নিজস্ব প্রতিবেদক
আগস্ট ২৪, ২০২২
০২:০৪ পূর্বাহ্ন
আপডেট : আগস্ট ২৪, ২০২২
১১:৫৪ অপরাহ্ন
সিলেটের ওসমানীনগরে যুক্তরাজ্যপ্রবাসী রফিকুল ইসলাম ও তাঁর ছেলে ও মেয়ের মৃত্যুকে ‘দুর্ঘটনা’ হিসেবেই দেখছে পুলিশ। নিহত তিনজনের মরদেহে কোনো বিষক্রিয়ার উপস্থিতি কিংবা বাইরে থেকে আবদ্ধ ঘরে কেউ প্রবেশ করে কোনো বিষক্রিয়া ঘটাবে, এমন আশঙ্কাও নেই বলে দাবি পুলিশের।
আজ মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে এসব তথ্য জানিয়েছেন সিলেটের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন।
সংবাদ সম্মেলনে ফরিদ উদ্দিন বলেন, পুলিশের প্রাথমিক অনুসন্ধান এবং নিহত তিনজনের কক্ষে পাওয়া বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে পর্যবেক্ষণ করে পুলিশ বিষক্রিয়ার কিছু পায়নি। তবে কেমিক্যাল অ্যানালাইসিসের কোনো প্রতিবেদন পুলিশের কাছে আসেনি, সেটি সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক বোর্ড নির্ধারণ করবে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ বিষক্রিয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে নিশ্চিত হয়েছে।
ফরিদ উদ্দিন বলেন, প্রাথমিকভাবে তদন্ত করে জানা গেছে, এটা একটা দুর্ঘটনা। প্রবাসীরা ওই বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। তাঁরা ব্যক্তিগতভাবে জেনারেটর ব্যবহার করতেন। সাধারণত জেনারেটর বাড়ির বাইরে চালানো হয়। তবে ওই প্রবাসী পরিবার জেনারেটরটি তাঁদের ফ্ল্যাটের ভেতরে চালিয়েছিলেন। এতে জেনারেটরের ধোঁয়া কোনোভাবে ওই কক্ষে প্রবেশ করেছিল।
পুলিশের তদন্ত চলাকালে পুলিশ সুপার জেনারেটর চালিয়ে ওই কক্ষে সাত মিনিটের বেশি অবস্থান করতে পারেননি বলে উল্লেখ করেন। পুলিশ সুপার বলেন, ‘জেনারেটর ঘরের মধ্যে থাকার কারণে ধোঁয়ায় টিকে থাকা যাচ্ছিল না। ওই প্রবাসী পরিবারের সঙ্গে সমাজে, বাড়িতে জায়গা–সম্পত্তি কিংবা অর্থনৈতিক লেনদেন নিয়ে কোনো বিরোধ নেই। পরিবারটি নিছক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। এখন আমরা ওসমানী হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ডের চূড়ান্ত প্রতিবেদনের অপেক্ষায় আছি। মেডিকেল বোর্ড কয়েক দিনের মধ্যে যে সিদ্ধান্ত জানাবে, সেটি চূড়ান্ত হবে।’
গত ২৬ জুলাই বেলা ১১টার দিকে সিলেটের ওসমানীনগরের তাজপুর এলাকার একটি বাড়ির দ্বিতীয় তলার কক্ষের দরজা ভেঙে রফিকুল ইসলাম, তাঁর স্ত্রী হোসনারা বেগম (৪৫), ছেলে সাদিকুর রহমান (২৫), মেয়ে সামিরা ইসলাম (২০) ও ছোট ছেলে মাইকুল ইসলামকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর রফিকুল ইসলাম ও মাইকুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। এরপর ৫ আগস্ট রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সামিরা ইসলাম মারা যান।
এদিকে চিকিৎসা শেষে ৩ আগস্ট বাড়ি ফিরেছেন নিহত রফিকুল ইসলামের স্ত্রী হোসনারা বেগম ও ছেলে সাদিকুল ইসলাম। রফিকুল ইসলাম ওসমানীনগর উপজেলার বড় দিরারাই গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তবে তিনি বেশ আগেই যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব লাভ করেছেন। ১২ জুলাই রফিকুল স্ত্রী ও তিন সন্তানকে নিয়ে দেশে এসেছিলেন। পরে ১৮ জুলাই তিনি ওসমানীনগরে চারতলা ভবনের দ্বিতীয় তলার একটি বাসা ভাড়া নেন।
এএফ/০২