জনপ্রিয় ফেঞ্চুগঞ্জের আনারস, মিলছে ভালো দাম

শহীদ আহমদ চৌধুরী, ফেঞ্চুগঞ্জ


জুন ১৭, ২০২১
০৮:৫৮ অপরাহ্ন


আপডেট : জুন ১৭, ২০২১
০৯:০০ অপরাহ্ন



জনপ্রিয় ফেঞ্চুগঞ্জের আনারস, মিলছে ভালো দাম

গ্রীষ্মকালের জৈষ্ঠ্য মাসকে মধুমাস হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। এ সময় গ্রীষ্মকালীন নানা ধরনের ফল পাকতে থাকে গাছে গাছে। মৌ মৌ গন্ধে মাতোয়ারা হয় চারদিক। এ সময়সহ বর্ষার শুরুতেও পাওয়া যায় কাঁঠাল, আনারস, আম, লিচু, জাম, জামরুলসহ নানারকম ফল। এর মধ্যে অন্যতম হলো ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার মাইজগাঁও ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের বিভিন্ন বাগানের রসালো আনারস। এবার ফলন কিছুটা কম হলেও আনারসের দাম ভালো পাওয়া যাচ্ছে বলে জানা গেছে।

এখানকার আনারস গন্ধে, স্বাদে অপূর্ব। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবে চাষ করা টসটসে রসে ভরা এই আনারস প্রতিটি বাড়ির ছোট-বড় বাগান থেকে কিনে ব্যবসায়ীরা নিয়ে যান শহরে। ছোট-বড় পাইকাররা ভোর থেকে গাড়ি নিয়ে হাজির হন বাগানের ছাউনিতে। সেখান থেকে শত শত আনারস যার যেমন পছন্দ আকারভেদে কিনে নেন তারা। নির্দিষ্ট ব্যবসায়ীরা বাগান মালিকদের কাছ থেকে বার্ষিক চুক্তিতে বাগান নিয়েও আনারস চাষ করে থাকেন। তারাই বাগানের দেখভাল করেন। আকারভেদে এই এলাকার এক একটি বাগান ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকায় লিজ দেওয়া হয়।

ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় সবচেয়ে বেশি আনারসের বাগান আছে মির্জাপুর গ্রামে। এছাড়া কচুয়াবহর ও ঘিলাছড়া ইউনিয়নে কম-বেশি আনারসের বাগান রয়েছে। এসব পাকা আনারস প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিয়ে যান পাইকাররা। প্রতিদিন ভোরে গাছ থেকে সরবরাহ করা আনারস পাইকার ও ব্যবসায়ীরা কিনে নেন বাগান থেকে। গাছে পাকা আনারস প্রথমদিকে প্রতি হাজার বিক্রি হয়ে থাকে ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকায়। আকারভেদে দাম ওঠা-নামা করে থাকে। তবে এই এলাকার আনারসের দাম সবসময় একটু বেশি থাকে। তারপরও চাহিদা কমে না এই আনারসের।

এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যাতায়াতের সময় গাড়ি থামিয়ে বাগান থেকে গাছপাকা আনারস কিনে নিয়ে যান লোকজন। অনেকে বাগান দেখতে আসেন দূর-দূরান্ত থেকে। যাওয়ার সময় সুস্বাদু আনারস নিয়ে যান সঙ্গে করে। সরেজমিনে বাগানে গেলে এমনই দুইজনের সঙ্গে দেখা হয় এই প্রতিবেদকের।

সাদিকুর নাইম ও আবু আহমদ নামের ওই দুইজন এসেছেন মির্জাপুর গ্রামে আনারসের বাগান দেখতে। তাদের বাড়ি গোলাপগঞ্জ উপজেলার মিরগঞ্জ গ্রামে। তারা বাগান ঘুরে দেখে কিছু ছবি তুলে নেন। বাগানের ভেতরের গাছপাকা আনারস খেয়ে মুগ্ধ হন তারা। যাওয়ার সময় বেশকিছু আনারস কিনে সঙ্গে করে নিয়ে যান।

মির্জাপুর গ্রামের বাগান মালিকদের কাছ থেকে বেশিরভাগ বাগান বার্ষিক চুক্তিতে কিনে থাকেন আনারস ব্যবসায়ী বাবুল রঞ্জন দে। কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, এ বছর তিনি প্রায় ৬ লাখ টাকার আনারসের বাগান কিনেছেন। এবার সময়মতো বৃষ্টি হয়নি, তাই ফলনও ভালো হয়নি। গাছে সময়মতো মুকুল না আসায় দেরিতে ফল পাকতে শুরু করেছে। অন্য বছরের মতো ফল বড় হয়নি। তারপরও ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে। সবকিছুর পরও লাভ হবে বলে আশা করছি।

তিনি আরও বলেন, মানুষের মাঝে আনারসের বেশ চাহিদা রয়েছে। তাই এই এলাকার পতিত জমিতে আরও বেশি করে আনারস চাষ করা প্রয়োজন।


এসএ/আরআর-০১