সিলেটে কোরবানির পশুর বর্জ্য দ্রুত অপসারণে সিসিকের বিশেষ উদ্যোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক


জুলাই ২০, ২০২১
০৪:১৪ অপরাহ্ন


আপডেট : জুলাই ২০, ২০২১
০৪:৫৪ অপরাহ্ন



সিলেটে কোরবানির পশুর বর্জ্য দ্রুত অপসারণে সিসিকের বিশেষ উদ্যোগ
# নিয়োজিত থাকবে সাড়ে ১৮শ কর্মী # কার্যক্রম তত্ত্বাবধানে থাকবে ১২টি টিম # প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৯২টি যানবাহন

এবারের ঈদ উল আজহায় সিলেট নগরে কোরবানির পশুর বর্জ্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। এ কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করতে ১ হাজার ৮০০ কর্মী নিয়োজিত থাকবে। প্রস্তুত রয়েছে সিসিকের ৯২টি যানবাহন। 

পাশাপাশি ২৭টি ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম তত্ত্বাবধানে সিসিক কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে দুই ধাপে ১২টি টিম গঠন করা হয়েছে।

সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. হানিফুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি বলেন, ‘নির্ধারিত স্থান থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করবে সিসিক। বুধবার সকাল থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার মধ্যে নগরে জবাই করা পশুর সব বর্জ্য সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ কর্মযজ্ঞ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে নিয়মিত শ্রমিকের পাশাপাশি অতিরিক্ত ১ হাজার ২০০ কর্মী নিয়োগ দেওয়া হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নগরবাসীকে নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানি করতে হবে। এতে পরিচ্ছন্নতার কাজ সহজ হবে এবং পশুর বর্জ্যরে দুর্গন্ধে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটবে না।’

সিসিক সূত্রে জানা গেছে, পরিচ্ছন্নতার কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে নগরের ২৭টি ওয়ার্ডের প্রতি তিনটির জন্য একটি করে টিম গঠন করেছে সিসিক। প্রতিটি টিমে দুইজন সুপারভাইজার ও একজন চালক থাকবেন। তাদের কার্যক্রম তত্ত্বাবধানে প্রতি তিন ওয়ার্ডে একজন মনিটরিং কর্মকর্তা (তত্ত্বাবধায়ক) থাকবেন। আর প্রতি তিনটি টিমের কাজ তদারকিতে থাকবেন একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা।

সিটি করপোরেশনের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম মনিটরিং করবেন সিসিকের সহকারী প্রকৌশলী খায়ের আহমদ শাওন, ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কার্যক্রম দেখবেন উপসহকারী প্রকৌশলী আলী হাসান শাওন, ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে মনিটরিংয়ে থাকবেন সহকারী প্রকৌশলী লিপু সিংহ। এই তিন টিমের কার্যক্রম মনিটরিং করতে সিটি করপোরেশনের সচিব ফাহিমা ইয়াসমিনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

নগরের ১০, ১১ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম দেখাশোনা করবেন সহকারী প্রকৌশলী অংশুমান ভট্টাচার্য্য, ১৩, ১৪ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে দায়িত্বে থাকবেন উপসহকারী প্রকৌশলী পিন্টু রায় এবং ১৬, ১৭ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে দেখাশোনা করবেন উপসহকারী প্রকৌশলী খায়রুল ইসলাম অপু। এই তিন টিমের কাজে মনিটরিং করবেন প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইয়াসমিন নাহার রুমা।

১৯, ২০ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম দেখাশোনা করতে সহকারী প্রকৌশলী বিজিত চন্দ্র দে-কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ২২, ২৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কার্যক্রম দেখাশোনা করবেন উপসহকারী প্রকৌশলী মো. জুবেরুল ইসলাম এবং ২৫, ২৬ ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বে উপসহকারী প্রকৌশলী সুনীল মজুমদার। এই তিন দলের কার্যক্রমে তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্বে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুনন্দা রায়।

পাশাপাশি সিলেট নগরের বৈধ সব পশুর হাটের বর্জ্য অপসারণ করবে সিসিক। তারা আশা করছেন নির্ধারিত সময়ের আগেই কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করা সম্ভব হবে।

সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্রে আরও জানা যায়, সকাল ১১টার পর পশুর বর্জ্য পরিষ্কারে মাঠে নামবেন সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। ড্রেন ও পশু জবাইয়ের স্থানে ছিটানো হবে ব্লিচিং পাউডার। এরপর পানি দিয়ে পরিষ্কার করা হবে পশু জবাইর স্থান।

নগরের ২৭টি ওয়ার্ডে এই কার্যক্রমে নিয়মিত ৩৬০ পরিচ্ছন্নতাকর্মী, ওয়ার্ডভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত ১৪৪ জন এবং সুইপার ১৬০ জন নিয়োজিত থাকবেন। পাশাপাশি অতিরিক্ত আরও এক হাজার ২০০ পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগ দেওয়া হবে।

সিসিকের মোট ৯২টি যানবাহন পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ৪০টি বর্জ্যবাহী ট্রাক, ৬টি পানির গাড়ি (বড়), দুটি পানির গাড়ি (ট্রাক্টর), ১০টি এক্সেভেটর ও ৯টি পে-লোডার রয়েছে।

সিসিক কর্মকর্তা হানিফুর রহমান বলেন, ‘করোনা মহামারির সময়ে এবারের কোরবানির ঈদে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে কোনো ধরনের গাফিলতি সহ্য করা হবে না। এ ব্যাপারে আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছি। তবে, যত্রতত্র পশু কোরবানি এবং ড্রেন বা খালে পশুর বর্জ্য যেনো না ফেলা হয় সে ব্যাপারে নগরবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে। এমনটা ঘটলে দোষীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

আরসি-০৬