদের’ তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। সে অনুযায়ী প্রত্যেক জুলাই শহিদ পরিবার এককালীন ৩০ লাখ টাকা পাবে। এর মধ্যে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রত্যেক পরিবারকে ১০ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে জাতীয় সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে। আর বাকি ২০ লাখ টাকা দেওয়া হবে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জাতীয় সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে। তা ছাড়া শহিদ পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে প্রতি মাসে ভাতা দেওয়া হবে। শহিদ পরিবারের সক্ষম সদস্যরা অগ্রাধিকার পাবেন সরকারি ও আধা সরকারি চাকরিতে।
তিনি বলেন, আহত জুলাইযোদ্ধাদের মধ্যে যারা চিকিৎসা নেওয়ার পরও অন্যের সহায়তা ছাড়া জীবনযাপন করতে পারছেন না, যেমন যার দুটি চোখই অন্ধ হয়ে গেছে অথবা এমন অঙ্গহানি হয়েছে যে কারণে তার পক্ষে একা চলাফেরা করা অসম্ভব, তিনি ‘এ’ ক্যাটাগরির জুলাইযোদ্ধা হিসেবে বিবেচিত হবেন। এই ক্যাটাগরিতে রয়েছেন ৪৯৩ জন। তারা এককালীন ৫ লাখ টাকাসহ মাসিক ২০ হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন। এর মধ্যে ২ লাখ টাকা তারা ইতোমধ্যে পেয়েছেন। বাকি ৩ লাখ টাকা আগামী জুলাই মাসে পাচ্ছেন। তারা বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে আজীবন চিকিৎসা সুবিধা ও উপযুক্ত মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশে দেশি-বিদেশি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা, কর্মসহায়ক প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন সুবিধা, পরিচয়পত্র পাবেন।
‘ক্যাটাগরি বি’-তে রয়েছেন ৯০৮ জন। যারা গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন, কিন্তু অন্যের সহায়তা ছাড়া মোটামুটি চলাফেরা করতে পারেন।
যেমন যাদের এক চোখ বা এক পা নষ্ট হয়ে গেছে বা এমন অঙ্গহানি হয়েছে যে, তারা একা মোটামুটি চলতে ফিরতে পারেন। অর্থাৎ চিকিৎসার পর অন্যের আংশিক সহায়তায় জীবনযাপনে সক্ষম যোদ্ধারা আছেন ‘বি’ ক্যাটাগরিতে। তারা এককালীন ৩ লাখ টাকা পাবেন। এর মধ্যে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে নগদ (ব্যাংক চেকের মাধ্যমে) ১ লাখ টাকা পেয়েছেন। আর আগামী মাসে বাকি ২ লাখ টাকা পাবেন। তা ছাড়া এই ‘বি’ ক্যাটাগরির যোদ্ধারা ১৫ হাজার টাকা করে মাসিক ভাতা পাবেন। সেই সঙ্গে প্রশিক্ষণ এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সরকারি-আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি ও পরিচয়পত্র পাবেন।
চিকিৎসার পর বর্তমানে যারা সুস্থ, তাদের ‘সি’ ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে জানান মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা। এই ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে ১০ হাজার ৬৪২ জনকে। তারা এককালীন ১ লাখ টাকা পেয়েছেন। আগামী মাস থেকে ১০ হাজার টাকা করে মাসিক ভাতা পাবেন। সেই সঙ্গে পাচ্ছেন পুনর্বাসন সুবিধা ও পরিচয়পত্র।
উপদেষ্টা বলেন, ৮৩৪ শহিদ পরিবারের মধ্যে ১৩৪ জনের পরিবারকে ওয়ারিশ জটিলতার কারণে পাওনা পরিশোধে বিলম্ব হচ্ছে। আহত যোদ্ধাদের তালিকায় যেসব ভুল আছে, তদন্ত সাপেক্ষে তাও সমাধান করা হচ্ছে।
জিসি / ০৫