কোম্পানীগঞ্জে প্রভাষককে মারপিটের অভিযোগ অধ্যাপকের বিরুদ্ধে

কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি


আগস্ট ২৬, ২০২২
০২:৪০ পূর্বাহ্ন


আপডেট : আগস্ট ২৬, ২০২২
০২:৪০ পূর্বাহ্ন



কোম্পানীগঞ্জে প্রভাষককে মারপিটের অভিযোগ অধ্যাপকের বিরুদ্ধে
অধ্যক্ষের অপসারণের দাবী শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় প্রভাষককে মারপিটের অভিযোগ মিলেছে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। গত বুধবার এম. সাইফুর রহমান কলেজে শিক্ষকদের সভায় এ ঘটনা ঘটেছে। শিক্ষককে মারপিটের প্রতিবাদে মানববন্ধন, মিছিল ও প্রশাসনের কাছে স্মারক লিপি দিয়েছেন কলেজের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকবৃন্দ। 

আজ বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১টায় কলেজের ক্লাস বর্জন করে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকবৃন্দ কলেজ ফটক থেকে মিছিল নিয়ে উপজেলা পরিষদ মাঠে গিয়ে মানববন্ধন করেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বরাবরে শিক্ষকের উপর ন্যাক্কারজনক ঘটনায় অধ্যক্ষের অপসারণ ও বিভিন্ন দুর্নীতির বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা ব্যক্তব্যে বলেন, ‘অধ্যক্ষের হাতে শিক্ষকের লাঞ্ছনা ও মারপিটের ঘটনা লজ্জাজনক। এ ঘটনা আমরা মেনে নেওয়া যায় না। মানুষ গড়ার কারিগর অধ্যক্ষ যখন অমানবিক কাজ করে তখন আমরা অপারগ হয়েই রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছি ‘ শিক্ষক ইকবার হোসেনের উপর নির্যাতনকারী অধ্যক্ষের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়ে তারা বলেন, ‘অধ্যক্ষে কলেজ থেকে অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষা-কার্যক্রম বন্ধ রেখে আন্দোলন চলবে।‘ শিক্ষক নির্যাতনকারী অধ্যক্ষে শাস্তি নিশ্চিতে উপজেলার সকল মানুষের সহযোগিতা কামনা করেন আন্দোলনকারীরা।

শিক্ষকরা অভিযোগ করে বলেন, ‘এর আগেও বিভিন্ন সময় অধ্যক্ষের দুর্নীতির বিষয়ের কথা বলতে গিয়ে একজন শিক্ষকের বেতন বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি।’

এম. সাইফুর রহমান ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যক্ষ মোর্শেদ আলম বলেন, ‘গত বুধবার (২৪ আগস্ট) কলেজ চলাকালে শিক্ষকদের সভায় কলেজের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনায় অধ্যক্ষের কিছু কথায় সম্মতি না দেওয়ায় সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সিনিয়র প্রভাষক ইকবাল হোসেনকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ ও মারপিট করে আহত করেন অধ্যক্ষ।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই কলেজ প্রতিষ্ঠাকাল থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত অধ্যক্ষ বিভিন্ন ভাবে দুর্নীতি করে আসছে আমরা এসব ঘটনায় প্রতিবাদ করতে গিয়ে অধ্যক্ষকের রোষানলে পড়তে হয়েছে।

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার এক মাত্র ডিগ্রি কলেজ এম. সাইফুর রহমান ডিগ্রি কলেজ। সিলেট বিভাগে প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কলেজকে সরকারি করা হলেও অধ্যক্ষের অবহেলায় সাইফুর রহমান ডিগ্রি কলেজ সরকারিকরণ হয়নি বলে অভিযোগ করেন শিক্ষকরা। 

মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন, এম. সাইফুর রহমান ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোর্শেদ আলম, বিপেষ রঞ্জন রায়, জৈষ্ঠ প্রভাষক আব্দুর রাশিদ, জয়নাল আবেদীন, শামিমআরা বেগম, আব্দুর রশীদ, জাহাঙ্গীর সেলিম, প্রভাষক শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেন, উজ্জ্বল চৌধুরী, কমলেষ বিশ্বাস, সব্যসাচী তালুকদার, আশরাফ হোসেন ও কলেজের ৩ শতাধিক শিক্ষার্থীর উপস্থিত ছিলেন।

কলেজের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী সপ্তাহ থেকে পাঁচ দিন ক্লাস নেওয়ার নির্দেশনা হিসেবে রুটিন তৈরি করা হয়েছিল। এক শিক্ষক সে রুটিন নিয়ে ছিড়ে ফেলেন। এতে আমি তাঁকে আমার কক্ষ থেকে বেড়িয়ে যেতে বলেছিলাম। তাঁর গায়ে হাত তোলা হয়নি। তিনি বলেন, বিষয়টি বুধবারই সমাধান হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে শিক্ষার্থীদের উস্কে দিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের এতে জড়ানো হয়েছে।