নিজস্ব প্রতিবেদক
মে ০১, ২০২০
১০:৩৬ পূর্বাহ্ন
আপডেট : মে ০১, ২০২০
১২:৩৫ অপরাহ্ন
করোনাভাইরাসের কারণে সবকিছু বদলে গেছে। প্রাত্যহিক জীবন থেকে শুরু করে সার্বিক জীবন-ব্যবস্থায় ঘটেছে নানা রদবদল। শ্রমজীবী মানুষ এক মাসেরও বেশি সময় ধরে কর্মহীন হয়ে ঘরবন্দী জীবনযাপন করছেন। এরই মধ্যে আজ শুক্রবার এসেছে মহান মে দিবস। সারা বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দিবসটি পালন করা হয়। অথচ অন্যান্য বছরের ধারাবাহিকতায় এবার আর শ্রমিক ও পেশাজীবীসহ বিভিন্ন সংগঠনের তৎপরতা নেই। কোথাও দিবসটি পালনে নেই সাড়ম্বর কোনো আয়োজন। বরং ঘরবন্দী শ্রমিকদের ভাবনার একটিই বিষয়, কবে কাটবে করোনাকাল? কবে দূর হবে জীবনযাপনের এই অনিশ্চয়তা?
১৮৮৬ সালের পয়লা মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকেরা আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে আন্দোলনে নামেন। সেদিন অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করতে গিয়ে কয়েকজন শ্রমিককে জীবন দিতে হয়। এর পর থেকে দিনটি ‘মে দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে। অন্যান্য বছরের মতো এবারও মহান মে দিবস উপলক্ষে সরকারি ছুটি ছিল। যদিও দিনটি শুক্রবার হওয়ার কারণে সাপ্তাহিক ছুটির দিন হিসেবে ১ মে এমনিতেই লিপিবদ্ধ ছিল। এবার দিবসটি উপলক্ষে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের স্বার্থেই সেই অর্থে কোনো সংগঠনকে কর্মসূচি ঘোষণা করতে দেখা যায়নি। তবে দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে সংবাদপত্রে বিশেষ লেখা প্রকাশ ও টেলিভিশনে অনুষ্ঠান প্রচারিত হবে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে এ বছরের মে দিবস একেবারেই ব্যতিক্রম। করোনা ঠেকাতে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও জীবনাচরণে ব্যাপক পরিবর্তন আসার কারণেই দিবসটি উপলক্ষে মূলত সেভাবে কোনো কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়নি। জাতীয় বার্তা সংস্থা ‘বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)’ গতকাল বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী প্রদান করেন। তবে বিশ্বব্যাপী করোনা পরিস্থিতির কারণে এ বছর মহান মে দিবস উপলক্ষে সরকারি বা বেসরকারিভাবে তেমন কোনো কর্মসূচি রাখা হয়নি।
মহান মে দিবসের কোনো কর্মসূচি না থাকলেও শ্রমিক নেতারা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকারি নির্দেশনায় সবাই এখন ঘরবন্দী। রেস্তোরাঁ, পরিবহন, পোশাক ও শিল্প কারখানা থেকে শুরু করে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় অনেক শ্রমজীবী মানুষ এখন আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি পড়েছেন। তবে এ অবস্থায় মালিকদের পক্ষ হতে শ্রমিকদের যেন বেতনসহ বিশেষ ভাতা প্রদান করা হয়, সেদিকে সরকারি নির্দেশনা ও তা বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখা প্রয়োজন। অন্যদিকে দিনমজুর ও নি¤œআয়ের মানুষদের ত্রাণ সরবরাহের পাশাপাশি নগদ টাকা প্রদানের দাবিও জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারা।
সারা দেশের শ্রমজীবী মানুষের মতোই সিলেটেও শ্রমিক, দিনমজুর ও নি¤œআয়ের মানুষেরা এখন বেশি সমস্যায় রয়েছেন। এ শ্রেণির মানুষের মধ্যে সহযেগিতার হাত প্রসারিত করার জন্য সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আহŸান জানিয়েছেন সিলেটের শ্রমিক নেতারা। এদিকে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সভাপতি হাবীবউল্লাহ বাচ্চু ও সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম গতকাল বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনের সবাইকে ঘরে বসে আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় কেন্দ্র থেকে প্রেরিত একটি ঘোষণাপত্র পাঠের অনুরোধ জানিয়েছেন। এই ঘোষণাপত্রে মহান মে দিবসের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও চেতনার বিষয়টি আলোচিত হয়েছে।
এএফ-০২