কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামীলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে যুবলীগের আহ্বায়কসহ আহত দুই

কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি


এপ্রিল ০৭, ২০২৩
০১:২১ পূর্বাহ্ন


আপডেট : এপ্রিল ০৭, ২০২৩
০১:২১ পূর্বাহ্ন



কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামীলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে যুবলীগের আহ্বায়কসহ আহত দুই
ফের সংঘর্ষের আশঙ্কা


সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর পর্যটন কেন্দ্রের নৌকা ঘাটের টেন্ডারের টাকা ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে আওয়ামীলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়কসহ দুই জন আহত হয়েছেন। এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ফের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের শঙ্কা স্থানীয়দের।

বুধবার (৫ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলা পরিষদ চত্বরে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে।

এতে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ইয়াকুব আলীর ভাই কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহবায়ক ইকবাল হোসেন (৫২) ও ব্যবসায়ী কামাল হোসেন (৪০)।

আহতরা সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।  এ ঘটনায় বিবদমান দুটি পক্ষের লোকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় ফের দু'পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কার রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কোম্পানীগঞ্জে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এক পক্ষের নেতা উপজেলা পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. ইয়াকুব আলী বলেন, ‘এবার সরকারি মূল্যের পাশাপাশি সমঝোতায় অতিরিক্ত ২ কোটি ১০ লাখ টাকায় পর্যটন ঘাট ইজারা নেন কাজী মোস্তাফিজ নামের সিলেট নগরের এক ব্যবসায়ীসহ অন্যরা। অতিরিক্ত এই টাকা ব্যাংকের পে-অর্ডারসহ যাদের সিডিউল রয়েছে, তাদেরকে দেওয়ার কথা। কিন্তু উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক কালা মিয়া ও সহ-সভাপতি তেলিখাল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সব টাকা বন্টন না করে নিজেরা ৪০-৫০ লাখ টাকা নিয়ে যেতে চান। আমি প্রতিবাদ করায় তারা আমার সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ান। এ নিয়ে পরিকল্পিতভাবে তারা আমার দুই ভাইকে মারধর করেছেন।’

অপর পক্ষের নেতা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘টাকার ভাগ বাঁটোয়ারা নিয়ে কোন ঝামেলা হয়নি। ইয়াকুবের সঙ্গে আলফু চেয়ারম্যানের অন্য একটি বিষয় নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয়েছিল। এটা আমরা উপস্থিত সবাই মিলে শেষ করে দিয়েছি। শেষ হওয়ার পরেও মারামারিটি হওয়াটা অকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে এটি মীমাংসার জন্য আলোচনা হয়েছে। আগামী শনিবারে ইয়াকুবের বাড়িতে গিয়ে এর সমাধান হয়ে যাবে।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুসিকান্ত হাজং বলেন, ‘সমঝোতা একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া। আমাদের দেখার বিষয়- এখানে সরকারের স্বার্থ ক্ষুন্ন হচ্ছে কিনা। তবে, এটিকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত। আমরা উভয়পক্ষকে ডেকে শান্ত থাকতে বলেছি। আশা করছি এ বিষয় নিয়ে আর কোন সমস্যার সৃষ্টি হবে না।’

জানা গেছে, গত ১২ মার্চ সাদা পাথর পর্যটন কেন্দ্রের নৌকা ঘাট ও গাড়ি পার্কিং এলাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রথম দফায় ইজারামূল্য সন্তোষজনক না হওয়ায় সর্বশেষ ২৭ মার্চ পুন‍ঃ দরপত্রের সিডিউল বিক্রি করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এতে ৩৭৩ টি শিডিউল বিক্রি হলেও জমা পড়ে মাত্র তিনটি। দরপত্র জমা দেওয়া তিন ব্যক্তি হলেন- কাজী মোস্তাফিজুর রহমান, তোয়াহির আলী ও দিলোয়ার মাহমুদ রিপন। তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ দর দাতা কাজী মোস্তাফিজুর রহমান ১ কোটি ১৮ লাখ টাকার দর জমা দেন। যা সরকারি মূল্যের চেয়ে মাত্র ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা বেশি।

ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর পর্যটন কেন্দ্রের টেন্ডার প্রক্রিয়া নিয়ে অভিযোগ রয়েছে, ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন নেতা সমঝোতা করে দরপত্র নিয়ন্ত্রণ করে অল্প টাকায় ইজারা নেয়। কিন্তু কেউ বেশি মূল্য দিতে রাজি থাকলেও তাদেরকে টেন্ডার ড্রপ করতে দেওয়া হয় না।


এএফ/০৪