নিজস্ব প্রতিবেদক
জুলাই ১৮, ২০২১
০৩:২৪ অপরাহ্ন
আপডেট : জুলাই ১৯, ২০২১
১২:০৮ পূর্বাহ্ন
সিলেটের বরেণ্য চিত্রশিল্পী অরবিন্দ দাসগুপ্ত আর নেই। মহামারি করোনাভাইরাসের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর না ফেরার দেশে পাড়ি জমান এই গুণী শিল্পী।
আজ রবিবার (১৮ জুলাই) সকাল ১০ টা ২২ মিনিটে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর গত ২৭ জুন তাকে সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আইসিইউতে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও এক ছেলে, এক মেয়েসহ অসংখ্য শিক্ষার্থীসহ গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
তিনি বলেন, 'স্যার আর আমাদের মাঝে নেই। সকাল ১০টা ২২ মিনিটে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। করোনার পাশাপাশি তিনি বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন। তাছাড়া স্যারের কিডনিতেও সমস্যা ছিল।'
আজ বেলা ২টায় তাঁর মরদেহ হাসপাতাল থেকে চালিবন্দর শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হবে জানিয়ে হিমন বলেন, ‘সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন ও স্যারের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।’
এর আগে, গত ২০ জুন ওসমানী মেডিকেল কলেজ ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে তাঁর করোনা পজেটিভ আসে। পরে ২৫ জুন তাকে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে ২৮ জুন তাকে হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শনিবার রাতে তার অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। এরপর আজ সকালে তিনি মারা যান।
প্রচারবিমুখ অরবিন্দ দাস গুপ্ত ১৯৫৩ সালের মার্চ মাসে (২৯মাঘ ১৩৫৭ বাংলা) হবিগঞ্জের আজমিরিগঞ্জের তার মাতুতালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা স্বর্গীয় নরেন্দ্র চন্দ্র দাসগুপ্ত ও মাতা স্বর্গীয় কুমুদিনী দাসগুপ্ত। সিলেট শহরে বেড়ে ওঠা এ শিল্পী কিশোরীমোহন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে (তৎকালীন কিশোরীমোহন পাঠশালা) প্রাথমিক শিক্ষাজীবন শেষে দি এইডেড হাইস্কুল থেকে ১৯৬৮সালে এসএসসি সমাপ্ত করেন।
পরে বাংলাদেশ চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয় (বর্তমান চারুকলা ইস্টিটিউট) থেকে ফাইন আর্টসের ওপরে ব্যাচেলর ডিগ্রি নিয়ে মনযোগ দেন চিত্রকর্মে। অর্জন করেন জাতীয় পর্যায়সহ বেশ কিছু পুরস্কার। কিন্তু অরবিন্দ দাসগুপ্তের ভেতরে সুপ্ত রয়েছে একটি বাউলকবি মন। হঠাৎ করেই নিভৃতজীবন বেছে নেন তিনি। চলে আসেন সিলেটে। শিক্ষক হিসেবে শুরু করেন নতুন জীবন।
চিত্রশিল্পী অরবিন্দ দাস গুপ্ত মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নিরলসভাবে রুচির দুর্ভিক্ষ তাড়াতে আলোকবর্তিকার ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি সিলেট অঞ্চলে চিত্রকলায় কয়েকটি সফল প্রজন্মই দাঁড় করিয়েছিলেন।
এনএইচ-০১/আরসি-১৪