নিজস্ব প্রতিবেদক
জুন ২১, ২০২৫
১০:৪২ অপরাহ্ন
আপডেট : জুন ২১, ২০২৫
১০:৪২ অপরাহ্ন
সিলেট নগরের লামাবাজার এলাকায় চা বিক্রেতা ও গেজেটভুক্ত জুলাই যোদ্ধা ইসলাম উদ্দিনকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত লামাবাজার পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) জসীম উদ্দীনকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনের সংযুক্ত (ক্লোজ) করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তে এক অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আজ শনিবার (২১ জুন) দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেটের মিডিয়া সেলের সম্পাদক ও যুগ্ম সদস্য সচিব ফখরুল হাসান জানান, সিলেটের লামাবাজার এলাকায় ফজরের নামাজের পর চায়ের দোকান খোলার কারণে লামাবাজার পুলিশ ফাড়িঁর এসআই জসিম উদ্দিনের নির্যাতনের শিকার হন গেজেটভুক্ত জুলাই যোদ্ধা ইসলাম উদ্দিন।
ভুক্তভোগী ইসলাম উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘প্রতিদিনের মতো শনিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে নগরের জিতু মিয়ার পয়েন্টে আমার চায়ের দোকান খুলে চা বিক্রি শুরু করি।
হঠাৎ পুলিশের একটি গাড়ি এসে আমার দোকানের সামনে থামে। একজন পুলিশ সদস্য এসে জিজ্ঞাসা করেন এত সকাল কেন দোকান খুলেছি। এসময় এসআই জসীম উদ্দিন এসে উপস্থিত হন। উনাকে আমি বলি, জুলাই আন্দোলনের সময় আহত হয়ে অসুস্থ থাকার কারণে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালাতে না পেরে গত এক মাস ধরে চা বিক্রি করছি।
আমি জুলাই যোদ্ধা শুনেই এসআই জসিম উদ্দিন ক্ষেপে গিয়ে বলেন—তোমরা আমাদের অনেক পুলিশকে মেরেছ, থানায় আগুন দিয়েছ এবং অস্ত্র লুট করেছ। এ কথা বলেই আমাকে এলোপাতাড়ি চড় থাপ্পর মারতে থাকেন এবং গাড়িতে তুলে থানায় নিয়ে মামলা দেওয়ার ভয় দেখান। পরে অন্য পুলিশ সদস্যদের হস্তক্ষেপে আমাকে ছেড়ে দিয়ে চলে যান।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতা ফখরুল হাসান বলেন, ‘ইসলাম উদ্দিন আন্দোলনের সময় আহত হয়ে বর্তমানে সিএনজি চালাতে না পেরে জীবিকা নির্বাহের জন্য একটি ছোট চায়ের দোকান চালান।
প্রতিদিনের মতো আজ (শনিবার) ফজরের পর দোকান খুললে এসআই জসিম এসে ‘এতো সকালে দোকান খোলা কেন?’ জানতে চেয়ে তাকে মারধর শুরু করেন। এসময় জোর করে ভ্যানে তুলতে গেলে আহত ব্যক্তি জানান, ‘আমি একজন গেজেটভুক্ত জুলাই যোদ্ধা। আন্দোলনে আহত হওয়ার পর দীর্ঘসময় বসে থাকতে পারি না, তাই এই দোকান দিয়েছি। আমাকে জেলে দিলে পরিবার না খেয়ে মরবে। জবাবে এসআই জসিম বলেন, 'তুই যোদ্ধা! তোরা তো পুলিশ মারছিস, ফাঁড়ি জ্বালাইছিস'- এই বলে কিল, ঘুষি, থাপ্পড় মারতে মারতে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করেন।
পরিস্থিতি বেগতিক দেখে সঙ্গে থাকা এক কনস্টেবলের হস্তক্ষেপে এসআই জসিম ও অন্যান্য পুলিশ সদস্য তাকে রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যান।’
তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমানে আহত ব্যক্তি সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন,সিলেট জেলা কমিটি এবং জুলাই যোদ্ধাদের সহযোদ্ধারা। অনতিবিলম্ব এসআই জসিম ও কনস্টেবলকে গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। গঠিত তদন্ত কমিটিকে আজকের মধ্যেই প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদনের সুপারশি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এএফ/০৮