যুক্তরাষ্ট্রে আগাম ভোট দিলেন ৮ কোটির বেশি মানুষ

সিলেট মিরর ডেস্ক


নভেম্বর ০৫, ২০২৪
১২:২৭ অপরাহ্ন


আপডেট : নভেম্বর ০৫, ২০২৪
১২:২৭ অপরাহ্ন



যুক্তরাষ্ট্রে আগাম ভোট দিলেন ৮ কোটির বেশি মানুষ

ভোট দেওয়ার অপেক্ষায় লাইনে ভোটাররা। ছবি- গোলাম সাদাত জুয়েল


যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আগাম ভোট দিয়েছেন ৮ কোটির বেশি মানুষ। ইউনিভার্সিটি অব ফ্লোরিডা ইলেকশন ল্যাবের তথ্য অনুযায়ী, দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এরই মধ্যে ৮ কোটি ১৩ লাখ ৭৯ হাজার ৬৮৪ জন ভোটার আগাম ভোট দিয়েছেন। এর মধ্যে ৪ কোটি ৪০ লাখের বেশি ভোটার ভোটকেন্দ্র গিয়ে ভোট দিয়েছেন এবং প্রায় ৩ কোটি ৭ লাখ ভোটার ভোট দিয়েছেন ডাকযোগে। নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত যিনি জয়ী হবেন তিনিই হবেন দেশটির ৪৭তম প্রেসিডেন্ট। খবর বিবিসির। 

বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশ যুক্তরাষ্ট্র। স্বাভাবিকভাবেই দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে পুরো বিশ্ব। আজ মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ডেমোক্র্যাটিক পার্টির কমলা হ্যারিস নাকি রিপাবলিকান পার্টির ডোনাল্ড ট্রাম্প- কে হতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট? তা নিয়ে চলছে নানান জল্পনা-কল্পনা, মেলানো হচ্ছে নানান সমীকরণ।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরুর আগে শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং কমলা হ্যারিস। জনমত জরিপগুলো এবারের নির্বাচনে ঐতিহাসিক হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস দিয়েছে।

কমলা হ্যারিসের প্রচারণা দলের সূত্র বলছে, তিনি বুঝতে পারছেন যে তুমুল লড়াই হবে কিন্তু তিনি সত্যিকার অর্থেই ‘উদ্দীপ্ত ও উদ্যমী আছেন’। তার সমর্থকরা শেষ সমাবেশে যোগ দিতে ফিলাডেলফিয়া সমবেত হয়েছিলেন।

অন্যদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প তার শেষ সমাবেশ করতে মিশিগানের গ্র্যান্ড র‍্যাপিডসের সমাবেশস্থলে গিয়েছিলেন। ট্রাম্প তার আগের দুটি নির্বাচনের শেষ সমাবেশও সেখানেই করেছিলেন। তবে সেখানে ২০১৬ সালে তিনি জিতলেও পরের নির্বাচনে জয় চলে যায় জো বাইডেনের দিকে।


পেনসিলভানিয়ার অভিবাসীরা যা বলছেন

পেনসিলভানিয়ার আলেনটাউন থেকে বিবিসির ব্রেন্ড ডেবুসম্যান জুনিয়র জানিয়েছেন, ওই এলাকার অবৈধ জনগোষ্ঠী রাজনৈতিকভাবে খুবই সক্রিয়। অনেকেই বলছেন, তারা তাদের কমিউনিটির মধ্যে যারা ভোটার তাদের ভোট দিতে উৎসাহিত করছেন। কারণ নির্বাচনটি তাদের ও তাদের ভবিষ্যতের ওপর প্রভাব ফেলবে।

মেক্সিকো বংশোদ্ভূত ৩৮ বছর বয়সী আরমান্দো জিমিনেজ ৩২ বছর ধরে সেখানে বসবাস করছেন। তিনি একটি গ্রুপের হয়ে কাজ করছেন যে গ্রুপটি ১১ হাজার ভোটার নিবন্ধনের দাবি করেছে। তিনি বলেন, নাগরিকত্বের মতো বিষয়গুলোর জন্য আমাদের মানুষের ভোট দেওয়া উচিত। আমরা চাই আমাদের স্থানীয় অফিসগুলো সবার প্রতিনিধিত্ব করুক। এখানে আমার মতো আরও অনেকেই আছেন যারা ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে এখানে বাস করছে। আমরা চলে যাচ্ছি না, এটাই আমার বাড়ি।


ট্রাম্প ও হ্যারিস যা বলছেন

মিশিগানে যাওয়ার আগে পেনসিলভানিয়ার পিটসবার্গের সমাবেশে ডোনাল্ড ট্রাম্প ভোটারদের উদ্দেশে বলেন, তারা যদি কমলা হ্যারিসকে ভোট দেয় তাহলে তাদের জন্য আগামী চার বছর হবে দুর্ভোগ, ব্যর্থতা ও বিপর্যয়ের, যা দেশ কখনোই কাটিয়ে উঠতে পারবে না। তিনি বলেন, ‘আমেরিকানদের প্রতি আমার বার্তা খুবই সাধারণ। আমরা এভাবে বাস করতে পারি না।’ তিনি কমলা হ্যারিসকে ‘একটি বিপর্যয়’ হিসেবে বর্ণনা করেন।

আপনাদের ভোট দেশের প্রতিটি সমস্যার সমাধান করতে পারে এবং গৌরবের নতুন উচ্চতার দিকে নিয়ে যেতে পারে। তিনি নির্বাচনে জর্জিয়ার ব্যালটের বিষয়ে আদালতের নির্দেশনার প্রশংসা করেছেন। সোমবার জর্জিয়ার সুপ্রিম কোর্ট তিন হাজার ভোটারের ভোটের সময় বাড়িয়েছে। কারণ দাপ্তরিক ত্রুটির জন্য তারা সময়মতো ব্যালট পাননি।

জর্জিয়া দোদুল্যমান রাজ্যগুলোর একটি। জো বাইডেন ২০২০ সালের নির্বাচনে সেখানে ১২ হাজার ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন। অন্যদিকে আলেনটাউনের সমাবেশে কমলা হ্যারিস বলেছেন, আমেরিকা নতুনভাবে এগিয়ে যাওয়ার জন্যও প্রস্তুত, যেখানে কোনো আমেরিকান একজন আরেকজনকে শত্রু হিসেবে নয়, প্রতিবেশী হিসেবে দেখবে।


আইওয়া কেন দৃষ্টি আকর্ষণ করছে

বিবিসির সংবাদদাতা মাইক ওয়েন্ডলিং লিখেছেন, শনিবার একটি জরিপের ফল তার দৃষ্টিতে এসেছে। সেলজার অ্যান্ড কো-এর ওই জরিপ অনুযায়ী, আইওয়াতে কমলা হ্যারিস তিন পয়েন্টের ব্যবধানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে আছেন। ৮০৮ জন ভোটারের ওপর জরিপটি চালানো হয়েছে। এতে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ পর্যন্ত ভুল থাকতে পারে।

তবে দুটি কারণে এই জরিপের ফল অনেকের কাছে বিস্ময়কর। প্রথমত ডোনাল্ড ট্রাম্প তার আগের দুটি নির্বাচনে এখানে সহজেই জিতেছিলেন। যে কারণে এটি সুইং স্টেটও বলা যায় না।

সেলজার অ্যান্ড কো-এর জরিপকে মোটামুটি সঠিক বলেই সবসময় মনে করা হয়। আইওয়াতে ইলেকটোরাল ভোট আছে ছয়টি। তবে ট্রাম্পের জন্য উদ্বেগের বিষয় হলো- কমলা হ্যারিস নারী ও স্বাধীন ভোটারদের মধ্যে ক্রমশ শক্তি বাড়াচ্ছেন। এটি সারাদেশেরই দৃষ্টিভঙ্গির ইঙ্গিত হতে পারে। অবশ্য ট্রাম্পের প্রচারণা দল ওই জরিপকে ভুল বলে উড়িয়ে দিয়েছে।



এএফ/০২