সিলেট মিরর ডেস্ক
এপ্রিল ৩০, ২০২১
০৮:২৫ পূর্বাহ্ন
আপডেট : এপ্রিল ৩০, ২০২১
০৮:২৫ পূর্বাহ্ন
আসছে নতুন অর্থবছরের বাজেটে করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের দীর্ঘমেয়াদি নগদ আর্থিক সহায়তা দেওয়ার সুপারিশ করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। একই সঙ্গে স্বাস্থ্য খাত ও সামাজিক নিরাপত্তায় বরাদ্দ বাড়ানো, অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো, নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের ওপর করের হার কমানো এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, রপ্তানিমুখী শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বাজেট সুপারিশ তুলে ধরে সিপিডি। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। আর সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান ও গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, আসছে বাজেটে চারটি খাতের ওপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত। প্রথমত, বাজেটে করোনা মোকাবেলায় সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। দ্বিতীয়ত, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। তৃতীয়ত, কর্মসংস্থান তৈরিতে অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। চতুর্থত, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, রপ্তানিমুখী শিল্পে জড়িতদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে।
প্রতিবেদন তুলে ধরার সময় তৌফিকুল ইসলাম বলেন, ধনীদের আয়কর গত বছর ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়। এটাকে আবারও ৩০ শতাংশে ফিরিয়ে নেওয়া উচিত। সামষ্টিক অর্থনীতি ও বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে এটা সামঞ্জস্যপূর্ণ। বিভিন্ন দেশ এখন এটা করছে।
ইন্টারনেটের সম্পূরক শুল্ক ও সোর্স ট্যাক্স প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ইন্টারনেটের ব্যবহার এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এটা এখন আর শুধু ধনীরা ব্যবহার করে না, সাধারণ মানুষকেও শিক্ষার কাজে বা অন্য কাজে ব্যবহার করতে হচ্ছে। তাই সম্পূরক শুল্ক ১৫ শতাংশ প্রত্যাহার করা উচিত। পাশাপাশি ১ শতাংশ সোর্স ট্যাক্সও প্রত্যাহার করা উচিত। তবে ৫ শতাংশ ভ্যাট রাখা যেতে পারে।
সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আগমী বাজেটে বড় বড় প্রকল্প না নিয়ে কর্মসংস্থান বাড়ানো যায়, এমন খাতে বরাদ্দ বাড়ানো প্রয়োজন। বর্তমান পরিস্থিতিতে জিডিপি বাড়ানোর চেয়ে বেশি প্রয়োজন সম্পদের সুষম বণ্টন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। এখন স্বাস্থ্য খাতকে আমাদের অগ্রাধিকার দিয়ে নতুন যে ঝুঁকিগুলো হচ্ছে, সেটা কিভাবে সামাল দিতে হবে তা নিয়ে ভাবতে হবে। এখন প্রবৃদ্ধিটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নয়। ঘাটতি অর্থায়নে বিদেশি অর্থ আমরা যত বেশি হারে ব্যবহার করতে পারব তত ভালো।’
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষায় বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। কারণ ইন্টারনেট সেবার মাধ্যমে শিক্ষাগ্রহণ এখনো দেশের বেশির ভাগ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। ফলে এই খাতে আরো বেশি বরাদ্দ দিতে হবে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের কিভাবে আরো বেশি এগিয়ে নেওয়া যায়, তা খুঁজে বের করতে হবে।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘আমাদের এখানে জিডিপির প্রবৃদ্ধি বেশি দেখানোর একটা প্রবণতা লক্ষ করা যায়। এই জিডিপি যদি কর্মসংস্থান তৈরি করতে না পারে, রাজস্ব আদায় বাড়াতে না পারে, তাহলে এই প্রবৃদ্ধির কোনো অর্থই হয় না। পৃথিবীর অনেক দেশেই প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক হয়েছে। তাতে কী হয়েছে ওই দেশের? তাই জিডিপির প্রবৃদ্ধি নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় এখন নয়। এখন সময় করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দেওয়ার।’
আরসি-০৩