সিলেটে যত্রতত্র পশুর হাটের তোড়জোড়

নিজস্ব প্রতিবেদক


জুলাই ১৯, ২০২১
০২:০০ অপরাহ্ন


আপডেট : জুলাই ১৯, ২০২১
০২:০০ অপরাহ্ন



সিলেটে যত্রতত্র পশুর হাটের তোড়জোড়

ঈদ উল আজহা ঘনিয়ে এসেছে। শেষ সময়ে কেনাবেচা জমে উঠেছে। বৈধ পশুর হাটের পাশাপাশি সিলেট নগর ও আশপাশ এলাকার সড়ক এবং সড়কের পাশে অবৈধ পশুর হাট বসতে পারে। এমন আশঙ্কায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘এ বছর সড়কের উপর পশুর হাট অনুমোদন দেওয়া হয়নি। বৈধ পশুর হাট ছাড়া কেউ যত্রতত্র হাট বসানোর চেষ্টা করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, মহানগর ও শহরতলির বিভিন্ন স্থানে কোরবানির পশুর অবৈধ হাট বসানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এতে সড়কে যানবাহন ও মানুষের চলাচলে যেমন বিঘ্ন ঘটে তেমনি করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা কয়েকগুণ বাড়তে পারে।

অন্যদিকে, ঈদের দু-একদিন আগে নগরে যত্রতত্র কোরবানির পশুর হাট বসার প্রভাব পড়ে নগরে অনুমোদিত পশুর হাটের উপর। ইজারা নিয়ে তারাও ক্ষতির সম্মুখীন হন। ট্রাক ভরে কাজিরবাজার বা বৈধ অন্য কোনো পশুর হাটে যাওয়ার পথে তাদের ট্রাক আটকে লাঠিয়াল দিয়ে নামিয়ে দেওয়া হয় গরুর চালান। বিভিন্ন এলাকা থেকে পশু নিয়ে আসা বেপারিরা নগরের প্রবশে পথেই অবৈধ হাটের লাঠিয়ালদের কবলে পড়েন।

এবার নগরের একমাত্র স্থায়ী পশুর হাট কাজিরবাজার ছাড়াও তিনটি পশুর হাটের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর একটি দক্ষিণ সুরমার পারাইচকে ট্রাক টার্মিনালের অব্যবহৃত জায়গা, নগরের মাছিমপুরস্থ কয়েদির মাঠ যা বর্তমানে আবুল মাল আবদুল মুহিত ক্রীড়া কমপ্লেক্স এবং শাহী ঈদগাহস্থ কালাপাথর খেলার মাঠ।

এছাড়াও সদর উপজেলায় নগরের প্রবেশমুখ তেমুখী পয়েন্টে পশুর হাটের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। করোনা সংক্রমণ বাড়ার শঙ্কায় এর বাইরে আশপাশে কোনো পশুর হাটের অনুমোদন দেয়নি প্রশাসন। তবে, গত দুদিন ধরে নগরের একাধিক স্থানে পশুর হাটের প্রস্তুতির খবর পাওয়া গেছে। এরই মধ্যে নগরের টিলাগড়ের মিরাপাড়া এলাকায় পশুর হাট বসানোর খবর পাওয়া গেছে। গতকাল মানিকপীর টিলা এলাকায়ও বেশ কিছু গরু নিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে বেচাকেনা করতে দেখা গেছে।

গত কয়েক বছর নগরের শাহী ঈদগাহস্থ শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে পশুর হাট বসানো হলেও এবার অনুমোদন মিলেনি। গত বছর লাক্কাতুরাস্থ সিলেট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠেও হাট বসেছিল। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার পক্ষ থেকে ৬টি হাটের অনুমোদন চাওয়া হয়েছিল। তবে এবার চারটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দুইটির অনুমোদন মিলেনি।

সিলেট সিটি করপোরেশন এবার ৮টি হাটের অনুমোদন চায়। সেগুলোর মধ্যে মাত্র তিনটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন দেওয়া হয়নি টিলাগড় পয়েন্ট, রিকাবীবাজার পয়েন্ট, চৌকিদেখি, বাঘবাড়ী, মদীনা মার্কেটসহ বেশ কয়েকটি হাটের। 

তাই, এবার রিকাবিবাজার, উপশহর, বাগবাড়ি, আখালিয়া, মদিনা মার্কেট, মিরাবাজার, টিলাগড়, মেন্দিবাগ, ঘাসিটুলা, চৌকিদেখি, মালনীছড়া, আম্বরখানা, বালুচর, কুশিঘাট, দক্ষিণ সুরমার বাবনা পয়েন্ট, হুমায়ুন রশীদ চত্বর, চণ্ডিপুল, কদমতলী এলাকায় হাট বসানোর তৎপরতা চালাচ্ছেন অসাধু লোকজন। নগরের বাইরে বিমানবন্দর সড়কে এবং বাইশটিলা এলাকা এবং সদর উপজেলার বটেশ্বর, সুরমা গেইট, বাহুবল ও শাহপরাণ এলাকায় পশুর হাট বসানোর তোড়জোড় চলছে।

বৈধ হাটের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, প্রতিবছরই হাটে আসা গরুভর্তি ট্রাক জোর করে অবৈধ হাটে নিয়ে যাওয়া হয়। এবারও এমন আশঙ্কা করছেন তারা। 

এ বিষয়ে সিলেট জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, ‘প্রশাসন এ ব্যাপারে সতর্ক আছে। এবার কোথাও সড়কের উপর পশুর হাটের অনুমোদন দেওয়া হয়নি। যেগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়েছে এর বাইরে কেউ যত্রতত্র পশুর হাট বসানোর চেষ্টা করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একাধিক টিম গঠন করা হয়েছে।’

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের বলেন, ‘মহানগর পুলিশের অধীন এলাকায় কোরবানির যেসব পশুর হাট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে সেগুলোর তালিকা আমাদের কাছে রয়েছে। এর বাইরে কেউ অবৈধ পশুর হাট বসিয়ে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করবেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন। এক্ষেত্রে জেলা প্রশাসনের যেকোনো নির্দেশনা বাস্তবায়নে পুলিশ প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে।’

আরসি-০৩