নিজস্ব প্রতিবেদক
জুলাই ০৬, ২০২১
১২:৫৬ পূর্বাহ্ন
আপডেট : জুলাই ০৬, ২০২১
০১:০০ পূর্বাহ্ন
সিলেটে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। গত এক সপ্তাহে বিভাগে শনাক্ত রোগী বেড়েছে দ্বিগুণ। একই সঙ্গে বেড়েছে নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত ২১ জুন থেকে ২৭ জুন এক সপ্তাহে বিভাগে করোনা শনাক্ত হয় ৮১৩ জনের। আর গত ২৮ জুন থেকে গতকাল ৪ জুলাই সকাল ৮টা পর্যন্ত শনাক্ত হন এক হাজার ৬৮৬ জন। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে শনাক্ত বেড়েছে ৮৭৩ জন।
এদিকে, গত এক সপ্তাহে (২১ থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত) নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৪ হাজার ৩৭৫টি। আর চলতি সপ্তাহে (২৮ জুন থেকে ৪ জুলাই সকাল ৮টা পর্যন্ত) নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৫ হাজার ২৯০টি। এক সপ্তাহে নমুনা পরীক্ষা বেড়েছে ৯১৫টি। গত সপ্তাহে নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় রোগী শনাক্ত হয়েছে ১৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ। আর চলতি সপ্তাহে পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্ত হয়েছে ৩১ দশমিক ৮৭ শতাংশ। এক সপ্তাহে শনাক্ত বেড়েছে প্রায় ১৪ শতাংশ।
তবে পরীক্ষা, শনাক্ত, শনাক্তের হার বাড়লেও কমেছে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা। গত সপ্তাহে ২১ জনের মৃত্যু হলেও চলতি সপ্তাহে করোনা শনাক্ত হয়ে মারা গেছেন ১৬ জন। চলতি সপ্তাহে বিভাগের চার জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি করোনা শনাক্ত হয়েছে সিলেট জেলায়। চলতি সপ্তাহে এই জেলায় শনাক্ত হয়েছেন এক হাজার ১৩৩ জন। এছাড়া সুনামগঞ্জে ১১৩ জন, হবিগঞ্জে ১৯৭ জন এবং মৌলভীবাজারে ২৪৩ জন শনাক্ত হয়েছেন।
গত বছর ৫ এপ্রিল সিলেটে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। ওই বছরের মে-জুনে শনাক্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। তবে আগস্টের পর কমতে থাকে। চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে সংক্রমণ ছিল নিয়ন্ত্রণে। তবে মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে আবারও বাড়তে থাকে সংক্রমণ। এপ্রিলে বাড়ে শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। মে মাসের প্রথম থেকে আবার শনাক্ত কমতে থাকলেও গত ঈদের পর তা বাড়তে শুরু করে। জুনের শেষ দিকে বাড়তে শুরু করে আশঙ্কাজনক হারে। এতে করে বিভাগের চার জেলাকেই অতি উচ্চ সংক্রমিত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনো এলাকার সংক্রমণের হার ১০ শতাংশের বেশি হলে তাকে উচ্চ সংক্রমিত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। সেখানে সিলেট বিভাগে শনাক্তের হার তিনগুণের বেশি। ভারতীয় ধরন ছড়িয়ে পড়ায় সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে বলে মনে করছেন তারা।
সংক্রমণ রোধে সিলেটসহ সারাদেশে চলছে কঠোর বিধি-নিষেধ। বিধি-নিষেধ কার্যকরে সিলেটে শক্ত অবস্থানে রয়েছে র্যাব-পুলিশ-বিজিবি-সেনাবাহিনী ও জেলা প্রশাসন। অকারণে বের হওয়াদেরকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে ঘরে। এছাড়া যারা স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না ও বিধি-নিষেধ লঙ্ঘন করছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, ‘লকডাউন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলে সংক্রমণের লাগাম কিছুটা টেনে ধরা যাবে। সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।’
এনএইচ/আরসি-০৮