সিসিকের গেইট ও সিএনজি ভাঙচুর মামলায় গ্রেপ্তার অ্যাডভোকেট সুমন

সিলেট মিরর ডেস্ক


নভেম্বর ০১, ২০২৫
০১:৩৩ অপরাহ্ন


আপডেট : নভেম্বর ০১, ২০২৫
০১:৩৫ অপরাহ্ন



সিসিকের গেইট ও সিএনজি ভাঙচুর মামলায় গ্রেপ্তার অ্যাডভোকেট সুমন


মধ্যরাতে আটকের পর বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সিলেটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন সুমনকে পুরনো দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আজ শনিবার (১ নভেম্বর) সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নগরে ব্যাটারিচালিত রিকশা চালকদের আন্দোলনের নামে উসকানিমূলক কর্মকান্ড এবং সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) গেট ও সিএনজি অটোরিকশা ভাঙচুরের ঘটনায় সুমনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। একারণেই তাকে আটক করা হয়েছে। দ্রুত বিচার আইনের এ দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে।’

এর আগে শুক্রবার মধ্যরাতে নগরের আখালিয়া কালীবাড়ি এলাকার বাসা থেকে সুমনকে গ্রেপ্তার করে সিলেট মহানগরের জালালাবাদ থানার পুলিশ।

আনোয়ার হোসেন সুমন সিলেট নগরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ ১১ দফা দাবিতে গত মঙ্গলবার আয়োজিত আন্দোলন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন। সিপিবি সিলেট জেলার বর্তমান কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর এই সদস্য পেশায় আইনজীবী।

এর আগে ব্যাটারি রিকশা চালকদের আন্দোলনে সম্পৃক্ততার কারণে গত ২৭ সেপ্টেম্বর সিলেট নগরের আম্বরখানা এলাকার বাসদ কার্যালয় থেকে আলোচনার কথা বলে বাসদ সিলেট জেলার আহ্বায়ক আবু জাফর ও সদস্যসচিব প্রণব জ্যোতি পালকে আটক করে পুলিশ। পরে তাদেরও সিসিকের গেট ভাঙচুর ও সিএনজি অটোরিকশা ভাঙচুরের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তবে তারা দুজন বর্তমানে জামিনে আছেন।

সুমনের রাজনৈতিক সহকর্মীদের অভিযোগ, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালকদের আন্দোলনে উপস্থিত থাকার কারণেই সিলেটের প্রগতিশীল রাজনীতির পরিচিত এই মুখকে পুলিশ বিনা অভিযোগে তুলে নিয়ে গেছে। রাত ১২টা থেকে সাড়ে ১২টার মধ্যে জালালাবাদ থানার পুলিশ তাঁকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায়।

এর আগে গত মঙ্গলবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নগরের চৌহাট্টা-জিন্দাবাজার সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালকেরা। এতে আনোয়ার হোসেনসহ কয়েকজন রাজনীতিক অংশ নেন। ওই দিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চৌহাট্টা এলাকার পার্শ্ববর্তী সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে সিলেট জেলা রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের উদ্যোগে একই দাবিতে শ্রমিক সমাবেশ হয়।

বিক্ষোভের এক পর্যায়ে আনোয়ার হোসেনসহ আন্দোলনকারীদের একটি প্রতিনিধিদল মহানগরের পুলিশ কমিশনার আবদুল কুদ্দুছ চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এরপর ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ ১১ দফা দাবি জনিয়ে রবিবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে আন্দোলন স্থগিত করেন শ্রমিকেরা। ওই আলটিমেটাম শেষ হওয়ার এক দিন আগে আনোয়ার হোসেনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।

পুলিশের অভিযোগ, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালকদের আন্দোলনে তৃতীয় একটি পক্ষ ইন্ধন দিচ্ছে। তবে কারা এই তৃতীয় পক্ষ, এটা পুলিশ জানায়নি।

শনিবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করে মহানগর পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরী অভিযোগ করেছেন, ব্যাটারি রিকশা শ্রমিকদের আন্দোলনে তৃতীয় পক্ষ ইন্ধন দিচ্ছে।

তিনি বলেন, পাল্টাপাল্টি কর্মসূচীতে সংঘাতের আশঙ্কায় ব্যাটারি রিকশা শ্রমিকদের রোববারের কর্মসূচী পালনের অনুমতি দেয়া হয়নি।

উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিক থেকে সিলেট মহানগরীতে ব্যাটারি চালিত রিকশা চলাচল বন্ধে অভিযান শুরু করে পুলিশ। সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার আবদুল কুদ্দুছ চৌধুরীর উদ্যোগে পরিচালিত এই অভিযানে বহু রিকশা জব্দ ও একাধিক চার্জিং পয়েন্টের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এরপর থেকে নগরে ব্যাটারি রিকশা চলতে দেওয়া হচ্ছে না।


এএফ/০১