সিলেট মিরর ডেস্ক
মে ৩০, ২০২০
১২:১৪ অপরাহ্ন
আপডেট : মে ৩০, ২০২০
১২:১৪ অপরাহ্ন
আজ ৩০ মে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৮১ সালের এই দিনে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সেনাবাহিনীর কিছু বিপথগামী সদস্যের হাতে তিনি নিহত হন।
জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ও জেড ফোর্সের অধিনায়ক ছিলেন। বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রতিষ্ঠাতাও তিনি। প্রতিবছর দিনটি জিয়াউর রহমানের শাহাদতবার্ষিকী হিসেবে পালন করে বিএনপি।
জিয়াউর রহমানের জন্ম ১৯৩৬ সালের ১৯শে জানুয়ারি বগুড়ার গাবতলী উপজেলার বাগবাড়ি গ্রামে। শৈশবে তাঁর ডাক নাম ছিল কমল। তার পিতার নাম ছিল মনসুর রহমান এবং মাতার নাম ছিল জাহানারা খাতুন। পাঁচ ভাইদের মধ্যে জিয়াউর রহমান ছিলেন দ্বিতীয়। তার পিতা কলকাতা শহরে এক সরকারি দপ্তরে রসায়নবিদ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাঁর শৈশবের কিছুদিন কাটে বগুড়া ও কলকাতায়। ভারত বিভাগের পর রসায়নবিদ পিতার বদলির সুবাদে তিনি করাচি যান।
করাচির একাডেমি স্কুল থেকে ১৯৫২ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেন। ১৯৫৩ সালে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে যোগ দেন কাকুল মিলিটারি একাডেমিতে। ১৯৫৫ সালে তিনি সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট পদ লাভ করেন।
১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার হিসেবে জিয়াউর রহমান ভূমিকা রাখেন। ‘জেড ফোর্স’র অধিনায়ক হিসেবে রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেন তিনি। বিএনপির দাবি ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে বীরউত্তম উপাধিতে ভূষিত করা হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেনাবাহিনীর বিপথগামী কিছু সদস্যের হাতে নির্মমভাবে নিহত হওয়ার পর জিয়াউর রহমান সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন। একই বছর ৭ নভেম্বর তিনি প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে রাষ্ট্রক্ষমতায় বসেন।
১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর জিয়াউর রহমানের হাত ধরে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
করোনা মহামারির প্রেক্ষাপটে দলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ভার্চুয়াল আলোচনা সভাসহ ১২ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
গত বুধবার (২৭ মে) দুপুরে উত্তরায় নিজের বাসা থেকে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
কর্মসূচিগুলো হলো- ৩০ মে সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সব মহানগর ও জেলা কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অর্ধনমিত এবং কালো পতাকা উত্তোলন, বেলা ১১টায় ঢাকায় শেরে বাংলানগরে জিয়াউর রহমানের কবরে শুধু জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে পুষ্পমাল্য অর্পণে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং বিকেল সাড়ে ৩টায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দলের প্রতিষ্ঠাতার স্মরণে ভার্চুয়াল আলোচনা সভা এবং ১ জুন থেকে ১০ জুন পর্যন্ত জিয়াউর রহমানের কর্মকাণ্ডের ওপরে বিষয়ভিত্তিক ভার্চুয়াল আলোচনা সভা।
দলের ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় দেশের কয়েকজন বরণ্য বুদ্ধিজীবী ও স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বক্তব্য রাখবেন বলেও জানান মহাসচিব।
তিনি জানান, বিষয়ভিত্তিক আলোচনা সভার বিষয়গুলো হলো-, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধ ও শহীদ জিয় ‘, ‘গণতন্ত্র, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও বিএনপি’, ‘শহীদ জিয়া ও উৎপাদন-উন্নয়নের রাজনীতি’, ‘স্বনির্ভর বাংলাদেশ ও অর্থনৈতিক সংস্কার’, ‘শহীদ জিয়ার কৃষি বিপ্লব’, ‘নারী ক্ষমতায় ও শিশু কল্যাণ’, ‘কর্মসংস্থান ও শ্রমিক কল্যাণ’, ‘শিক্ষা ও গণশিক্ষা’, ‘পলী বিদ্যুত ও খনিজ সম্পদ উন্নয়ন’, ‘স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ’, ‘শহীদ জিয়ার বিদেশনীতি’ এবং ‘শহীদ জিয়ার যুব উন্নয়ন’।
প্রতিবছর জিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর মহানগরের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে দুস্থদের মধ্যে খাদ্য বিতরণ করা হলেও এবার প্রস্তুত করা খাদ্যের পরিবর্তনে খাদ্যসামগ্রী, বস্ত্র বিতরণ ও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘এসব সামগ্রী বিতরণকালে কোনো মতেই কোনো সমাবেশ করা যাবে না এটা আমরা জোর দিয়ে বলছি। কারণ এখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে যেটা বলা হয়েছে এটা মেনে চলাটা আমাদের একটা দায়িত্ব বলে আমরা মনে করি।’
বিএ-০৩