প্রতিনিধি তাহিরপুর
জুন ২১, ২০২৫
০৬:২০ অপরাহ্ন
আপডেট : জুন ২১, ২০২৫
০৬:২০ অপরাহ্ন
'টাঙ্গুয়ার হাওরে পর্যটন চলতে হলে হাওরের পরিবেশ রক্ষা করেই চলতে হবে। এর পরিবেশ ধ্বংস করে পর্যটন চলতে দেওয়া যায় না। আর টাঙ্গুয়ার হাওরের পরিবেশ যদি বজায় না থাকে তাহলে পর্যটকরাও আর এখানে আসবেন না। তাই পর্যটনকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। টাঙ্গুয়ার হাওরের পর্যটনে স্থানীয় মানুষ কোনোভাবে উপকৃত হচ্ছে না। স্থানীয় মানুষকে সম্পৃক্ত করে পর্যটন গড়ে তুলতে হবে।'
আজ শনিবার (২১ জুন) দুপুরে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওর তীরবর্তী জয়পুর গ্রামে পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থা আয়োজিত 'টাঙ্গুয়ার হাওরের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে করনীয়' শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় উপস্থিত গ্রামবাসী এসব কথা বলেন।
সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা'র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক পীযূষ পুরকায়স্থ টিটুর সঞ্চালনায় সভায় টাঙ্গুয়ার হাওরের ওয়াচ টাওয়ার এর পার্শ্ববর্তী কয়েকটি গ্রামের শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
তাঁরা জানান, হাওরের পর্যটকবাহী নৌকার বাদ্যযন্ত্র ও মাইকের শব্দে বয়োবৃদ্ধ, অসুস্থ রোগী, ছাত্র-ছাত্রীসহ সকল মানুষ অতিষ্ঠ। অন্যদিকে পর্যটকরা যত্রতত্র প্লাস্টিক বোতল, গ্লাস ও কাচের বোতল ফেলার কারণে হাওরের পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
বক্তারা বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওরের মূলঅংশে ইঞ্জিন চালিত নৌকা প্রবেশ বন্ধ করতে হবে। যদি মূলঅংশে ইঞ্জিন চালিত নৌকা প্রবেশ না করে তবে শব্দদূষণ, পানিদূষণ এবং প্লাস্টিক দূষণ অনেকাংশে কমে আসবে। একই সঙ্গে হাতে চালিত নৌকায় টাঙ্গুয়ার হাওরে মূলঅংশে যদি পর্যটকরা ঘুরাঘুরি করেন তাহলে স্থানীয় মানুষেরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
বক্তৃতারা অতি দ্রুত টাঙ্গুয়ার হাওরের মূলঅংশে ইঞ্জিন চালিত নৌকা প্রবেশ বন্ধ করার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
সভাপতির বক্তব্যে পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওর একটি প্রতিবেশগত সংগঠাপন্ন এলাকা। এখানে সবার আগে পরিবেশকে গুরুত্ব দিতে হবে। টাঙ্গুয়ার হাওরের পর্যটনের কারণে স্থানীয় মানুষ কোনো সুবিধা পাচ্ছে না; কিন্তু তারা নানা ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে। হাওরের সম্পদ বিনষ্ট হচ্ছে। এভাবে পর্যটন চলতে পারে না। স্থানীয় মানুষের স্বার্থ অবশ্যই দেখতে হবে। এখানে নৌকাগুলোকে একটি নির্দিষ্ট রুটে চলাচল করতে হবে এবং ইঞ্জিনচালিত নৌকা মূল টাঙ্গুয়ার হাওরের ঢোকার আগেই থামিয়ে দিতে হবে। এটা যদি সম্ভব না হয় তাহলে এখানে পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে একসময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে পর্যটন বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা আশা করি সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করবে।
সভায় গ্রামবাসীর মধ্যে বক্তব্য রাখেন টাঙ্গুয়ার হাওর সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. নূরে আলম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক খসরুল আলম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহমদ কবির, আলী আহমদ, গ্রাম উন্নয়ন কমিটির সাবেক সভাপতি আব্দুল হালিম, আল আমিন,নূর মিয়া, পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার গ্রীন ক্লাবের সদস্য মাহফুজ আহমেদ, ইয়াসিন আলী প্রমুখ।
এএফ/০৬