নিজস্ব প্রতিবেদক
জুলাই ০৫, ২০২১
০৬:৪০ পূর্বাহ্ন
আপডেট : জুলাই ০৫, ২০২১
০৬:০৪ অপরাহ্ন
দেশব্যাপী চলা কঠোর বিধিনিষেধের এই লকডাউনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থানে প্রধান সড়ক প্রায় ফাঁকা। তবে উল্টোচিত্র পাড়ার অলিগলি কিংবা মাঠগুলোতে। শিশু-কিশোর-যুবক সবাই খেলাধুলায় মেতে আছেন। কেউ ক্রিকেট, কেউবা ফুটবল। সেখানে স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই চোখে পড়েনি।
রবিবার (৪ জুলাই) সিলেট নগর ও আশপাশের একাধিক এলাকা ঘুরে এই দৃশ্য চোখে পড়েছে। নগরের চৌকিদেখি, কুমারপাড়া, আম্বরখানা, মিরাবাজার, কুমারপাড়া, সুবিদবাজারের ফাজিলচিশত, লাক্কাতুরা চা বাগান ও বাইশটিলার ইকো পার্ক এলাকায় খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে শিশু-কিশোর ও যুবকদের। শারীরিক দূরত্বসহ স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই তাই স্বাভাবিকভাবে থেকেছে উপেক্ষিত।
নগরের চৌকিদেখি এলাকায় বেশ কয়েকটি গলিতে দেখা যায় এই চিত্র। শিশু-কিশোরদের সঙ্গে বয়স্কদেরও খেলায় সামিল হতে দেখা যায়। নগরের একটি বেসরকারি বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী জুনায়েদ আহমেদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা হয়। জুনায়েদ বলে, ‘স্কুল বন্ধ থাকায় আম্মু সারাদিন পড়ার টেবিলে বসিয়ে রাখেন। ইচ্ছে না হলেও পড়তে হয়। বিকেলবেলা একটু ছুটি দেন। এই সময়ে খেলাধুলা না করলে ভালো লাগে না।’
চৌকিদেখি সীমানার শেষ প্রান্ত ও লাক্কাতুরা চা বাগানের ফ্যাক্টরির পেছনের মাঠে দেখা গেছে বিভিন্ন বয়সীদের খেলাধুলায় মেতে থাকতে। বৃষ্টি উপেক্ষা করেও তাদের মাঝেমধ্যে এই মাঠে খেলতে দেখা যায়। ১৫ থেকে ১৬ জন ফুটবল খেলতে একত্রিত হন এই মাঠে।
ইমন নামে একজন খেলতে আসেন। মুখে মাস্ক নেই। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ফুটবল খেলার সময় দৌঁড়াতে হয়। মাস্ক পরে যেখানে হাটতেই কষ্ট হয়, সেখানে দৌড়াব কী করে। তাছাড়া খেলায় গোল হলে সবাই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়বে এটাই খুব স্বাভাবিক। উচ্ছ্বাসকালে একে অপরের কাছাকাছি হবেই। ওই সময়টাতে স্বাস্থ্যবিধির কথা মাথায় থাকে না।’
একই দৃশ্য দেখা যায় সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম সংলগ্ন লাক্কাতুরা চা বাগান এলাকার সড়কে। স্বাভাবিক সময়ে এই সড়কে থাকে দর্শনার্থীদের ভিড়। কিন্তু লকডাউনের কারণে সেটা একদম নেই বললেই চলে। এই সুযোগে খেলায় মেতে উঠেছিলেন চা বাগানের শিশুরা। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে তাদের অনেকেরই নেই ধারণা।
একই দৃশ্য বিমানবন্দরের বাইশটিলা এলাকার জেলা পরিষদের ইকোপার্কের। এখানেও স্বাভাবিক সময়ে থাকে পর্যটক ও দর্শনার্থীদের ভিড়। লকডাউনের এই সময়ে জায়গা ফাঁকা পেয়ে স্থানীয় শিশু-কিশোররা ফুটবল খেলায় মেতে উঠেন। এখানেও ছিল না স্বাস্থ্যবিধির বালাই।
আশিক হোসাইন নামে এক কিশোর বলে, ‘করোনা তো শহরে। গ্রামে তো কারও করোনা হয় না। তাই আমরা এত ভয় পাই না। মাস্ক আমাদের প্রয়োজন হয় না। আর খেলতে গেলে একে অন্যের গায়ের সঙ্গে গা লাগবে, এটা তো আর এড়ানো যাবে না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, ‘করোনার বর্তমান ভ্যারিয়েন্ট কোনো বয়স বিবেচনা করে না। যেকোনো বয়সের মানুষের শরীরে সংক্রমণ ঘটাতে পারে। তাই করোনা মহামারির এই সময়ে শিশু-কিশোরদের বাইরে খেলাধুলা করায় সংক্রমণ ঝুঁকি অবশ্যই রয়েছে। প্রশাসনের উচিৎ নগরের অলিগলিতেও নজরদারি বাড়ানো।’
আরসি-০২