তীব্র দাবদাহের কারণে শিক্ষার্থীদের জন্য চালু হলো ‘পানি ঘণ্টা’

সিলেট মিরর ডেস্ক


এপ্রিল ২৮, ২০২৪
০৮:১৭ অপরাহ্ন


আপডেট : এপ্রিল ২৮, ২০২৪
০৮:১৭ অপরাহ্ন



তীব্র দাবদাহের কারণে শিক্ষার্থীদের জন্য চালু হলো ‘পানি ঘণ্টা’

তীব্র দাবদাহের কারণে শিক্ষার্থীদের জন্য চালু হলো ‘পানি ঘণ্টা’


দেশজুড়ে চলমান দাবদাহের মধ্যে রবিবার (২৮ এপ্রিল) সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করা হয়েছে। ক্লাসে এসে চলমান দাবদাহে শিক্ষার্থীরা পানি পান করতে ভুলে যেতে পারে; এতে তাদের অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে। এমন বাস্তবতায় শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক (ডিসি) খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান শিক্ষার্থীদের পানি পান নিশ্চিত করতে ঘণ্টা বাজিয়ে বিরতি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। যা স্কুলগুলোতে ‘পানি ঘণ্টা’ নামে পরিচিতি পেয়েছে।

এরই মধ্যে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে জেলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতি ক্লাস শেষে ‘পানি ঘণ্টা’ চালু ও পানি সরবরাহের জন্য নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। রবিবার থেকেই এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে প্রতিটি ক্লাস শেষ হওয়ার পর পানি পানের সুযোগ পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা, যে কারণে তাদের বেশ ফুরফুরে মেজাজে দেখা গেছে বিদ্যালয় খোলার প্রথম দিনে।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) জেলা প্রশাসকের দেওয়া ওই চিঠিতে বলা হয়েছে- ‘সারাদেশের উপর দিয়ে প্রবাহমান তীব্র তাপদাহের কারণে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম চলাকালীন প্রতি ঘণ্টায় একটি বিশেষ ঘণ্টাধ্বনি নিশ্চিত করতে হবে, যা ‘পানির ঘণ্টাধ্বনি’ নামে অভিহিত হবে। এ সময় সকল শিক্ষার্থী স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করবে।

এমতাবস্থায়, ২৮ এপ্রিল থেকে তাপদাহ সহনীয় পর্যায়ে না আসা পর্যন্ত জেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম চলাকালীন ‘পানির ঘণ্টাধ্বনি’ ব্যবহার নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে সকল শিক্ষার্থীর প্রতি ঘণ্টায় পর্যাপ্ত পানি পানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।’

এ চিঠি জেলা প্রাথমিক ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এবং সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করা হয়েছে। এরই মধ্যে রবিবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালুর প্রথম দিনেই বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক আগ্রহ দেখা গেছে। শিক্ষার্থী প্রতিটি ক্লাস শেষেই পর্যাপ্ত পানি পান করেছেন।

এতে তারা ছিলেন ফুরফুরে মেজাজে। জেলার বিভিন্ন এলাকার স্কুল ও মাদরাসায় খোঁজ নিয়ে পানি ঘণ্টা কার্যকরের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।  

কুমিল্লা নগরীর নবাব ফয়জুন্নেছা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাশেদা আক্তার বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী রবিবার সকাল থেকেই ক্লাস শুরু হয়েছে। প্রতি ৪৫ মিনিট পরপর আমাদের ক্লাস শেষ হয়। তারপর পানি ঘণ্টা দেওয়া হয়।

সে সময় শিক্ষার্থীরা পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করেছে। পানি পান করার আগে ঘণ্টা পেটানো হয়। এটা পানি পানের ঘণ্টা বলে শিক্ষার্থীদের বলা হয়েছে।

জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলার লক্ষণপুর ইসলামিয়া ফাযিল মাদরাসার প্রভাষক আবুল কালাম আজাদ বলেন,  এটা জেলা প্রশাসকের একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। এই উদ্যোগ সারাদেশে ছড়িয়ে গেলে চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যে শিক্ষার্থীরা স্বস্তি পাবে।

কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ফাহমিদা মুস্তাফা বলেন, আমি প্রতিষ্ঠান চালুর প্রথমদিন রবিবার সকাল থেকে কুমিল্লা নগরীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে খোঁজ নিয়েছি। এদিন সকাল থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পানি পানে বেশ উৎসাহ দেখা গেছে। এতে শিক্ষার্থীরা বেশ খুশি। 

এমন উদ্যোগ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান বলেন, তীব্র দাবদাহের কারণে শিক্ষার্থীরা যেন অসুস্থ হয়ে না পড়ে, সেজন্য নির্দিষ্ট সময় পরপর পানি পানের জন্য সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চিঠি দিয়েছি। রবিবার সকাল থেকে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খবর নিয়েছি। শিক্ষার্থীরা প্রতিবার ক্লাস শেষে পানি পান করছে। এতে শিক্ষার্থীরা ফুরফুরে  আছে।

তিনি বলেন, প্রচণ্ড তাপদাহে শিক্ষার্থীদের কিছুটা স্বস্তি দিতে আমরা নিজস্ব উদ্যাগে ব্যতিক্রমী এ পানি ঘণ্টা চালু করেছি। যতদিন দাবদাহ থাকবে, পানি ঘণ্টা ততদিন চালু থাকবে।

জিসি / ০২