ওসমানীনগর(সিলেট) প্রতিনিধি
নভেম্বর ১৬, ২০২২
০২:১৫ পূর্বাহ্ন
আপডেট : নভেম্বর ১৬, ২০২২
০৮:২৭ পূর্বাহ্ন
সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলায় প্রচারপত্র বিতরণকালে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও বিএনপির নিখোঁজ নেতা ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনার গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
আজ মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজারে তিনি বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের প্রচারে গেলে এ ঘটনা ঘটে।
এসময় সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ৮ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এর মধ্যে ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৬ জন এবং বিএনপির ২ জন রয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশ বিএনপির অঙ্গসহযোগী সংগঠনের দুই কর্মীকে আটক করেছে।
তবে এ ঘটনায় পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, বিএনপির সিলেট বিভাগীয় গণসমাবেশ সফল করতে আজ বিকেলে নেতাকর্মীদের নিয়ে ওসমানীনগরে প্রচারপত্র বিতরণ করতে আসেন ইলিয়াস পত্নী তাহসিনা রুশদীর লুনা। এসময় শেরপুর থেকে দয়ামীর পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীদের বাধার মুখে পড়েন তিনি। দক্ষিণ গোয়ালাবাজার এলাকায় পুলিশ অবস্থান নিয়ে ট্রাক দাঁড় করিয়ে মহাসড়কে ব্যারিকেড দিলে বিএনপি নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে লুনার গাড়ি ব্যারিকেড পার হলে বাকি গাড়ি আটকে দেয় পুলিশ। তবে তার গাড়ি উত্তর গোয়ালাবাজার প্লাজার সামনে এলেও হামলার শিকার হয়। পরবর্তীতে গোয়ালাবাজারে কোন কর্মসূচী না করে তিনি গাড়ি নিয়ে সরাসরি দয়ামীর বাজারে যান। সেখানে গাড়ি থেকে নেমে তিনি ঝটিকা প্রচারপত্র বিলি করতে শুরু করলে আবারও পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় তাঁর গাড়ির (ঢাকা মেট্রো গ ২১/৫৮২২) সামনের কাঁচ ভাঙ্গা ও পেছনের বনেটে আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়।
সেখানে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেত্রী লুনা সাংবাদিক সঙ্গে কথা বলেন। গোয়ালাবাজারে তাঁর গাড়িতে হামলার জন্য তিনি সরাসরি ছাত্রলীগ ও যুবলীগকে দায়ী করে বলেন, ‘১৯ নভেম্বর সিলেটে বিএনপির মহাসমাবেশকে ঘিরে সরকারের মধ্যে ভীতির তৈরি হয়েছে। আর তাই বিনা উস্কানিতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ প্রচারপত্র বিতরণ কর্মসূচীকে বানচাল করতে পরিকল্পিত হামলা চালিয়েছে। সরকার দলীয়দের হামলা প্রতিহত করতে গিয়ে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ মিছবাহ ও উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আব্দুর রুপ আব্দুল আহত হয়েছেন।’
পুলিশের বাধার মুখে তড়িঘড়ি করে লুনার গাড়ি দয়ামীর এলাকা ত্যাগ করলে থানা পুলিশ বিএনপির নেতাকর্মীদের ধাওয়া করে ২ জনকে আটক করে। আটককৃতরা হচ্ছেন, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ফয়সল আহমদ মিলন, উমরপুর ইউনিয়ন বিএনপির নেতা নুরুল ইসলাম।
এদিকে, লুনার গাড়িতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের হামলার বিষয়টি উড়িয়ে দিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাবেদ আহমদ আম্বিয়া বলেন, ‘যুবলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে গোয়ালাবাজার প্লাজার সামনে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ কেককাটার জন্য সমবেত হয়েছিলেন। এ সময় বিএনপি নেতৃবৃন্দ প্লাজার সামনে অবস্থান নিয়ে প্রচারপত্র বিলি করতে চাইলে যুবলীগ নেতৃবৃন্দ তাদের অন্যত্র যাবার জন্য বললে তুমুল বাকবিতণ্ডা হয়। পরবর্তীতে উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে যুবলীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করা হয়। এই হামলায় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ৬ জন আহত হন।
ওসমানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ মাঈন উদ্দিন বলেন, ‘বিএনপি তাদের প্রচারপত্র বিলি কর্মসূচিকে ঘিরে ওসমানীনগরে অরাজকতা তৈরি করতে চেয়েছিল। তাই পুলিশ এলাকার শান্তি রক্ষার্থে কাজ করেছে।‘ ২ জনকে আটকের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যুবলীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীদের উপর হামলার অভিযোগে এরা আটক হয়েছেন। পরবর্তীতে মামলা হলে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে।’
এএফ/০২