ধর্মঘটের প্রভাবে বাজারে কমেছে সবজির সরবরাহ, বেড়েছে দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক


নভেম্বর ০১, ২০২২
০৫:৪৯ অপরাহ্ন


আপডেট : নভেম্বর ০১, ২০২২
০৮:১৩ অপরাহ্ন



ধর্মঘটের প্রভাবে বাজারে কমেছে সবজির সরবরাহ, বেড়েছে দাম

ছবি-সংগৃহীত

বন্ধ থাকা পাথর কোয়ারিগুলো খুলে দেওয়ার দাবিতে পিকআপ কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা পণ্য পরিবহন ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন চলছে আজ। গতকাল সোমবার ভোর থেকে শুরু হয় ৪৮ ঘন্টার এই ধর্মঘট।

প্রথমদিনের মত আজও নগরের প্রবেশদ্বারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় লাঠিসোঁটা হাতে অবস্থান নিতে দেখা গেছে পরিবহন শ্রমিকদের। এতে করে পণ্যবাহী পরিবহনগুলো শহরে প্রবেশ করতে পারেনি। বিভিন্ন স্থানে  ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ডভ্যানসহ পণ্যবাহী যানবাহন আটকা পড়েছে।

এদিকে, বাজারে নিত্যপণ্যের সরবরাহ কিছুটা কমে যাওয়ায় বেড়েছে দাম। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরের সোবহানীঘাট, লালবাজারসহ বড় পাইকারি বাজারগুলোতে প্রতিদিনের মত পণ্যবাহী ট্রাক আসতে পারেনি। এতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বাজারে। গভীর রাতে হাতেগোনা কিছু মালবাহী ট্রাক আড়তে পৌঁছালেও থেকে গেছে সংকট। চাহিদার তুলনায় যোগান কম থাকায় দুদিনের ব্যবধানে দামও বেড়েছে।

সোবহানীঘাট সবজি বাজারের ব্যবসায়ী জামাল আহমদ বলেন, অন্যদিনের মত মালামাল আসতে না পারায় ক্রেতা বেশি, পণ্য তুলনামূলক কম। এজন্য প্রতি কেজিতে এক-দুই টাকা করে দাম বেড়েছে। অন্যদিনের তুলনায় আড়ত থেকে আজ সবজি কিছুটা কম কিনেছি।

টিলাগড় এলাকায় ঠেলাগাড়িতে করে সবজি নিয়ে আসা রুকন উদ্দিন বলেন, আড়তেই বাড়তি দাম দিয়ে সবজি কিনতে হয়েছে। আগের দিনের অবশিষ্ট পণ্য এবং আজকের এগুলো নিয়ে বের হয়েছি। কেজিপ্রতি দাম কিছুটা বাড়িয়েই বিক্রি করতে হচ্ছে।

পাইকারী বাজারের কয়েকজন বিক্রেতা অভিযোগ করেন, আটকে থাকা পণ্যবাহী ট্রাকগুলো প্রবেশের জন্য অবরোধকারীরা অর্থ দাবি করছেন। অর্থের বিনিময়ে কিছু যানবাহন প্রবেশ করতে দেয়া হয়েছে বলেও জানান তারা।

শাহপরান বাজার এলাকায় কথা হয় সালমান আহমদ নামের এক ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘দুদিন পর পর ধর্মঘট ডাকা হয়, আর ভুক্তভোগি হতে হয় আমাদের।  সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে এধরনের নৈরাজ্য করা অনুচিত।’

‘আমরা দুই টাকা বাড়তি দিয়ে পণ্য কিনতে পারলেও নিম্নবিত্ত মানুষদেরকে তো ধর্মঘটের দিনে কেউ দুই টাকা অতিরিক্ত দেবে না। তারা কিভাবে খাবে?’-যোগ করেন তিনি।

এর আগে, বিষয়টি সুরাহার জন্য রোববার বিকেলে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে পরিবহন শ্রমিক নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে সে বৈঠকে কোনো সমাধান হয়নি।

প‌ণ্য পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘট আহ্বানের প্রেক্ষিতে সোমবার বিকেলে সংগঠনটির নেতাদের সাথে বৈঠক করেন জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান। বৈঠকে ধর্মঘট থেকে সরে আসার জন্য অনুরোধ জানান তিনি। তবে এই বৈঠক শেষে ধর্মঘট থেকে সরে না আসার ঘোষণা দেন ট্রাক পিকআপ কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতারা।

এ প্রসঙ্গে সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবুর রহমান বলেন, পাথর উত্তোলনের দাবির প্রেক্ষিতে খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৩ নভেম্বর এই কমিটির সদস্যরা সিলেটের কোয়ারিগুলো পরিদর্শনে আসবেন। তারা সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখবেন পাথর উত্তোলনের যৌক্তিকতা আছে কি না। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সরকার পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।

আরএম-০২