সিলেট মিরর ডেস্ক
জুন ০৫, ২০২০
০৫:২১ পূর্বাহ্ন
আপডেট : জুন ০৫, ২০২০
০৫:২১ পূর্বাহ্ন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতির কারণেই করোনাভাইরাসের এই মহামারীর সময়ে বাংলাদেশের জনগণ ঘরে বসেই অধিকাংশ কাজ করতে পারছে। আওয়ামী লীগ সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার কারণেই এটা সম্ভব হচ্ছে। দেশ এখন ডিজিটাইজেশনের সুবিধা পাচ্ছে।’
আজ বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে অনুদান গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে একথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তার পক্ষে অনুদান গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস। বিকাশের ব্যবস্থাপনায় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে আজ ৫০টি ভেন্টিলেটর এবং প্রায় সাড়ে ছয় লাখ চিকিৎসা সরঞ্জাম ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী দিয়েছে চীনের আলিবাবা ফাউন্ডেশন ও জ্যাক মা ফাউন্ডেশন।
বিকাশের মতো অন্যান্য মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে করোনাভাইরাস সংকটের মধ্যেই ৫০ লাখ মানুষকে ঈদ উপলক্ষে নগদ অর্থ সহায়তা পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে লকডাউনের মধ্যে যখন তৈরি পোশাক শ্রমিকরা কর্মস্থল থেকে নিজ নিজ গ্রামে চলে গিয়েছেন, সেই সময়ে তাদের বেতনের টাকা গেছে মোবাইলে। এ ধরনের আরও অনেক সেবার পাশাপাশি এখন করোনাভাইরাস আক্রান্তদের অনেকেই ঘরে বসেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারছেন মোবাইলসহ অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যমে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্যে এই প্রসঙ্গ টানেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশকে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্যের কথা উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আপনারা জানেন যে, ২০০৮ সালে আমরা যখন নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করি তখন বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে ঘোষণা করব এটাই আমাদের লক্ষ্য ছিল। আজকে আমি বলব, সেই ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা করতে পেরেছি বলেই আমাদের অনেক কাজ সহজ হয়েছে। “যেমন মানুষকে সহযোগিতা দেওয়া, তাদের কাছে নগদ টাকা পৌঁছানো, তাদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া বা ঘরে বসে চিকিৎসা পরামর্শ যাতে পেতে পারেন সেই ব্যবস্থা করা, ব্যবসা বাণিজ্য চালানো, ক্রয়-বিক্রয়, আত্মীয় স্বজন বা আপনজনের সঙ্গে কথা বলা, দেখা সাক্ষাৎ, চিকিৎসা সেবা অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে আমরা করে যাচ্ছি।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কাজেই ডিজিটাল বাংলাদেশ হওয়ার কারণেই কিন্তু এটা সম্ভব হচ্ছে। আমরা যদি এই ডিজিটাল বাংলাদেশ না করতাম, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ যদি উৎক্ষেপণ না করতাম এবং বাংলাদেশটা যদি একটা নেটওয়ার্কের মধ্যে না আসত তাহলে হয়ত এটা সম্ভব হত না। কাজেই ডিজিটাল করেছি বলে এটা সম্ভব হয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে অনুদান দিতে আসা সরকারি-বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, “আপনারা এই যে আন্তরিকতা দেখাচ্ছেন, সহানুভূতি দেখাচ্ছেন সেজন্য আপনাদেরকে আমি জনগণের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।”
সবার কাছে সহযোগিতা পৌঁছে দিতে সরকারের প্রচেষ্টা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা সব সময় চেষ্টা করে যাচ্ছি প্রত্যেকটা শ্রেণি-পেশার মানুষ সকলের কাছে যেন কিছু না কিছু আমরা সহযোগিতা পৌঁছাতে পারি যেন তারা কষ্ট না পায়- সেটাই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস শুধু বাংলাদেশের নয়, সারা বিশ্বের সমস্যা। এই ভাইরাস সংক্রমণে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, “আমরা কিন্তু অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। আমাদের একটা লক্ষ্য ছিল যে, বাংলাদেশটাকে আমরা ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ হিসেবে গড়ব। ২০২০ সাল জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী, ২০২১ সাল আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তি। এই মুজিববর্ষ আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম। “এই মুজিববর্ষ লক্ষ্য রেখেই আমরা অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছিলাম যেন অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ দাঁড়াতে পারে। একটা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যেন মানুষের জীবনমান উন্নত করতে পারে। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে এটা অনেকটা স্থবির হয়ে গেছে, এটা সত্য।”
এনপি-০৬