নাবিল হোসেন
জুন ১৯, ২০২১
০৪:১৪ পূর্বাহ্ন
আপডেট : জুন ১৯, ২০২১
০৪:১৪ পূর্বাহ্ন
সিলেটে এসেছে চীনের সিনোফার্মের ৬০ হাজার টিকা। বিভাগের চার জেলায় প্রথম ডোজের জন্য নিবন্ধিত এবং নার্সিং, মেডিকেল কলেজ এবং ডেন্টাল কলেজের শিক্ষার্থীরা এ টিকা পাবেন। আজ শনিবার (১৯ জুন) থেকে শুরু হবে টিকা প্রদান কার্যক্রম।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ৬০ হাজার ডোজ টিকার মধ্যে সিলেট জেলায় এসেছে ৩৭ হাজার ২০০ ডোজ, সুনামগঞ্জে ৬ হাজার ডোজ, মৌলভীবাজারে ৮ হাজার ৪০০ ডোজ এবং হবিগঞ্জ জেলায় ৮ হাজার ৪০০ ডোজ। উপহার হিসেবে চীন থেকে ১১ লাখ ডোজ সিনোফার্মের টিকা এবং কোভ্যাক্স প্রকল্পের আওতায় এক লাখ ছয় হাজার ডোজ ফাইজারের টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডা. নূরে আলম শামীম সিলেট মিররকে বলেন, ‘বিভাগে ৬০ হাজার ডোজ চীনের তৈরি সিনোফার্মের টিকা এসেছে। আজ থেকে এ টিকা প্রদান শুরু হবে।’
সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. জন্মেজয় দত্ত সিলেট মিররকে বলেন, ‘শুক্রবার জেলায় টিকা এসেছে। নির্দেশনা অনুযায়ী ইতোমধ্যে নিবন্ধন করে এখনও যারা টিকার এক ডোজও পাননি তারা এ টিকা পাবেন। এছাড়া মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টাল ও নার্সিংয়ের শিক্ষার্থীরা এ টিকা পাবেন।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী ঢাকা বাদে সব জেলায় এ টিকা প্রয়োগের জন্য মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি কেন্দ্র থাকবে। এ কেন্দ্রে দুটি বুথ থাকবে। তবে যেসব জেলায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নেই সেসব জেলায় করোনার ভ্যাকসিনেশন কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে জেলা সদর হাসপাতাল বা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের যেকোনোটির একটিতে কেন্দ্র করতে হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চীনের টিকা দেওয়া হবে। এ কেন্দ্রে দুটি বুথ থাকবে। প্রতিটি বুথে দুজন টিকাদানকারী এবং তিনজন স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন।’
এদিকে, বৃহস্পতিবার টিকা তথ্য ফরম থেকে জানা যায়, বিভাগে নিবন্ধন করে এখানও টিকার কোনো ডোজ পাননি ৭৪ হাজার ৯৭৪ জন। এর মধ্যে সিলেট জেলায় রয়েছেন ৩৮ হাজার ২৫০ জন, সুনামগঞ্জে ১০ হাজার ২১২ জন, হবিগঞ্জে ১৫ হাজার ২৭১ জন এবং মৌলভীবাজার জেলায় ১১ হাজার ২৪১ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে চীনের সিনোফার্মার টিকার অগ্রাধিকার তালিকায় আছেন সরকারি স্বাস্থ্যকর্মী ও পুলিশ সদস্য, সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজের শিক্ষার্থী, সরকারি নার্সিং শিক্ষার্থী, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের শিক্ষার্থী, উন্নয়ন প্রকল্পের (পদ্মা সেতু প্রকল্প) কর্মকর্তা, বিদেশগামী জনশক্তি, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মী, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতদেহ ব্যবস্থাপনায় যুক্ত ব্যক্তি এবং এ দেশে থাকা চীনের নাগরিকসহ অন্য দেশের নাগরিকেরা।
ইতোমধ্যে বিভাগের তিন জেলায় শেষ হয়েছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা। শুধু হবিগঞ্জে ১১০ ডোজ টিকা মজুত রয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিভাগে ৩ লাখ ৪৪২ জন প্রথম ডোজ এবং ২ লাখ ১৮ হাজার ৬৭২ জন দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিয়েছেন। এর মধ্যে সিলেট জেলায় প্রথম ডোজ নিয়েছেন ১ লাখ ১৪ হাজার ১১ জন, দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৮৪ হাজার ৫৭১ জন। সুনামগঞ্জে প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৬১ হাজার ৭৯০ জন, দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৪০ হাজার ৭৪৯ জন। হবিগঞ্জে প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৫৭ হাজার ৬৬৮ জন, দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৪০ হাজার ৭৫৫ জন এবং মৌলভীবাজারে প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৬৬ হাজার ৯৭৩ জন এবং ৫২ হাজার ৫৯৭ জন দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন।
বিভাগে প্রথম ডোজ টিকা নিয়ে দ্বিতীয় ডোজ টিকা পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছেন ৮১ হাজার ৬৬০ জন। এর মধ্যে সিলেট জেলায় ২৯ হাজার ৪৪০ জন, সুনামগঞ্জে ২১ হাজার ৪১ জন, হবিগঞ্জে ১৬ হাজার ৮০৩ জন এবং মৌলভীবাজারে ১৪ হাজার ৩৭৬ জন।
এ বিষয়ে সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. জন্মেজয় দত্ত বলেন, ‘সরকার অক্সফোর্ডের টিকা আনার চেষ্টা চালাচ্ছে। আশা করছি দ্রুতই আমরা এ টিকা পাব। অক্সফোর্ডের টিকা পেলে যারা প্রথম ডোজ নিয়ে দ্বিতীয় ডোজ পাননি তাদেরকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে।’
এনএইচ/বিএ-০১