৮৩ কিলোমিটারে থামল ক্ষিতীন্দ্রের বিশ্ব রেকর্ডের স্বপ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক


আগস্ট ৩১, ২০২২
০৩:২২ পূর্বাহ্ন


আপডেট : আগস্ট ৩১, ২০২২
০৩:২২ পূর্বাহ্ন



৮৩ কিলোমিটারে থামল ক্ষিতীন্দ্রের বিশ্ব রেকর্ডের স্বপ্ন

বিশ্বরেকর্ড গড়তে ৭০ বছরে সাঁতারে নামা একুশে পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য ৮৩ কিলোমিটার যাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ফলে তাঁকে শেষ করতে হয়েছে সাঁতার। সুনামগঞ্জের হরিণাপাটি পর্যন্ত যাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে নৌকায় তুলে নেওয়া হয়। তিনি এখন ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

বয়স্ক সাঁতারু হিসেবে বিশ্বরেকর্ড গড়তে গতকাল সোমবার সিলেটের কিন ব্রিজ সংলগ্ন সুরমা নদীর চাঁদনীঘাট থেকে সকাল ছয়টার দিকে তিনি সাঁতার শুরু করেন। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার হরিণাপাটি এলাকায় পৌঁছালে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।

ঠান্ডায় ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্যর চেহারা ফ্যাকাশে হয়ে যায়। তিনি তখন খুব ধীর গতিতে সাতরাচ্ছিলেন । ফলে আয়োজক, চিকিৎসক ও তিনি নিজে সাঁতার শেষ করার ঘোষণা দেন।

সাঁতারের আয়োজক বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সিলেট জেলা ইউনিট কমান্ডের সাবেক সভাপতি সুব্রত চক্রবর্তী বিষয়টি সিলেট মিরর-কে নিশ্চিত করেছেন।

বিশ্বনাথ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জুনিয়র কনসালট্যান্ট ও ক্ষিতীন্দ্রের সঙ্গে থাকা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রতিনিধি তপজিত ভট্টাচার্য বলেন, ঠান্ডাজনিত কারণে শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্ষিতীন্দ্রের। পরে আয়োজক সংগঠন ও তিনি সাঁতার শেষ করার ঘোষণা দিলে তাঁকে নৌকায় তুলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ সময় তাঁকে অক্সিজেন দেওয়া হয়। অক্সিজেন দেওয়ার পর তিনি স্বাভাবিক হয়েছেন। আয়োজকদের সঙ্গে পরামর্শ করে তাঁকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।

আজ সকাল আটটার দিকে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা নদীর অংশে পৌঁছালে বৃষ্টি ও ঝড়ের মুখে পড়েন ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য। এ সময় তিনি নদীতে ভেসে ছিলেন। তাঁর সাঁতার কাটতে সমস্যা হচ্ছিল। বৃষ্টি থামলে তিনি আবার সাঁতার শুরু করেন। পরে শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে তিনি সাঁতার শেষ করার ঘোষণা দেন।

ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্যর সাঁতারের এ উদ্যোগে সহায়তা করছে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সিলেট জেলা ইউনিট। এই ইউনিটের সাবেক সভাপতি সুব্রত চক্রবর্তী বলেন, ২৮১ কিলোমিটারের মধ্যে সুরমা নদীর ১৪৪ দশমিক ৩৯ কিলোমিটার, ধনু নদের ৮৪ দশমিক ৩১ কিলোমিটার, ঘোড়াউত্রা নদীর ৩৪ দশমিক ২৭ কিলোমিটার ও মেঘনা নদীর ১৮ দশমিক ৩৩ কিলোমিটার সাঁতরে পাড়ি দিতে চেয়েছিলেন ক্ষিতীন্দ্র।

ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্রের বাড়ি নেত্রকোনার মদন উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর গ্রামে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক পদে থাকা অবস্থায় অবসরে যান তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যায় এমএসসি পাস করা ক্ষিতীন্দ্র সাঁতার কেটে এখন পর্যন্ত জাতীয় পর্যায়ে চারটি পুরস্কার পেয়েছেন।

এএফ/০২