সিলেট মিরর ডেস্ক
মে ২০, ২০২৩
০৩:৪২ পূর্বাহ্ন
আপডেট : মে ২০, ২০২৩
০৩:৪২ পূর্বাহ্ন
সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর বাসার নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকা ৬ জন আনসার বাহিনীর সদস্যকে গত মঙ্গলবার (১৬ মে) রাতে হঠাৎ প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন সিলেটে নতুন যোগদান করা আনসার ও ভিডিপি কমান্ড্যান্ট। এ বিষয়ে পরদিন নগরভবনে সংবাদ সম্মেলন ডেকে নিজেকে নিরাপত্তাহীন দাবি ও শঙ্কা প্রকাশ করে তাঁকে ‘জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে নানাভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে’ বলে অভিযোগ করেন মেয়র আরিফ।
তবে এ বিষয়ে শুক্রবার (১৯ মে) গণমাধ্যমে একটি বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে ‘মেয়র আরিফের বক্তব্য বিভ্রান্তিকর’ উল্লেখ করেছেন আনসার ও ভিডিপি জেলা কমান্ড্যান্ট আলী রেজা রাব্বী।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সিটি কর্পোরেশনের আবেদনের প্রেক্ষিতে সিলেট জেলা আনসার ও ভিডিপি কার্যালয় নগরভবন ও নগরভবনের সংশ্লিষ্ট স্থাপনার নিরাপত্তার জন্য ২৪ জন আনসার সদস্য মোতায়েন করে। কিন্তু মেয়র মহোদয় উক্ত আনসার সদস্যদের মধ্য থেকে ৫ জন আনসার সদস্যকে নিয়মবহির্ভুতভাবে নিজের ব্যক্তিগত ও বাসভবনের নিরাপত্তায় ব্যবহার করতে থাকেন। এ বিষয়টি সিলেট জেলা আনসার ও ভিডিপি কার্যালয় অবগত হওয়ার পর উক্ত ৫ জন আনসার সদস্যকে পুনরায় নগরভবনে দায়িত্ব পালনের জন্য ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তিনি (মেয়র) তার নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্য প্রত্যাহারের বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে যেভাবে প্রচার করছেন তা সঠিক নয় বরং বিভ্রান্তিমূলক। উল্লেখ্য, জেলা আনসার ও ভিডিপি কার্যালয় থেকে মেয়র মহোদয়ের ব্যক্তিগত ও বাসভবনের নিরাপত্তার জন্য কখোনই কোনো আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়নি।’
এর আগে বুধবার নগরভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মেয়র আরিফ বলেন- ‘আমাকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে নানাভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (১৬ মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে হঠাৎ করে আমার বাসার নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকা ৬ জন আনসার বাহিনীর সদস্যকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন সিলেটে নতুন যোগদান করা আনসার ও ভিডিপি কমান্ডার। মৌখিক বা লিখিত- কোনোভাবেই আমাকে বা সিসিকের কাউকে এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। অথচ গত ৬ বছর ধরে মাসিক বেতনের বিনিময়ে আনসার বাহিনীর ২৪ জন সদস্যকে নগরভবন ও আমার বাসার অফিসসহ সিসিকের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তায় নিয়োজিত রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে হঠাৎ করে আমার বাসা ও বাসা সংলগ্ন অফিসের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ৬ জনকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এতে আমার নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে।’
তিনি সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন- ‘প্রথম মেয়াদে মেয়র থাকাকালীন আমাকে সরকার থেকে দু’জন গানম্যান দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু পরের মেয়াদে তাদের প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এরপর নগরবাসীর টেক্সের টাকায় মাসিক চুক্তিতে আনসার বাহিনীর ২৪ জন সদস্যকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য নিয়ে আসা হয়। শিডিউল করে সিসিকের পানি শোধনাঘার ও যান্ত্রিক শাখাসহ (যেখানে সিসিকের বিভিন্ন গাড়ি ও মেশিন রাখা হয়) গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা দিয়ে আসছেন তারা। তাদের মধ্যে থেকে ৬ জনকে আমার বাসা ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তায় নিয়োজিত রাখা হয়েছে। কিন্তু গত (মঙ্গলবার) রাতে হঠাৎ করে এই ৬ জনকে প্রত্যাহ্যার করে নেওয়ায় আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছি। এছাড়াও আমার বাসা-সংলগ্ন অফিসে রাখা সিসিকের লক্ষ লক্ষ টাকার মালামাল এখন অনিরাপদ। এটা অতি উৎসাহী হয়ে এই বাহিনীর পক্ষ থেকে করা হয়েছে বলে আমি মনে করি। প্রশাসনের অতি উৎসাহী কতিপয় কর্মকর্তার কর্মকাণ্ড খোদ সরকারকেও বিভ্রতকর অবস্থায় ফেলে দিচ্ছে। আমার বাসার নিরাপত্তা-সদস্যদের কিন্তু সরকারের নির্দেশনায় প্রত্যাহার করা হয়নি।’
আগামী সিসিক নির্বাচনকে সামনে রেখে তাঁকে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে উল্লেখ করে মেয়র আরিফুল হক বলেন- ‘সম্প্রতি আমি মহানগরের যেখানে যাচ্ছি এবং আমার সঙ্গে ছবি পর্যন্ত তুলছেন, দেখা যাচ্ছে রাতের বেলা তাদের পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। কাউকে রিমান্ডে পর্যন্ত নিচ্ছে। আমি তো জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধি। আমাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শপথ করিয়ে মেয়রের চেয়ারে বসিয়েছেন। কিন্তু প্রশাসনের অতি উৎসাহী কিছুসংখ্যক কর্মকর্তা এমন একজন জনপ্রতিনিধিকে কীভাবে মূল্যায়ন করতে হয় সেটিও সম্ভবত ভুলে গেছেন।’
মেয়র আরিফ প্রশ্ন রেখে বলেন- ‘আমার বাসায় যদি এভাবে নিরাপত্তা দেওয়া আইনসিদ্ধ না হয় তবে দীর্ঘ ৬ বছর তারা কোথায় ছিলেন? আমি দেখছি- আমার নগরবাসী থেকে আমাকে দূরে রাখার সব ধরণের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি নগরবাসীর কাছে দোয়া চাই।’
এসই/১০