শিপার আহমেদ, বিয়ানীবাজার
জুলাই ১২, ২০২১
১২:০২ পূর্বাহ্ন
আপডেট : জুলাই ১২, ২০২১
১২:০৩ পূর্বাহ্ন
সিলেটের বিয়ানীবাজারে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে উঠতে পারেনি অনেক পরিবার। বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহের ব্যবস্থা না থাকায় উপকারভোগী অনেকেই এখনও সেসব ঘরে উঠতে পারেননি। আশ্রয়ণ প্রকল্পে নির্মিত এই ঘরগুলো টেকসই কি না, তা যাচাই করতেও সময় নিচ্ছেন কেউ কেউ।
সম্প্রতি উপজেলার মোল্লাপুর ইউনিয়নের কাছাটুল এলাকায় নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘরে ফাটল দেখা দেয়। তবে স্থানীয় প্রশাসন তা দ্রুত সংস্কার করে দেয়। অভিযোগ উঠেছে, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে নির্মাণ করাতেই এই ফাটল। শুধু তাই নয়, নতুন টিনের ঘরের ভেতরে পানি পড়ছে। কাঠের তীরে ফাটল ধরেছে। টয়লেটের ফিটিংস খুবই দুর্বল। নেই বিদ্যুৎ সংযোগ, নেই যাতায়াতের রাস্তা।
গত ২০ জুন প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক উদ্বোধনের পর বিয়ানীবাজারের ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে নতুন ঘর ও দলিল হন্তান্তর করে বিয়ানীবাজার উপজেলা প্রশাসন। এর মধ্যে উপজেলার মোল্লাপুর ইউনিয়নের কটুখালিরপার গ্রামে নির্মাণ করা হয় ৫৭টি ঘর। এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে উপজেলার আরও ৩০টি পরিবার পেয়েছিল প্রথম ধাপে ঘর। গৃহনির্মাণের কাজ দেখভাল করে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন।
বিয়ানীবাজার উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিক নূর বলেন, পুরো উপজেলায় ১০৪টি ঘর নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ১ম ধাপে ৩০টি এবং ২য় ধাপে আরও ৭৪টি ঘর নির্মাণ করে দিয়েছি। উপকারভোগীদের কাছে আমরা সকল কাগজপত্র দিয়ে ঘরও বুঝিয়ে দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, অনেকেই এখন পর্যন্ত ঘরে বসবাস শুরু করেননি। মাত্র কয়েকটি ঘরে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহের কাজ চলমান রয়েছে। আশা করি এই কাজ শেষ হলে সবাই তাদের ঘরে বসবাস শুরু করবেন।
কটুখালীরপার গ্রামের ফয়জুর রহমান নামের এক উপকারভোগী জানান, ভূমিহীন বলেই ঘর পেয়েছিলাম। কিন্তু টয়লেটের রিং-স্ল্যাব ভাঙা, নেই বিদ্যুৎ সংযোগ, টিউবওয়েলও নেই। ঘরের দেয়ালের মধ্যে একাধিক স্থানে ফাটল ধরেছে। বাধ্য হয়ে একজন মিস্ত্রিকে দিয়ে টয়লেটের ফিটিংস পুনঃস্থাপন করেছি। পাশাপাশি ঘরের দেয়ালের পলেস্তারা মেরামত ও রঙ করেছি। নিজ উদ্যোগে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করছি। এখনই যদি নতুন পাকা ঘরের এই দশা হয়, তাহলে সামনের দিনগুলোতে কী হবে?
দেয়ালে ফাটল ধরা ঘরটির উপকারভোগী উপস্থিত না থাকায় তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২য় ধাপে ঘর নির্মাণ নিয়ে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের মাঝে বেশ টানাপোড়েন শুরু হয়। অনেক অপরিচিত এবং বহিরাগতরা ঘর পাচ্ছে মর্মে স্থানীয় ভূমিহীন লোকজন আপত্তি জানান। এতে পৌর মেয়রসহ সংশ্লিষ্ট অনেকেই প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে উপকারভোগীর তালিকা পুণরায় তৈরি করতে বলেন। যদিও সে তালিকা এখনও আলোর মুখ দেখেছে কি না তা জানাতে চাননি সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুশফিকুন নূর। তার কাছে উপকারভোগীর তালিকাসহ আশ্রয়ণ প্রকল্পের বিষয়টি জানতে তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করেও কোনো কিছু জানতে পারেননি স্থানীয় সাংবাদিকরা। বর্তমানে ওই আবেদনটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অপেক্ষমান রয়েছে।
এসএ/আরআর-০২