দুদকে শুধু দীর্ঘসূত্রিতা নয়, দুর্নীতিও আছে: দুদক চেয়ারম্যান

সিলেট মিরর ডেস্ক


নভেম্বর ২৩, ২০২৫
০৬:৩৬ অপরাহ্ন


আপডেট : নভেম্বর ২৩, ২০২৫
০৬:৩৬ অপরাহ্ন



দুদকে শুধু দীর্ঘসূত্রিতা নয়, দুর্নীতিও আছে: দুদক চেয়ারম্যান


সিলেটে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ১৯১তম গণশুনানি হয়েছে।

আজ রবিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল ১০টা থেকে সিলেট নগরীর রিকাবিবাজারের কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গণশুনানিতে সরকারি সেবা পেতে হয়রানি বা সেবাবঞ্চনার শিকার সাধারণ মানুষের ৭৩টি অভিযোগের বিষয়ে আলোচনা হয়। এসময় অভিযোগকারি ও অভিযুক্ত সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা শুনানিতে অংশ নেন।

‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে তারুণ্যের একতা, গড়বে আগামীর শুদ্ধতা’ শীর্ষক এ গণশুনানির আয়োজন করেছে দুদকের সিলেট সমন্বিত জেলা কার্যালয়। সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলমের সঞ্চালনায় গণশুনানিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন।

দুপুরে সিলেটে দুদকের গণশুনানি শেষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দুদকে শুধু দীর্ঘসূত্রিতা নয়, দুদকেও দুর্নীতিও আছে। যারা সেবাদাতা তার মূলত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী। সরকারি যত প্রতিষ্ঠান আছে প্রত্যেকের বিরুদ্ধে সেবাগ্রহীতাদের কিছু অভিযোগ আছে। অভিযোগ দেওয়া অব্যাহত থাকবে, আমরা চেষ্টা করে যাবো ক্রমাগত ভাবে সে বিষয়গুলো সমাধান করার। আমরা নিয়মিত ভাবে ‘‘রেইড’’ করে যাচ্ছি। আমাদের এই হস্তক্ষেপে কিছুটাতো উপকার হচ্ছে। ’

সিলেটের সাদা পাথর লুটের ঘটনায় দুদকের প্রাথমিক প্রতিবেদনে অনেক রাজনীতিবিদের নাম আসা ও তাদের অনেকেই নির্বাচনে প্রার্থিতার জন্য কাজ করছেন। এই প্রেক্ষাপটে দুদকের চূড়ান্ত প্রতিবেদন কবে নাগাদ প্রকাশিত হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক প্রতিবেদনের পরে অনুসন্ধান শুরু করি। এটাতো সত্য যে সাদাপাথর সেখানে ছিল না। পরবর্তীতে সময় ফিরে এসেছে। এটা সত্য। কাজেই এখানে যারা জড়িত তাদের নাম আপনারা আমাদের চেয়ে আরও বেশী করে জানেন। আমার প্রশ্ন হচ্ছে আপনারা কি তাদের পার্লামেন্টে চান, নাকি চান না?’

এর আগে রবিবার সকালে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার আলমপুরে দুদকের বিভাগীয় কার্যালয়ের ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন দুদকের চেয়ারম্যান। ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনি হলফনামায় প্রার্থীদের দেশের সম্পদের পাশাপাশি বিদেশের সম্পদের হিসাব বিবরণী দিতে হবে। আমরা সম্পদের বিবরণী চাচ্ছি, সেখানে বিদেশি সম্পদেও হিসাব না দিলে তা অন্যায় হবে। পাশাপাশি অনুপার্যিত সম্পদ যাদের থাকবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

দুদকের নানা সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, দুদকে আমাদের সহকর্মীরা অনেক দুর্নীতির তথ্য চাপা দেয়, গণমাধ্যম তা করে না। দুদক বিচারকারী না। দুদকের দায়িত্ব মামলার তথ্য-উপাত্ত আদালতে উপস্থাপন করা। এর বিচার করবেন আদালত।  ২০০৮ সালে শেখ হাসিনার কৃষি সম্পত্তি ছিলো ৫ দশমিক ২ একর, তবে আমরা অনুসন্ধান করে পাই ২৯ একর। শুরুতে সেই নমিনেশন বাতিল হওয়ার কথা কিন্তু তা বাতিল হয় নাই। দুদক সেটি তদন্ত করে বের করলেও শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়ন করতে পারেনি।

গণশুনানিতে বিশেষ অতিথি হিসেবে কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী এবং দুদকের সচিব মোহাম্মদ খালেদ রহীম। গণশুনানিতে আরও উপস্থিত ছিলেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী, সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি মো. মুশফেকুর রহমান, সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মু. মাসুদ রানা, সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।


এএফ/০২