নিজস্ব প্রতিবেদক
জুলাই ০৩, ২০২১
০৫:১৭ পূর্বাহ্ন
আপডেট : জুলাই ০৩, ২০২১
০৫:১৮ পূর্বাহ্ন
কঠোর লকডাউনের দ্বিতীয় দিন ছিল শুক্রবার। ছুটির দিনে নগরে লোকসমাগম কম থাকার কথা, তাই প্রশাসনের তৎপরতাও ছিল তুলনামূলক কম। কিন্তু, নগরে লোক চলাচল কিছুটা বেড়েছে। শহরের বাইরের চিত্র আরও বেহাল। এত কড়াকড়ির পরও মাস্ক পরার বালাই নেই। তবে, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রশাসনের কঠোরতা দেখা গেছে।
সিলেট জেলা প্রশাসনের ৩৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে গতকাল শুক্রবার জেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করে ১৮৭টি মামলা করা হয়। আদায় করা হয় ২ লাখ ২৫ হাজার পাঁচশ টাকা জরিমানা। বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে অপ্রয়োজনে বাইরে বের হওয়া, প্রতিষ্ঠান খোলা এবং স্বাস্থ্যবিধি না মানায় বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে এই জরিমানা করা হয়েছে।
এদিকে, পুলিশ প্রশাসনের অভিযানে নগরে ১০৪ গাড়ি আটক ও ৪৮ গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। জেলা পুলিশও বিভিন্ন চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশির পাশাপাশি জরিমানা করেছে।
সিলেট জেলা প্রশাসনের গণমাধ্যম কর্মকর্তা শাম্মা লাবিবা অর্ণব জানান, গতকাল শুক্রবার কঠোর লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে সিলেট নগর ও জেলার সবকটি উপজেলায় তৎপর ছিল প্রশাসন। ১৮৭ মামলা করে দুই লাখ ২৫ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
প্রথম দিন থেকে ৩৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মহানগর ও জেলার বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। প্রথমদিনের অভিযানে ১৭২টি মামলা এবং দুই লাখ ৬০০ টাকা জরিমানা আদায় করে প্রশাসন।
এ সময় সিলেট মহানগর ও জেলা পুলিশ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-৯ এবং আনসার সদস্যরা আইনশৃংখলা নিয়ন্ত্রণ ও সার্বিক সহযোগিতায় কাজ করেন। অভিযানের পাশাপাশি গতকাল নগরে সেনাবাহিনী, বিজিবির টহল জোরদার ছিল।
সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি) সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ৬ থানা এলাকায় পুলিশের অভিযানে ১১২ গাড়ি আটক করা হয়েছে। অপ্রয়োজনে বের হওয়া ও লাইসেন্স না থাকায় ৯৪টি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আটক গাড়ির মধ্যে ১৩টি সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৫২টি মোটরসাইকেল, নয়টি প্রাইভেট কার এবং আরও বিভিন্ন ধরনের ৪২টি যানবাহন রয়েছে। মামলা হয়েছে ১০টি অটোরিকশা, ৬৭টি মোটরসাইকেল, ১১টি প্রাইভেট কার এবং অন্যান্য আরও ৬টির গাড়ির বিরুদ্ধে।
জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, গতকাল থেকে শুরু হওয়া কঠোর লকডাউনে কোনোভাবে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। বিষয়টি জনসাধারণকে বুঝতে হবে। যারা হালকাভাবে নেবেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন। এমনকি, কারাগারে পাঠাতেও পিছপা হবে না।
সিলেট জেলা পুলিশের গণমাধ্যম কর্মকর্তা, অতিরিক্ত সুপার মো. লুৎফুর রহমান জানান, প্রত্যেক থানা এলাকায় দুটি মোবাইল টিম কাজ করছে। পাশাপাশি চেকপোস্ট ডিউটি অব্যাহত রয়েছে। ট্রাফিক পুলিশ, সাদাপোশাকের পুলিশ এবং গোয়েন্দা পুলিশ মাঠে রয়েছে।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ১ জুলাই থেকে আগামী ৭ জুলাই পর্যন্ত সারাদেশে কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করে সরকার। গত বুধবার দুপুরে এই প্রজ্ঞাপন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন সমন্বয় অধিশাখা থেকে জারি করা হয়।
এতে বলা হয়, করোনাভাইরাসজনিত রোগ সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় বিভিন্ন শর্তাবলী সংযুক্ত করে ১ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত বিধিনিষেধ আরোপ থাকবে।