নিজস্ব প্রতিবেদক
আগস্ট ২৬, ২০২৪
০৮:০৮ পূর্বাহ্ন
আপডেট : আগস্ট ২৬, ২০২৪
০৮:৪১ পূর্বাহ্ন
আওয়ামী লীগ সরকার অকল্পনীয় দুর্নীতি করে অর্থনীতিকে ধ্বংস এবং বাংলাদেশকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছে দাবি করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আজকে আবার যখন বাংলাদেশ উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে তখনই সেই ভারতবর্ষ থেকে দুঃখজনকভাবে কথিত ফ্যাসিবাদের প্রতিনিধি হাসিনা পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন।’
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রবিবার (২৫ আগস্ট) প্রথমবার সিলেট সফরে আসেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সিলেটে দুই ওলির মাজার জিয়ারত শেষে বিকাল তিনটায় পাঁচ তারকা হোটেল গ্র্যান্ড সিলেটে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন।
মতবিনিময় সভায় তিনি, নতুন বাংলাদেশ গড়া নিয়ে নিজেদের ভাবনা, শিক্ষার্থীদের ভূমিকার প্রশংসা, অন্তবর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব, নির্বাচনসহ রূপরেখাসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী, উপদেষ্টা ও ইলিয়াস পত্নী তাহসিনা রুশদীর লুনা, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিফতাহ সিদ্দিকী, জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী মহানগর সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী প্রমুখ।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘বিপ্লব পরবর্তী যে অবস্থা সে অবস্থার মধ্যে এখন নতুন একটি বাংলাদেশ নির্মাণের জন্য নতুনভাবে কাজ শুরু হয়েছে এবং এটা প্রত্যেক মানুষের আকাঙ্খা, অতীতের যত জঞ্জাল সাফ করে সত্যিকার একটি গণতান্ত্রিক সমাজ, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, মানুষের অধিকার, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশ গড়ে তোলা-যেটা একাত্তর সালে আমাদের মূল চেতনা ছিল।’
কোটা বিরোধী আন্দোলন দেশকে একাত্তরের চেতনায় নিয়ে যেতে পেরেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এবার যেটা ঘটেছে সেটা আমরা একমাত্র সত্তর সালে, যুদ্ধের সময় দেখেছি। সমগ্র দেশের মানুষ এক হয়ে বিশেষ করে তরুণরা তাদের প্রাণ দিয়ে কিন্তু এতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে।’
এ আন্দোলনের সূচনা আরও অনেক আগে ঘটেছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করার আন্দোলন কিন্তু কয়েকদিনের ছিল না। এটা শুরু হয়েছিল ২০১২ সাল থেকে। ২০১২ সালে যে মুহূর্তে তারা (আওয়ামী লীগ সরকার) তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে সংবিধান থেকে বাদ দিয়ে দলীয় সরকারের অধিনে নির্বাচন নিয়ে আসল-তখন থেকেই আমরা কিন্তু এটা প্রত্যক্ষ করেছিলাম। এরপর থেকে রাজনৈতিক একটা অস্থিতিশীলতা আবার নতুন করে শুরু হলো। এখন প্রমাণিত হয়েছে নির্বাচন ব্যবস্থাকে যখনই দলীয়করণের চেষ্টা হয়েছে এরপরেই কিন্তু বাংলাদেশের নির্বাচনে দখলদারী সরকারের আবির্ভাব হয়েছে। এরপর তিন তিনটি নির্বাচনে তারা তা পক্ষে ব্যবহার করে ক্ষমতায় থেকেছে। সবচেয়ে ভয়ংকর কাজ যেটা করেছে, রাষ্ট্রের সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এর ফলে এখন আমরা দেখি পুলিশ প্রশাসন একদম পুরোপুরি ভেঙে গেছে, আদালত প্রায় ভঙ্গুর অবস্থা। মিডিয়াগুলোকে দলীয় মিডিয়ায় পরিণত করার চেষ্টা করেছে।’
ভারতে বসে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অকল্পনীয় দুর্নীতি করে অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এক কথায় বললে বাংলাদেশকে একটা ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছে। আজকে আবার যখন বাংলাদেশ উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে তখনই আবার সেই ভারতবর্ষ থেকে দুঃখজনকভাবে কথিত ফ্যাসিবাদের প্রতিনিধি হাসিনা পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। বাংলাদেশের এই যে অর্জন, নতুন করে যে আবার উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা চলছে সেটিকে ব্যাহত করার চেষ্টা করছেন। এ থেকে প্রমাণিত হয় এই দলটি-আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ার চেষ্টা কখনই করেনি। ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত জনগণের সমর্থন নিয়ে তারা ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু সেখানে তারা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। শেষে এক দলীয় শাসনব্যবস্থা জারি করে সমস্ত প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছিল। এরপর ২০০৯ সালের পর থেকে পরিকল্পিতভাবে, ধারাবাহিকভাবে জনগনের অধিকারকে হরণ করে প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়ে আবারও একদলীয় শাসনব্যবস্থা-বাকশাল চাপিয়ে দেওয়ার একটা প্রস্তুতি প্রায় সফল হতে যাচ্ছিল।’
আজকে বাংলাদেশ মুক্ত হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘মুক্ত পরিবেশে মানুষ কথা বলতে পারছে। আগে আওয়ামী লীগের সময় মানুষ একটা কথা বলার আগে চিন্তা করত-এই শব্দ বলা ঠিক হবে কী হবে না, এই শব্দের জন্য আবার ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে পড়তে হবে কিনা, নতুন আইনী ঝামেলায় পড়তে হবে কিনা, পুলিশ তুলে নিয়ে যাবে কিনা, রিমাণ্ডে পড়তে হবে কিনা- সেইখান থেকে আমরা বেরিয়ে এসেছি।‘
তিনি বলেন, ‘আমাদের সামনে একটা নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তাই আমি ছাত্রদেরকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। ফুটবল খেলায় আপনারা দেখেছেন ডিফেন্স থেকে সবাই মিলে যখন সামনের দিকে নিয়ে যায় তখন স্ট্রাইকররা গোল করে। আমাদের ছাত্ররা সেই গোল করতে সফল হয়েছেন। দেশে উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে, মানুষ নতুন করে জেগে উঠেছে। বাংলাদেশটাকে তাদের মতো করে গড়বে।’
বন্যার্তদের পাশে সাধারণ মানুষের দাঁড়ানোর বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আজকে এই যে বন্যা হয়েছে, দেখেন কত অল্প সময়ের নোটিসে সবাই ত্রাণ কাজে নেমে গেছে। ঢাকাতে ছাত্ররা, রাজনৈতিক দলগুলো, প্রতিষ্ঠানগুলো সেই ১৯৭১ সালের মতো সৌহার্দ্য, ভ্রাতৃত্ব, আস্থার মাধ্যমে কাজে নেমে গেছে। এই জাতীয়তাবোধ, জনগণকে ভালোবাসার যে মহান গৌরব তা তারা অর্জন করেছে।’
এ সুযোগ কাজে লাগাতে চান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই সুযোগ আমরা নষ্ট করতে চাই না। যে আবর্জনা তৈরি হয়েছে, যে জঞ্জালগুলো তৈরি হয়েছে-সেগুলো দূর করতে চাই। সেজন্য আজকে দেশের একজন বরেণ্য মানুষ, আন্তর্জাতিকভাবে সম্মানীত ড. মুহাম্মদ ইউনুসসহ যোগ্য মানুষদের নিয়ে অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে। তাদের কাজ মূলত এসবের একটা সংস্কার করা। যেহেতু সংস্কার প্রয়োজন, নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন এবং অন্যান্য জায়গায় সংস্কার করে অতি দ্রুত তারা অবাদ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন। যাতে জনগণের মাধ্যমে নির্বাচনে একটি সংসদ গঠন হবে-আমরা এ প্রত্যাশা করি। এ বিষয় নিয়ে আজকে আপনাদের সামনে কথা বলার সুযোগ হলো।‘
কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন ১৮ জুলাই শুক্রবার সিলেটে পুলিশের গুলি সাংবাদিক এটিএম তুরাব নিহতের বিষয়টি স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘২০১২ সাল থেকেই আমরা এ সংগ্রাম করছি। এ সংগ্রামে আমাদের ইলিয়াস আলীসহ প্রায় ৭০০ জন গুম হয়েছেন। আমাদের ২ হাজারের বেশি মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে কাস্টডিতে। এটা বিভিন্ন জায়গায় হয়েছে। মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে ১ লাখ ৪৫ হাজার। আগে গায়েবি মামলা শুনতাম, দেখিনি। এরা গায়েবি মামলা দিয়েছে। কোনো ঘটনা ঘটেই-নি এমন ক্ষেত্রে মামলা দিয়েছে।’ উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আসামি সংখ্যা বিশ্বাস করবেন কিনা, আপনাদের জানা থাকার কথা-আসামি করা হয়েছে ৬০ লাখ জনকে। তাদের সরকারের বিরোধীতা করার কারণে মামলা আসামি হয়েছে। এই একটা পরিবেশ থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে পেরেছি। সেজন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি, অশেষ মেহেরবাণী তাঁর। অত্যন্ত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি মানুষকে এসব থেকে মুক্ত করেছেন। আমরা ফেরাউন, নমরুদের কথা শুনতাম-তাদের উত্তরসূরির হাত থেকে দেশকে রক্ষা করেছেন।’
শেষ হাসিনার পরিণতি নিয়ে আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘আমার খুব কষ্ট হয়, আমি বয়স্ক মানুষ, এই মুক্তিযুদ্ধে যার নামটি ছিল সবচেয়ে আগে, অগ্রগণ্য, সেই মুজিবুর রহমান সাহেবের কন্যা যাকে তার দলের লোকেরা গণতন্ত্রের মানসকন্যা বলত, তার এই পরিণতি! জনগণ তাকে ধিক্কার দিচ্ছে। যদি হিসাব করেন এদেশের ৯৯ শতাংশ মানুষের কাছে সবচেয়ে ধিক্কৃত মানুষের নাম শেখ হাসিনা। কেন এমন হলো? তার ক্ষমতার লোভ, তার আগ্রাসী মনোভাব, দুর্নীতি এবং ভিন্নমত সহ্য করতে না পারা। তাই আজকে আমরা বলেছি, আমরা এই সরকারকে সময় দিতে চাই। অন্তবর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব অনেক বড়। দায়িত্বটাকে তাদের পালন করতে হবে। আমরা বলেছি, রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করব।’
সম্প্রতি সময়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় দাবি দাওয়া নিয়ে আন্দোলনে নামার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘একটা কথা আমরা যুক্ত করতে চাই- কিছু কিছু সংগঠন, হয়তো সরকারি কোনো সংগঠন, আপনার গ্রাম পুলিশ, হয়তো শিক্ষকদের ক্ষেত্রে-তারা হঠাৎ করেই তাদের দাবি দাওয়া নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েছেন। এতদিন তারা কোথায় ছিলেন? যেই একটা মুক্ত সরকার এসেছে, কাজ করছে। তাদের কাজের সময়টুকু না দিয়ে তারা রাস্তায় নেমে গেছেন তাদের দাবি দাওয়া নিয়ে। এটিকে আমার স্বার্থপরতা মনে হয়। অবশ্যই দাবি দাওয়া থাকবে, তা নিয়ে কথাও বলবেন। সে দাবি পূরণ করবে সরকার। কিন্তু সামনে নির্বাচন, এটা নির্বাচিত সরকার আসুক তখন তারা তাদের দাবি দাওয়া-করবেন। এটা একটা অন্তবর্তীকালীন সরকার। একে জঞ্জাল পরিস্কার করার সুযোগ দিন। এই ধরনের দাবি দাওয়াগুলো নিয়ে এখন সোচ্চার হওয়া কোনোভাবেই যুক্তিসঙ্গত নয়।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের ভিডিও দেখুন- |
ক্ষমতায় টিকে থাকতে আওয়ামী লীগ হত্যাসহ সব চেষ্টা করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পত্রিকায় আজকে দেখলাম, আপনারাই লিখেছেন মোট শিশু মৃত্যুর সংখ্যা ৮৯। এমন একটা ভয়াবহ সরকারের হাতে আমরা পড়েছিলাম-যারা শিশু, কিশোর, তরুণ, নারী কাউকে বাছবিচার করেনি। যাকে সামনে পেয়েছে মেরেছে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমরা সেটি থেকে বেরিয়ে এসেছি।’ এখন দেশ নির্মাণের সময় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন সবাই মিলে বাংলাদেশকে নির্মাণ করি যাতে এটি যেন চিরতরে যেন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হয়, প্রতিবার নির্বাচন এলে মারামারি করতে হবে এরকম আর যেন না হয়। মানুষের যে অধিকার আছে-কথা বলার অধিকার তা যেন নিশ্চিত হয়। বাংলাদেশকে আমরা যেন গড়ে তুলতে পারি সেটাই হওয়া উচিত আমাদের সকলের উদ্দেশ্য।’
এত চাপের পরও খালেদা জিয়া মাথানত করেননি দাবি করে তিনি বলেন, ‘এই আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া মুক্ত হয়েছেন এবং তিনি কিন্তু কখনও মাথানত করেননি। তিল তিল করে এ সাফল্য-তিনি কিন্তু একবারও মাথানত করেননি। তিনি মাথা উঁচু করেই বেরিয়ে এসেছেন। আমাদের নেতা তারেক রহমান এখনও দেশের বাইরে আছেন। তার বিরুদ্ধে নানা মামলা সাজিয়েছে। আমাদের উপর মামলার কথা বাদ-ই দিলাম। তাঁর মামলাগুলো যাতে আইনিভাবে সমাধান করা যায় সে চেষ্টা আমরা করছি। আপনারাও অনেকে আছেন যারা মামলায় পড়েছেন, কেউই বাদ পড়েননি।’
এর আগে বিমানে করে রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার তিনি সিলেট এসে পৌঁছান। পরে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে হযরত শাহজালাল (র.) ও শাহপরাণ (র.)-এর মাজার জিয়ারত করেন।
এএফ/০১