গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি
জুলাই ০২, ২০২১
১২:১৪ পূর্বাহ্ন
আপডেট : জুলাই ০২, ২০২১
১২:১৪ পূর্বাহ্ন
সারা দেশের মতো সিলেটের গোয়াইনঘাটেও শুরু হয়েছে কঠোর লকডাউন। লকডাউন বাস্তবায়নে উপজেলা প্রশাসন বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) সকাল থেকে মাঠে নেমেছে। রাস্তাঘাট অনেকটা ফাঁকা। মানুষের চলাচল কম দেখা গেছে।
সকাল থেকে লকডাউন বাস্তবায়নে উপজেলার বিভিন্ন মোড়ে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে দূরপাল্লার পরিবহনসহ সব লোকাল বাস সার্ভিস। জরুরি পরিষেবা ছাড়া বন্ধ করা হয়েছে দোকানপাট, শপিং মল, রিকশা, অটোরিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, লেগুনা, প্রাইভেটকার। অকারণে মানুষ যাতে বাইরে ঘোরাফেরা না করেন, সেজন্য উপজেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত ও পুলিশ বাহিনী মাঠে রয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে ব্যস্ততম এলাকা উপজেলা সদর, বারহাল বাজার, জাফলং বাজার, মামার বাজার, মোহাম্মদপুর, তামাবিল, নলজুড়ি ও জাফলং পিকনিক স্পট একেবারে জনশূন্য। থানার পুলিশ ও ট্যুরিস্ট পুলিশ বিভিন্ন স্থানের মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়েছে। রাস্তায় বের হওয়া লোকজন ও যানবাহন আটকে ঘর থেকে বের হওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করছে তারা। সদুত্তর না পেলে যাত্রীদের আবার বাসায় ফেরার নির্দেশ দিচ্ছে পুলিশ।
সকাল থেকে উপজেলার রাস্তাঘাটে বাস, অটোরিকশা, লেগুনাসহ সবধরনের গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে নানা অজুহাতে মোটরসাইকেল চালকদের আনাগোনা লক্ষ্য করা গেছে।
এদিকে, উপজেলার একাধিক প্রবেশপথে পুলিশের চেকপোস্ট ও তদারকি ছিল চোখে পড়ার মতো। জাফলং বাজার, মোহাম্মদপুর ও মামার বাজারে বেলা ১১টার দিকে কয়েকটি দোকান খোলা ছিল। পরে গোয়াইনঘাট সার্কেলের এএসপি সুপার প্রবাস কুমার সিংহ ও থানার ওসি পরিমল চন্দ্র দেব’র নেতৃত্বে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশের একটি টহল দল এসে দোকানগুলো বন্ধ করে দেয়। আবারও দোকান খুললে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেয় পুলিশ।
এ সময় গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পরিমল চন্দ্র দেব বলেন, লকডাউনের প্রথম দিনে অনেকে দোকানপাট খোলার চেষ্টা করেছেন। অনেকে অহেতুক মোটরসাইকেল চালিয়ে এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করার চেষ্টা করছেন। তবে লকডাউন বাস্তবায়নে পুলিশ কঠোর ভূমিকায় রয়েছে। আইন অমান্য করলে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
গোয়াইনঘাট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তাহমিলুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, লকডাউন চলাকালে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত জরুরি নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকান খোলা রাখা যাবে। এ সময় সবধরনের গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। লকডাউনের সময় সাধারণ মানুষের চলাচল ও ভিড় এড়ানোর জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। উপজেলার একাধিক প্রবেশদ্বারে পুলিশের চেকপোস্ট থাকবে। এ সময় সীমান্তে পারাপার বন্ধ থাকবে। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে থাকবে ভ্রাম্যমাণ আদালত। বিধিনিষেধ অমান্যকারীদের জরিমানা করা হবে। তবে তামাবিল স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চালু থাকলেও সেখানে সবধরনের দোকানপাট বন্ধ থাকবে।
ইউএনও আরও বলেন, সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে অনেকটা অনীহা রয়েছে। অনেকে করোনার সংক্রমণ নিয়ে চলাফেরা করছেন। অনেকের একেবারেই কোনো উপসর্গ নেই। কিন্তু ওই ব্যক্তির দ্বারা অনেকে সংক্রমিত হচ্ছেন। এ কারণে করোনা প্রতিরোধ কমিটির সুপারিশে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। লকডাউন বাস্তবায়নে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন কঠোর ভূমিকায় থাকবে।
এমএম/আরআর-০৭