প্রস্তুত ৭ হাজার আশ্রয়কেন্দ্র, সরানো হবে উপকূলের মানুষকে

সিলেট মিরর ডেস্ক


মে ১৯, ২০২০
১২:০৮ পূর্বাহ্ন


আপডেট : মে ১৯, ২০২০
১২:১১ পূর্বাহ্ন



প্রস্তুত ৭ হাজার আশ্রয়কেন্দ্র, সরানো হবে উপকূলের মানুষকে

উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় 'আম্ফান'। আগামীকাল মঙ্গলবার (১৯ মে) খুলনা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত উপকূল এলাকায় আঘাত হাততে পারে এটি। এ আশঙ্কায় সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় উপকূলীয় ১৯টি জেলায় সাত হাজার আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

আগামীকাল মঙ্গলবার (১৯ মে) বিকেল থেকে উপকূলের নিচু ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া শুরু করবে সরকার। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব শাহ কামাল আজ সোমবার দুপুরে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়টি মঙ্গলবার শেষরাত থেকে বুধবার সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে।“পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আমরা মঙ্গলবার বিকাল থেকে লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া শুরু করব।”

আজ সোমবার (১৮ মে) দুপুরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এর আগে ঘূর্ণিঝড় ফনি-তে ১৮ লাখ এবং বুলবুল'র সময় ২০ লাখ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছিল। এবার আম্ফান মোকাবেলায় ৩০ লাখ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’

প্রতিমন্ত্রী জানান, উপকূলীয় এলাকায় কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবকরা মানুষকে সতর্কতামূলক মাইকিং শুরু করেছেন। আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার ক্ষেত্রে গর্ভবতী নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগের চেয়ে তিনগুণ বেশি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট ডিসি ও ইউএনও-দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে স্থানীয় স্কুল-মাদরাসাকেও আশ্রয়কেন্দ্রের আওতায় আনা হবে।

সূত্র মতে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সোমবারই আশ্রয়কেন্দ্রের জন্য শুকনো খাবার, শিশুখাদ্যসহ পর্যাপ্ত ত্রাণ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগ থেকে বলা হয়েছে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে মানুষের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ও খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। 

আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে জানানো হয়েছে, আজ সোমবার বেলা ১২টায় ‘আম্ফান’ অবস্থান করছিল পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর এলাকায়। সে সময় এ ঘূর্ণিঝড় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১১১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে; কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে; মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১০২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১০১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল।

ওই সময় ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৫ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২১০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছিল। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

ভারতের আবহাওয়া অফিস বলছে, আম্ফান আরও শক্তিশালী হয়ে সুপার সাইক্লোনে পরিণত হতে পারে, তখন এর বাতাসের গতি ঘণ্টায় ২৬৫ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। তবে উপকূলে পৌঁছনোর আগে সামান্য কমে আসতে পারে এর শক্তি। আগামী বুধবার বিকেল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে আম্ফান পশ্চিমবঙ্গের দীঘা এবং বাংলাদেশের হাতিয়ার মাঝামাঝি এলাকা দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ।

তবে বাংলাদেশের আবহাওয়াবিদদের ধারণা, মঙ্গলবার শেষরাত থেকে বুধবার সন্ধ্যার মধ্যে খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান।

এনপি-১২