হাড়ভাঙার চিকিৎসা নিতে গিয়ে কিডনি হারালেন দিনমজুর

সিলেট মিরর ডেস্ক


মার্চ ০৩, ২০২৩
০৯:৩৪ অপরাহ্ন


আপডেট : মার্চ ০৫, ২০২৩
০৪:২১ পূর্বাহ্ন



হাড়ভাঙার চিকিৎসা নিতে গিয়ে কিডনি হারালেন দিনমজুর


সিলেটে ভাঙা হাতের চিকিৎসা করাতে গিয়ে কিডনি চুরির শিকার হয়েছেন -এমন অভিযোগে আদালতে মামলা করেছেন খসরু মিয়া (৫৫) নামের এক দিনমজুর। গত বুধবার সিলেটের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়। ভুক্তভোগী খসরু সিলেটের কানাইঘাট থানার ফতেহগঞ্জের মৃত মজম্মিল আলীর ছেলে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী আমিনুল হক খান। তিনি বলেন, ‘অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক আব্দুল মোমেন জবানবন্দি গ্রহণ করে কোতোয়ালী থানা পুলিশকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহন করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।’

তবে মামলায় বিবাদী হিসেবে কারও নাম উল্লেখ করেননি বাদী কানাইঘাটের ফতেহগঞ্জ গ্রামের খছরু মিয়া। 

মামলার বিবরণে জানা যায়, খসরু মিয়া দিনমজুরের কাজ করতে গিয়ে গাছ থেকে পড়ে তার বাম হাতের কনুইয়ের ওপরের হাড় ভেঙে যায়। চিকিৎসার জন্য তিনি গত বছরের ১৮ অক্টোবর সিলেটের ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। দীর্ঘ প্রায় এক মাস সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকার পর নভেম্বরের ১৭ তারিখ সন্ধ্যা ৭টায় তার অপারেশন হয়। এ সময় তার বাম হাতের অপারেশনের পর কিডনি অপারেশনের মাধ্যমে দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে নেন। জ্ঞান ফেরার পর তিনি বিষয়টি বুঝতে পেরে আসামিদের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তারা বলেন, কিডনি অপারেশন করে একটা রগ এনে বাম হাতে সংযুক্ত করা হয়েছে। এটা বলার পর তাকে হুমকিও দেন। এরপর তড়িঘড়ি করে অপারেশনের পরদিনই তাকে হাতপাতাল থেকে ডিসচার্জ করে দেওয়া হয়।

মামলার বিবরণে আরো বলা হয়, হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পর দুর্বলতাবোধ থাকায় তিনি স্বাভাবিকভাবে হাটাচলা করতে পারছিলেন না। অসুস্থতার ব্যাপারে অন্য চিকিৎসকদের শরণাপন্ন হলেও তারা চিকিৎসা প্রদানে অপারগতা প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে গত ১৫ জানুয়ারি তিনি জৈন্তাপুর উপজেলায় জৈন্তাপুর ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে আলট্রাসনোগ্রাম করে জানতে পারেন তার বাম পাশের কিডনি নেই।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৯নম্বর পুরুষ ওয়ার্ডের অর্থপেডিক্স বিভাগ ইউনিট-১ এর রেজিস্ট্রার ডা. হাসানুল হক প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মামলার বিষয়টি জানা নেই। তাছাড়া ওই বিভাগের আমরা কিডনির চিকিৎসক নই। আমরা তো অর্থপেডিক্সের চিকিৎসক। ওই বিভাগে যারা ভর্তি হয় তারা অর্থপেডিক্সের, হাড় ভাঙা রিলেটেড রোগী ভর্তি হয়। অনেক সময় দেখা যায় যেসব রোগীর ভাঙার পর ২১ দিন চলে গেলে অপারেশন করার ক্ষেত্রে কোমরের সামনের দিক থেকে ওখান থেকে হাড় নিতে হয়। সেক্ষেত্রে হয়তো হাড় নেওয়া হয়েছে। এটা রোগীকেও আগে জানানো হয়। যেটাকে অটোগ্রাফ্ট বলেন।’

ওসমানী হাসপাতালের সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।

সিলেট মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ  বলেন, ‘আদালত থেকে এ ধরণের অভিযোগের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা এখনো আসেনি। নির্দেশনা আসলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সূত্র: কালের কণ্ঠ


এএফ/০২