নিজস্ব প্রতিবেদক
জুলাই ০৩, ২০২১
১০:৪২ অপরাহ্ন
আপডেট : জুলাই ০৩, ২০২১
১০:৪২ অপরাহ্ন
সিলেট নগরের প্রধান সড়কগুলো অনেকটাই ফাঁকা। বন্ধ প্রায় সব ধরনের দোকানপাট। যান চলাচলও কম। তবে অলি-গলির চেহারা ছিল স্বাভাবিক দিনের মতো। গত শুক্র ও আজ শনিবার কঠোর লকডাউনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনের চিত্র ছিল এমনটাই।
দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত নগরের বন্দরবাজার, চৌহাট্টা, আম্বরখানা, জিন্দাবাজার, কাজীটুলা, লোহারপাড়া, বড় বাজার, মিরাবাজার, রায়নগর, ছড়ারপার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, লকডাউনের কারণে নগরের প্রধান সড়কগুলো নীরব। সাধারণ মানুষের উপস্থিতিও খুব একটা নেই। শপিং মল থেকে দোকানপাট সবকিছুই বন্ধ। কিছু রেস্টুরেন্ট খোলা থাকলেও বসে খাবার খাওয়ার সুযোগ নেই। যানবাহন বলতে চলছে রিকশা ও মোটরসাইকেল। মাঝে মধ্যে কয়েকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও প্রাইভেটকার চলতে দেখা যায়।
নগরজুড়ে ছিল পুলিশ-র্যাব-বিজিবি-সেনাবাহিনীসহ প্রশাসনের কড়া নজরদারি। বাজার ও বিভিন্ন কারণে ঘর থেকে বের হওয়া মানুষকে তারা স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে চলাফেরা করার আহ্বান জানান। বিনাকারণে বের হওয়াদের পড়তে হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদের মুখে। ট্রাফিক সদস্যরা মোটরসাইকেল, গাড়ি আটকে কাগজপত্র দেখেন। ফলে নগরে প্রধান সড়ক ছিল প্রায় ফাঁকা।
তবে এর বিপরীত চিত্র ছিল নগরের অলি-গলিতে। সেখানে চায়ের দোকানে চলেছে আড্ডা। তরুণ থেকে বৃদ্ধ সব বয়সের মানুষ ছিলেন আড্ডায়। তরুণদের আবার গলির মুখে জটলা করে দাঁড়িয়ে থাকতেও দেখা যায়। প্রধান সড়কে প্রায় সব দোকানপাট বন্ধ থাকলেও অলি-গলিতে খোলা ছিল সব দোকানপাট। ঘর থেকে বের হওয়াদের মধ্যে বেশির ভাগই মাস্ক পরেননি।
মিরাবাজার এলাকায় মিসবাউর রহমান সিলেট মিররকে বলেন, ‘বিকেলে বাসায় থাকতে ইচ্ছে করে না। তাই বাসা থেকে বের হয়ে পাড়ার বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করছি।’
নগরের কাজীটুলা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কাজী দিঘির পাশে জটলা করে আড্ডা দিচ্ছেন তরুণরা। কয়েকজন মিলে মোবাইলে গেম্স খেলছেন। লকডাউনে বাইরে বের হওয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে রাকিব হাসান বলেন, ‘সারাদিন ঘরে থাকতে থাকতে বিরক্ত হয়ে গেছি। তবে মূল সড়কে যাচ্ছি না। এখানে বসেই সময় কাটাচ্ছি।’ মাস্ক ব্যবহার করছেন না কেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মাস্ক সব সময় রাখি। তবে এখন আনতে ভুলে গেছি।’
প্রধান সড়কে দাঁড়াতে না পেরে ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরাও এখন নগরের অলি-গলিতে ব্যবসা করছেন। এসব দোকানে ক্রেতাদের ভিড়ও হচ্ছে। ভ্রাম্যমাণ আম বিক্রেতা আলী হোসেন বলেন, ‘মেইন রোডে পুলিশ ঝামেলা করে। তাই গলিতে এসে ব্যবসা করছি। তবে বিক্রি কম।’
এ বিষয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) বিএম আশরাফ উল্ল্যাহ তাহের সিলেট মিররকে বলেন, ‘লকডাউন বাস্তবায়নে নগরজুড়ে পুলিশের শক্ত অবস্থান রয়েছে। নগরের বিভিন্ন পয়েন্টে এসএমপির ১৬টি চেকপোস্ট রয়েছে। মহানগর পুলিশের থানা-ফাঁড়ি-তদন্ত কেন্দ্র ও ট্রাফিক সদস্যরা এসব চেকপোস্টে দায়িত্ব পালন করছেন।’
নগরের অলি-গলিতে লকডাউন বাস্তবায়নের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নগরে আমাদের মোবাইল পেট্রোল টিম কাজ করছে। তারা নগরজুড়ে টহল অব্যাহত রেখেছেন।’
সিলেট জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (সাধারণ শাখা ও মিডিয়া সেল) শাম্মা লাবিবা অর্ণব সিলেট মিররকে বলেন, ‘বিধি-নিষেধ কার্যকরে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চলছে। জেলায় ৩৩টি ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করছে। যারা নির্দেশনা অম্যান্য করছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
আরসি-১০