শিশুটি যদি আপনার সন্তান হতো, তাহলে কি করতেন? রাষ্ট্রপক্ষকে হাইকোর্ট

সিলেট মিরর ডেস্ক


জুলাই ২৯, ২০২৪
০৭:৪১ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জুলাই ২৯, ২০২৪
০৯:২৬ অপরাহ্ন



শিশুটি যদি আপনার সন্তান হতো, তাহলে কি করতেন? রাষ্ট্রপক্ষকে হাইকোর্ট

-ফাইল ছবি


কিশোর হাসনাতুল ইসলাম ফাইয়াজ। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী। বয়স ১৭ বছর ৩ মাস। আইন অনুসারে সে শিশু।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে পাঠানো হয় ৭ দিনের রিমান্ডে। আদালত থেকে হাতকড়া পরিয়ে নেওয়ার ছবি ছাপা হয়েছে একটি ইংরেজি দৈনিকে।

প্রকাশিত সেই ছবি রবিবার (২৮ জুলাই) সকালে বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি এসএম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক। আদালত তখন রিট আকারে উপস্থাপন করতে বলেন এই আইনজীবীকে।

পরে রিট দায়ের করে তা আদালতে উপস্থাপন করা হয়।

শুনানিতে শাহদীন মালিক বলেন, বয়স প্রমাণের দায়িত্ব তদন্ত কর্মকর্তার। আইনের সংস্পর্শে আসা শিশুর ক্ষেত্রে আচরণ কী হবে তা স্পষ্ট করেই শিশু আইনে উল্লেখ আছে।

তখন রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ বলেন, আপনাদের (আদালতের) আদেশের প্রয়োজন হবে না।

রিমান্ড বাতিলে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তাকে রিমান্ডে নেওয়া হবে না।

তখন হাইকোর্ট বলেন, শিশুটির নাম যদি এজাহারে না থাকে তাহলে কেন তাকে কাস্টডিতে নেবেন? বাবা-মায়ের হেফাজতে দিন।

আদালত বলেন, এটা মনে রাখতে হবে সে (ফাইয়াজ) একজন শিশু। তার নিরাপত্তার বিষয়টি সবার আগে দেখতে হবে।

শিশু আইনে তার বিষয়টি হ্যান্ডেল করতে হবে। পত্রিকায় দেখেছি শিশুটির বাবা বয়স প্রমাণের সকল কাগজ-পত্র দেওয়ার পরেও ম্যাজিস্ট্রেট বিবেচনায় নেননি।

রাষ্ট্রপক্ষকে উদ্দেশ করে হাইকোর্ট বলেন, এই শিশুটি যদি আপনার সন্তান হত, তাহলে কি করতেন? দেশের ভেতর এত বড় ধ্বংসযজ্ঞ হয়ে গেল, সরকার তার মতো করে ব্যবস্থা নিচ্ছে। কিন্তু এ ধরনের দু-একটি ঘটনা কী বার্তা দেবে? এ ধরনের অঘটন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে গেলে ভাবমূর্তি নষ্ট হতে পারে।

আদালত বলেন, এ ধরনের ঘটনা আমাদের কাম্য নয়। আজই পদক্ষেপ নিন। আদেশ দিচ্ছি না, কাল (সোমবার) শুনানির জন্য থাকবে।

এদিকে রিট শুনানির আগেই ফাইয়াজের রিমান্ড বাতিল করেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ ও শিশু আদালতের বিচারক রোকসানা বেগম হ্যাপী। একই সঙ্গে শিশুটিকে কারাগার থেকে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানায় রাষ্ট্রপক্ষ।

যাত্রাবাড়ি থানার মামলায় গতকাল শনিবার (২৭ জুলাই) ঢাকা কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ফাইয়াজকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। হাজির করা হয় ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে। তদন্তকারী কর্মকর্তার দশ দিনের রিমান্ড আবেদনে আদালত ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শুনানিতে শিশুটির পক্ষে তার বয়স প্রমাণের কাগজপত্র দেওয়া হলেও তা বিবেচনায় নেননি সংশ্লিষ্ট বিচারিক হাকিম।

যদিও রাষ্ট্রপক্ষ থেকে দাবি করা হয়, শিশু ফাইয়াজের বয়স প্রমাণ সংক্রান্ত কাগজপত্র উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হওয়ায় আদালত তার রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 


এএফ/০১