কমলগঞ্জ প্রতিনিধি
আগস্ট ২৩, ২০২০
০২:০৭ পূর্বাহ্ন
আপডেট : আগস্ট ২৩, ২০২০
০২:০৭ পূর্বাহ্ন
মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কমলগঞ্জ জোনালের অধীনস্থ লক্ষাধিক গ্রাহক ও চা-কারখানাসহ বিভিন্ন কারখানাসমূহে প্রতিদিন ৪/৫ ঘন্টা বিদ্যুৎবিহীন থাকায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। গত ১৯ আগস্ট সকাল ৮টায় কুলাউড়া গ্রিডে দু'টি ট্রান্সফরমারের মধ্যে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) এর সাপ্লাইকৃত পাওয়ার ট্রান্সফরমারটি বিকল হয়ে পড়ে। ফলে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিসিবি) এর সাপ্লাইকৃত অন্য পাওয়ার ট্রান্সফরমার দিয়ে কমলগঞ্জ জোনালের অধীনস্থ চার উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহের কারণে লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গ্রাহকরা।
জানা গেছে, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি বাংলাদেশ (পিজিসিবি) এর কুলাউড়া গ্রিডে দু'টি পাওয়ার ট্রান্সফরমারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। এর মধ্যে একটি পাওয়ার ট্রান্সফরমার পিডিসিবিসহ এবং অন্যটি আরইবিসহ বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। গত ১৯ আগস্ট সকাল ৮টায় কুলাউড়া গ্রিডে দু'টি ট্রান্সফরমারের মধ্যে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) এর সাপ্লাইকৃত পাওয়ার ট্রান্সফরমারটি বিকল হয়ে পড়ে। ফলে কমলগঞ্জ ও বড়লেখা উপজেলা এবং কুলাউড়া ও জুড়ি উপজেলার আংশিক এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহে বিপর্যয় নেমে আসে। এসব এলাকায় প্রতিদিন কয়েক দফায় চার থেকে পাঁচ ঘন্টা করে লোডশেডিং থাকছে।
কমলগঞ্জ জোনালের অধীনস্থ ৯৭ হাজার ৮শ জন বিদ্যুৎ গ্রাহক রয়েছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি চা-কারখানা ও অন্যান্য কারখানা রয়েছে। বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ফলে গ্রাহকদের ভোগান্তির পাশাপাশি এসব কারখানাতেও উৎপাদন বন্ধ হয়ে পড়ে। কুলাউড়া গ্রিডে ট্রান্সফরমারটি বিকল হয়ে পড়ায় নতুনভাবে ৬২ মেট্রিক টন ওজনের পাওয়ার ট্রান্সফরমারটি স্থাপনে আরও ৪/৫ দিন সময় লাগতে পারে। এতে গ্রাহকদের ভোগান্তি ও কলকারখানায় উৎপাদনে মারাত্মক প্রভাব পড়বে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির একজন প্রকৌশলী বলেন, 'কুলাউড়া গ্রিডে পাওয়ার ট্রান্সফরমারে ত্রুটি দেখা দেয় গত কোরবানির ঈদের দিন থেকে। এতদিনেও সেটি মেরামত না করায় ১৯ আগস্ট তা বিকল হয়ে পড়ে। এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ফলে ঘন ঘন লোডশেডিং দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হচ্ছে।'
কবি, গবেষক ও সংগঠক আব্দুস শহীদ সাগ্নিক, ব্যবসায়ী বদরুল ইসলাম, জমসেদ আলীসহ স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ট্রান্সফরমার বিকল, গ্রিডে পাখি বসা এসব অজুহাত দেখিয়ে ঘন ঘন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়। এতে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকরা সীমাহীন ভোগান্তির মধ্যে পড়েন। বিষয়টি খুবই অসহনীয়। এর একটি স্থায়ী প্রতিকার হওয়া আবশ্যক। নতুবা জনমনে ক্ষোভ বৃদ্ধি পেয়ে নানা অপ্রীতিকর ঘটনার সূত্রপাত হতে পারে।
মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কমলগঞ্জ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার গণেশ চন্দ্র দাস ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, 'ট্রান্সফরমারটি বিকল হওয়ার পর বর্তমানে পিডিসিবি'র সাপ্লাইকৃত পাওয়ার ট্রান্সফরমারের সঙ্গে যুক্ত করে তিন উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। এখানে ৫৩ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকলেও একটি ট্রান্সফরমারের মাধ্যমে ৩২ মেগাওয়াট দিয়ে সরবরাহ করা হচ্ছে। অবশিষ্ট ঘাটতি ২১ মেগাওয়াট। এর মধ্যে শ্রীমঙ্গল থেকে ৬ মেগাওয়াট আনার পরও ১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতিতে রাত্রিকালীন লোডশোডিং করে চলতে হচ্ছে। আগামী ৪/৫ দিনের মধ্যে ট্রান্সফরমারটি স্থাপন করা হলে এ সমস্যার সমাধান হবে।'
এসডি/আরআর-০৮